বাংলারজমিন

আফালে ভরসা কচুরিপানা

শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

১২ জুলাই ২০২০, রবিবার, ১২:৩৮ অপরাহ্ন

হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জের শাল্লায় দশদিনের মাথায় ফের   বন্যায় পানিবন্দি  হয়ে পড়েছে  নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১৫ টি গ্রামের মানুষ । বসত বাড়িতে পানি ওঠার কারণে শনিবার সকাল থেকেই তাদের ঘরের রান্নাবান্নার কাজ করতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন তারা ।  পাশাপাশি শুকনো খাবার সংগ্রহ করে তারা খদ্যের চাহিদা মেটাচ্ছেন। গত তিনদিন ধরে ভারী বর্ষণের ফলে  উজান থেকে নেমে আসা  পানি বিপদ সীমায়  প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে গ্রামীণ অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট ছোট গাছের চারা, সবজী বাগান মৎস্য খামার পানির নীচে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের  বন্যায় আক্রান্ত  পরিবার গুলোর মধ্যে ত্রান বিতরণ শুরু করা হয়েছে।  বেশ কিছু  পরিবারকে বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে। গত বন্যার তুনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে   
 ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অসমাপ্ত দিরাই শাল্লা সড়ক, ভাটী বাংলা কলেজ,   সুখলাইন কমিউনিটি ক্লিনিক, সাতপাড়া বাজার, মনুয়া বাজার, নিজগাঁও বাজার, বিভিন্ন পাড়ার সংযোগ  রাস্তা, গোবিন্দ চন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পুর্ব ও দক্ষিণ পাশের নতুন পাড়াগুলো।   এছাড়াও নদীর তীরবর্তী নতুন গ্রামগুলোর বসতবাড়িগুলো ২ থেকে ৩ ফুট পানির নীচে তলিয়ে গেছে।  
অপরদিকে দিরাই শাল্লার সড়কের যেটুকু কাজ হয়েছিল সেটি ও বিনষ্ট হয়ে  যাচ্ছে  আফালে।   
অবিরাম বর্ষনে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি , অপরদিকে পশ্চিম দক্ষিনের  আফালে (বাতাসে)  কয়েকটি গ্রামের বসতঘর, গোয়াল ঘর, রান্নাঘর, আবার অনেকের ধানের গোলা ঘর  ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে।   হাওরে  সকল প্রকার  নৌকা, ট্রলার বন্ধ থাকায়  উপজেলা সদরের সাথে  যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তার পর ও জীবনবাজি রেখে পৈত্রিক ভিটা রক্ষার যুদ্ধে একমাত্র  কচুরিপানার  উপর ভরসা করে  সংগ্রহে দলবেঁধে  রীতিমত প্রতিযোগিতায় নেমেছে হাওরের দামাল সন্তানেরা।  
রবিবার সকালে কচুরিপানা নেয়ার  দৃশ্য দেখা যায় বাহাড়া ইউনিয়নের নওয়াগাঁও গ্রামের পাশে।
 কথা হয় কচুরিপানা নিতে আসা হরিপুর, শান্তিপুর, হরিনগর, মুক্তারপুর, রূপসা,বাহাড়া, নয়াগাঁও, নাছিরপুর, রহমতপুর, মন্নানপুর, গোবিন্দপুর, সুখলাইন, পুড়ারপার,শিবপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের লোকজনের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা  বলেন, পানি বাইড়া গেছে, অনেকের বাড়িঘরে পানি উটছে, তার উপর আফাঁলে (বাতাসে) সব কিছু ভাঙ্গিয়া নিতাছে। এখন একমাত্র ফেনা (কচুরিপানা)  ছাড়া রক্ষার উপায় নাই। তাই আফাঁলের মাঝেও কষ্ট করে ফেনা নিতে আইছি।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মুক্তাদির হোসেন   শনিবার থেকে  বন্যায় প্লাবিত গ্রামগুলোতে ত্রান বিতরণ শুরু করেছে। এনিয়ে রবিবার সকালে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা উপজেলা দুর্যোগ কমিটির জরুরী সভা করেছি। পাহাড়ি ঢলের পানিতে গ্রামীণ অবকাঠামো অনেক ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রান বিতরণ শুরু করেছি ।  শুকনো খাবার নিয়ে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছি । বেশ কয়েকটি  বন্যাশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রয়োজনে উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যাশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে খুলে দেয়া হবে। সকল ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল আমিন চৌধুরী বলেন, বন্যা মোকাবিলায় আমরা সার্বক্ষনিক নজর রাখছি।  দুর্যোগ মোকাবিলায়  উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে   
সব ধরনের  প্রস্ততি রাখা হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status