প্রথম পাতা

অক্সফামের রিপোর্ট

বিশ্বে ক্ষুধায় প্রতিদিন মারা যাবে ১২,০০০ মানুষ

মানবজমিন ডেস্ক

১০ জুলাই ২০২০, শুক্রবার, ৯:৫২ পূর্বাহ্ন

করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে বিশ্বে যে পরিমাণ মানুষ মারা গেছেন বা যাচ্ছেন, তারচেয়ে বেশি মানুষ মারা যেতে পারেন অনাহারে। এ সংখ্যা প্রতিদিন ১২ হাজার পর্যন্ত দাঁড়াতে পারে। মধ্যম আয়ের দেশগুলোর অনেক মানুষ, যারা দিন এনে দিন খান, তারা এই সংকটের শীর্ষে রয়েছেন। এসব সতর্কতা দিয়েছে বৃটিশ দাতব্য সংস্থা অক্সফাম। তারা বলেছে, বিশ্বে ত্রাণ কমে আসা, ভয়াবহ বেকারত্ব, খাদ্য ও সরবরাহে বিঘ্নের মতো অবস্থার পরিণতিতে এ বছর অনাহারে থাকার দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেয়া হবে প্রায় ১২ কোটি ২০ লাখ মানুষকে। ‘দ্য হাঙ্গার ভাইরাস’ শীর্ষক রিপোর্টে এমন একটি ভয়াবহ অবস্থার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রতিদিন বিশ্বে অনাহারে মারা যেতে পারেন ১২ হাজার মানুষ। অক্সফাম বলেছে, এপ্রিলে করোনাভাইরাসে বিশ্বে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি। সেই সংখ্যা ছিল গড়ে ১০ হাজার। কিন্তু অনাহারে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা তার চেয়েও কমপক্ষে ২ হাজার বেশি হবে। এ খবর প্রকাশ করেছে অনলাইন বিবিসি, স্কাই নিউজসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। এতে বলা হয়েছে, অনাহারে যেসব দেশে বেশি মানুষ মারা যাবে তার মধ্যে ১০টি দেশকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি দেশ হলো আফগানিস্তান, সিরিয়া ও দক্ষিণ সুদান। অক্সফাম বলছে, এই তিনটি দেশে পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। উদাহরণ হিসেবে, আফগানিস্তানে নতুন করে ১০ লাখের মতো মানুষকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এমন অবস্থায় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ছিলেন ২৫ লাখ মানুষ। তা বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালের মে’তে দাঁড়ায় ৩৫ লাখ। অক্সফাম বলছে, সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার কারণে খাদ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। ইরানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ধস নামার কারণে রেমিট্যান্স কমে গেছে।
অক্সফামের রিপোর্টে বলা হয়েছে ভারত, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো মধ্যম আয়ের দেশগুলো অনাহারের এপিসেন্টার হিসেবে আবির্ভূত হবে। এসব দেশে লাখ লাখ মানুষ সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটের একেবারে প্রান্তসীমায় রয়েছেন। অক্সফাম আরো বলেছে, সবচেয়ে বড় খাদ্য ও বেভারেজ বিষয়ক আটটি প্রতিষ্ঠান এ বছর তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ১৮০০ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে। জাতিসংঘ কোভিড-১৯ বিষয়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলোর জন্য খাদ্য ও কৃষি সহায়তা বাবদ যে তহবিল দাবি করেছে, ওই অর্থ তার ১০ গুণেরও বেশি।
অক্সফাম জিবি-এর প্রধান নির্বাহী ড্যানি শ্রীসকান্দারাজাহ বলেছেন, করোনাভাইরাস যতটা ক্ষতি করেছে তারচেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্ব। এর ফলে বিশ্বের দরিদ্র লাখ লাখ মানুষকে আরো গভীর সংকট ফেলবে। তারা অনাহার ও দারিদ্র্যের শিকারে পরিণত হবেন। তিনি বলেছেন, জাতিসংঘ কোভিড-১৯ আপিলে অর্থ সহায়তা দিয়ে সরকারগুলো এসব জীবন রক্ষা করতে পারে। মহামারি মোকাবিলার জন্য চলমান সব যুদ্ধ বন্ধ করে বৈশ্বিক অস্ত্রবিরতিকে সমর্থন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় জি-২০ ভুক্ত অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে ঋণ বাতিল করে দিয়ে বাস্তবে এক ব্যতিক্রম ঘটাতে পারে বৃটেন। দরিদ্রদের টিকে থাকায় সহায়তা করার জন্য এমন পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।
স্কাই নিউজের আফ্রিকা বিষয়ক প্রতিনিধি জন স্পার্কস বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় কয়েক কোটি মানুষ একেবারে একপেশে হয়ে পড়েছেন। এসব পরিবার এখন শুধু টিকে থাকার জন্য লড়াই করছে। করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাপকভাবে কর্মহীনতা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানকারী জিম্বাবুয়ে, মোজাম্বিক ও মালাবির মতো দেশের লাখ লাখ অভিবাসীর মধ্যে এর ধাক্কা লেগেছে। তারা নিজেদের খাদ্য সংস্থান করতে হিমশিম খাচ্ছেন। দেশে রেখে আসা পরিবারের কাছে পাঠাতে পারছেন না রেমিট্যান্সের অর্থ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status