কলকাতা কথকতা
কলকাতা কথকতা
প্রয়াত রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, একটি যুগের অবসান
জয়ন্ত চক্রবর্তী, কলকাতা
৩০ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:৩২ পূর্বাহ্ন
বুধবার গভীর রাতে, রাত একটা পঞ্চাশ মিনিটে জীবনাবসান হল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সোমেন মিত্র'র। তিনি কয়েক সপ্তাহ কিডনি এবং হার্ট এর সমস্যা নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে ছিলেন। সেখানেই গভীর রাতে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রেখে গেলেন স্ত্রী, প্রাক্তন বিধায়িকা শিখা মিত্র ও যুব কংগ্রেস নেতা পুত্র রোহানকে। পারিবারিক সূত্রে জানানো হয় উনিশশো বিরানব্বই সালেই তাঁর হৃদযন্ত্রে পেস মেকার বসানো হয়েছিল। কিডনি সমস্যায় ভোগার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন তাঁর পেসমেকার বদলে দেয়া হবে। সেই সুযোগ তাঁরা আর পেলেন না। সোমেন মিত্র দীর্ঘদিন শিয়ালদহ কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। আটের দশকে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির পদ নিয়ে তাঁর ও মমতা বন্দোপাধ্যায় এর নির্বাচনী লড়াই এপিক আখ্যা পায়। ঐ নির্বাচনে সোমেন জেতেন। দুহাজার সাত - আট সালে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস গড়েন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দোপাধ্যায় এর আমন্ত্রণে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন ও ডায়মন্ডহারবার থেকে সাংসদ হন। দুহাজার চৌদ্দতে তৃণমূল ছেড়ে ফের কংগ্রেসে ফেরেন। দু'হাজার আঠারো সালে তিনি রাজ্য কংগ্রেস এর সভাপতি হন। রাজ্য রাজনীতিতে আটাত্তর বছরের সোমেনবাবু ছোড়দা নামেই পরিচিত ছিলেন। ফুটবল অত্যান্ত ভালোবাসতেন সোমেন বাবু। চারবছর অন্তর বিশ্বকাপ ফুটবল এর আসরে তাঁর যাওয়াটা ছিল বাধ্যতামূলক। কলকাতার এক সাংবাদিক তাঁর জন্যে হোটেল বুক করে রাখতেন। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যায় থেকে আর এক নেতা বুয়া চক্রবর্তীকে সঙ্গে করে সোমেন মিত্র পৌঁছে যেতেন আমেরিকা, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা জাপানে। ঘটা করে কালীপুজো করতেন আমহার্স্ট স্ট্রিট এ, যে আমহার্স্ট স্ট্রিট বহুদিন বঙ্গ রাজনীতির ভরকেন্দ্র ছিল। সোমেন মিত্র'র প্রয়াণে বাংলার রাজনৈতিক মহলে যে এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হল তা বলাই বাহুল্য।