বাংলারজমিন

রূপার ‘বিয়ের’ নেশা

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

১১ আগস্ট ২০২০, মঙ্গলবার, ৮:০৫ পূর্বাহ্ন

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মমিনপুর গ্রামের ইদ্রিস মণ্ডলের মেয়ে শাহনাজ পারভীন রূপা ওরফে রিপা (২৩)। একাধিক বিয়ে হলেও নিজেকে কুমারী দাবি করে বিত্তবান পরিবারের যুবকদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেয়াই যার নেশা। এ ছাড়াও তথ্য গোপন করে সরকারি চাকরি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রতারণার শিকার মিজানুর রহমান নামে এক যুবক রূপাকে প্রধান আসামি করে তার মা শিউলি বেগম ও বোন সীমার বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন টাঙ্গাইল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর উপ ফরিদ আহমেদ।
মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার এনায়েতপুর এলাকার মিজানুর রহমান ২০১৩ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য মালেয়শিয়া গমন করেন। সেখানে থাকাবস্থায় ধনবাড়ি উপজেলার মমিনপুর গ্রামের ইদ্রিস মন্ডলের মেয়ে  শাহনাজ পারভীন রূপা ওরফে রিপার সাথে তার ফেসবুকে পরিচয় হয়। একসময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মিজানুর রহমান ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দেশে আসলে তাদের দেখা সাক্ষাৎ হয়। রুপা টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজে পড়াশোনা অবস্থায় ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত টিউশন, কলেজের বেতন ও হোস্টেল খরচ হিসেবে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে বিয়ে ঠিক হলে সরকারি চাকরির জন্য মিজানুরের কাছ থেকে আরও আড়াই লাখ টাকা নেয় রূপা। এরপর শাহনাজ পারভীন রূপা ধনবাড়ী উপজেলার যদুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পায়। এরপর মিজানুর রহমান রুপাকে বিয়ের কথা বললে তিনি বিয়ে করবে না বলে অস্বীকার করেন। পরে মিজানুর রহমান ও তার পরিবার টাকা ফেরত চাইতে রুপার বাড়িতে গেলে মিজানুরের মাকে এলোপাথারী ভাবে মারধর করে তাদের তাড়িয়ে দেয় এবং টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন রুপা। সরজমিনে রুপার এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে মধুপুর উপজেলার আম্বাড়ীয়া গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে রোকনুজ্জামানের সাথে পারিবারিকভাবে রুপার বিয়ে হয়। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় পরকীয়া প্রেমে পালিয়ে গিয়ে রোকনুজ্জামানের বন্ধু একই উপজেলার মোল্লাবাড়ী এলাকার মৃত হাজী শহীদ আলীর ছেলে মনির হোসেনের সাথে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। এরপর আগের দুটি বিয়ের তথ্য গোপন করে তৃতীয় বিয়ে করেন নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামের মৃত জালাল বিশ্বাসের ছেলে বি এম সোহেল রানাকে। তাদের বিয়ের কয়েক মাস না যেতে একই এলাকার আলতাফ শেখের ছেলে মজুরুল শেখের সাথে অনৈতিক অবস্থায় ধরা পড়লে এলাকার মাতাব্বর জলিল মুন্সি, ইউসুফ শেখ, কামরুল শেখ, হাবিব হানদার ও বাদশা হানদার সহ এলাকাবাসী সালিশি বৈঠক করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাহনাজ পারভীন রূপা একাধিক বিয়ের কথা স্বীকার করে জানায়, শামস উদ্দিন ও হেলেনা খাতুন তার মামা মামি। তবে অন্যান্য অভিযোগ নিয়ে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি কোন মন্তব্য না করে ফোন কেটে দেন। টাঙ্গাইল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর উপ পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ জানান, মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা সিদ্দিকা জানান, বিষয়টি মাত্র শুনলাম। যদি এরকম কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status