বাংলারজমিন

বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর প্রতারণা, ফেঁসে গেলেন মাঠকর্মী অষ্ঠবন্ধু

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

১৩ জুলাই ২০২০, সোমবার, ৭:০৮ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের নেফারদারগা এলাকায় বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীটি সোনালী ইসলামী ডিপিএস (দুই কিস্তি ডিপোজিট পেনশন স্কীম) অনুযায়ী প্রজেক্ট অফিস হিসেবে স্থাপিত। প্রজেক্ট অফিসটির দায়িত্বে ছিলেন অত্র এলাকার অষ্ঠবন্ধু রায় কাগজি তিনি কোম্পানীর সকল নিয়ম নীতি মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। গ্রামের সাধারন মানুষ বীমার নিয়ম নীতির আর মৃত্যু ঝুকিসহ ডিপোজিট আর বাড়তি পেনশনের কথা চিন্তা করে সহজ কিস্তির মাধ্যমে গ্রাহক হবার সুযোগটি হাতছাড়া করতে চায়নি।
প্রজেক্ট অফিসের দায়িত্বে থাকা অষ্ঠবন্ধু রায় জানান যে, ২০০৪ সালে প্রজেক্ট অফিসটি শুরু করার কিছুদিন পর অল্প কিছু বীমা গ্রাহক সৃষ্টি হয় এবং এরই মধ্যে একটি গ্রাহক মাত্র ২টি কিস্তি দিয়েই মারা যান এবং মারা যাওয়া থেকে ৩ মাসের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী প্রিমিয়ামের ২৪ হাজার টাকা ঢাকা হেড অফিস ও বিভাগীয় অফিসের সহযোগীতায় তা আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রদান করা হয়। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রাহক সংখ্যা দিনে দিনে বাড়তে থাকে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত হেড অফিস মুলত ২০টি চেক ইস্যু করেন যা নির্বাহী রশিদ মুলে। বীমা কোম্পানীর চুক্তির মেয়াদ অনুযায়ী বীমা গ্রহীতার ১০ বছর অতিবাহিত হলে কিছু সংখ্যক গ্রাহক প্রজেক্ট অফিসে চাপ দিতে থাকে, সমস্ত প্রিমিয়ামের টাকা পরিশোদ করার জন্য। দায়িত্বে থাকা অষ্ঠবন্ধু রায় হেড অফিসে বিষয়টি জানালে হেড অফিস সময়ক্ষেপণ আর টালবাহনা করতে থাকে। পরিশেষে সর্বমোট ১৭০ জন বীমা গ্রাহক, যার মধ্যে ২০ জন বীমা গ্রাহক বীমাদাবীর প্রিমিয়ামের টাকা ফেরত পেয়েছেন। আর ১৫০ জন গ্রাহকের আনুমানিক ১০ লাখ টাকা ফেরত পাবে। ইতিমধ্যে হেড অফিস আর বিভাগীয় অফিসে বার বার তাগিদ দিলেও কোন সুরাহা হয়নি। এলাকার বীমা গ্রহীতারা দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর প্রিমিয়ামের টাকা আদায়ে অতিষ্ট হয়ে অষ্ঠবন্ধু রায়ের বাড়ী ঘেরাও করেন এবং লাঞ্চিত করে। নিরুপায় হয়ে পরিবারকে বাঁচাতে তিনি নিজের স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ বিক্রি ও বন্ধক রেখে বীমা গ্রহীতাদের প্রিমিয়ামের অংশিক টাকা ফেরত দেন। বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর কাছে নোটিশ পাঠালেও কোন কাজ হয়নি। গত ০৬/০৭/২০২০ইং প্রজেক্ট অফিসে কর্মরত অষ্ঠবন্ধু গ্রাহকের বীমা দাবির টাকা  নিজের সহায় সম্বল যা ছিল সব বিক্রি করে ৪০% হারে সর্বমোট ৪ লক্ষ টাকা বীমা গ্রহীতাদের কাছে প্রদান করেন।  
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে বায়রা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের প্রিমিয়াম ব্যবসায় বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম আর জালিয়াতির সূত্র ধরে সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেন গত ২১ মে ২০১৯ ইং। (কর্তৃপক্ষের সূত্র: ৫৩.০৩.০০০০.০৩২.১১.০০৬.১৯.১৭, তারিখ: ২১মে ২০১৯ইং, কোম্পানীর সূত্র: বিএলআই/প্রকা/বোর্ড/৯৮৬/২০১৯, তারিখ: ২৬ মে ২০১৯ইং)।
উক্ত বীমার টাকা ফেরত অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন কাঠালবাড়ী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফিরোজ আক্তার দুলু, স্থানীয় শিক্ষক মো: এরশাদুল হক, ঠিকাদার মো: হারুন অর রশিদ, মো: সিরাজুল ইসলাম, সোহেল রানা, মিঠুন চন্দ্র রায়সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগীতায় ৪০% হারে ৪ লক্ষ টাকা গ্রাহকদের মাঝে বিতরণ করা হয়। বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী অষ্ঠবন্ধুর মত একজন সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলার অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status