বাংলারজমিন
ঘাটাইলে লোকশানের ভয়ে গরু খামারিরা
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
১৬ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৮:৫৯ পূর্বাহ্ন
একদিকে করোনাভাইরাসের প্রভাব, অপরদিকে আগাম বন্যার কারণে গরুর খামারি ও প্রান্তিক কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে। চারদিকে বন্যার কারণে পশু খাদ্যর ব্যাপক সংকট ও হাট-বাজার পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে গরুর ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার শঙ্কায় চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন তারা। বাড়ি ঘরে পানি উঠার কারণে রাস্তার ধারে উঁচু জায়গায় গরু ছাগল নিয়ে নির্ঘুম রাত্রি পোহাতে হচ্ছে তাদের। এর উপর রয়েছে আবার ব্যাংকের ঋণের খগড়। অভাব, দুশ্চিন্তা আর ঋণের বুঝা মাথায় নিয়ে চোখের জ্বলে কেঁদে কাটাচ্ছেন প্রতিটি দিন, প্রতিটি প্রহর। মনে বড় আশা নিয়ে কিছু বার্তি ইনকামের আশায় ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পশু লালন-পালনে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাধারণ কৃষক ও খামারিরা। গত বছর ঈদে পশুর ভালো দাম পেলেও এবার তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। করোনা সংক্রমণের কারণে এবারের ঈদে কোরবানির পশু বিক্রি ও সঠিক মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে উপজেলার ছোট-বড় খামারিরা। উপজেলার লাউয়া গ্রামের গ্রামের গরু খামারি নাসির উদ্দিন বিপুল প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদকে সামনে রেখে তিনটি দেশীয় জাতের গরু লালন-পালন করেছেন। আশা করছেন গরু তিনটি দুই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে ঈদ সামনে চলে এলেও ক্রেতাদের আনাগোনা না থাকায় লোকসানের শঙ্কা ভর করেছে তার মনে। এমন শঙ্কা শুধু নাসির উদ্দিনের নয় উপজেলার ছোট-বড় সকল খামারিদের। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘাটাইল উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে দুই শতাধিক খামার রয়েছে। খামারির বাইরেও সাধারণ কৃষকরা ঈদ উপলক্ষে গরু লালন-পালন করে থাকেন। সব মিলিয়ে এবার উপজেলায় ২০ হাজারেও বেশি কোরবানি উপযোগী গরু রয়েছে। যা দিয়ে উপজেলার কোরবানি গরুর চাহিদা মেটানো সম্ভব। খামারিরা জানান, করোনার থাবার কারণে এবারের ঈদে যথাসময়ে গরু বিক্রি করতে না পারলে খামারিসহ অনেক সৌখিন কৃষককে লোকসানে পড়তে হবে। হারাতে হবে সর্বস্ব। খামারের শ্রমিকরা জানান, ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করতে খামারে দিনরাত পরিশ্রম করছেন। খামারে পাইকারের আনাগোনা না থাকায় তারা হতাশায় ভুগছেন। কারণ খামার মালিকরা গরুর ভালো দাম না পেলে তাদের মজুরি পাওয়া নিয়ে সমস্যা হবে। ঘাটাইল উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. বাহাউদ্দীন সরোয়ার রিজভী বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস কোরবানির পশু কেনাবেচার জন্য অনলাইন পশুর হাট চালু করবে। অপরদিকে কোরবানির নির্ধারিত হাটগুলোতে ক্রেতারা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভারত থেকে গরু না আসলে খামারিদের লোকসানের পড়তে হবে না এবং দাম ভালো পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।