শেষের পাতা
সরকার বাজেট বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর
সংসদ রিপোর্টার
৩০ জুন ২০২০, মঙ্গলবার, ৮:২৬ পূর্বাহ্ন
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, বাজেট বাস্তবায়নে অতীতে আমরা ব্যর্থ হয়নি, ভবিষ্যতেও হবো না। সামনে যতই সংকট আসুক, আওয়ামী লীগ সরকার শক্ত হাতে তা মোকাবিলা করবে। যতই বাধা আসুক তা মোকাবিলা করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। দেশের কোনো মানুষকে আমরা অভুক্ত থাকতে দেবো না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। দুর্নীতির মূলোৎপাটন করেই আমরা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবো। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সমাপনী আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। দীর্ঘ বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ, মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় কার্যকর পরিকল্পনা সংসদে তুলে ধরেন। এ ছাড়া সংসদ নেতা বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদেরের বক্তব্যের জবাবে বলেন, ঢাকা মেডিকেলে ডাক্তার, নার্সদের খাওয়ার খরচের হিসাবে ২০ কোটি টাকা অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। আমরাও এটা তদন্ত করে দেখছি। এত অস্বাভাবিক কেন হবে? এটা স্বাভাবিকভাবেই অস্বাভাবিক মনে হয়। যদি কোনো অনিয়ম হয় সেটাও ব্যবস্থা নেব। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং বিরোধী দলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পাস হবে।
বৈশ্বিক অর্থনীতির মহামন্দা মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত: বৈশ্বিক অর্থনীতি মহামন্দা মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, করোনা মহামারির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি মহামন্দার দ্বারপ্রান্তে। জাতি একটি ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বব্যাপী এই সমস্যা। তবে দেশের সব ধরনের মানুষ যাতে উপকৃত হয় এজন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। ইতিমধ্যে ১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী সবার আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে বলেন, এই প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারির হাত থেকে দেশবাসী ও বিশ্ববাসী যেন মুক্তি পান। চিকিৎসাধীনরা যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২০ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ সংকুচিত হবে বলে প্রাক্কলন দিয়েছে। করোনার প্রভাবে বিশ্বব্যাপী ১৯ কোটি ৫০ লাখ কর্মীর চাকরি হ্রাস, বৈশ্বিক এফডিআই প্রবাহ ৫ থেকে ১৫ শতাংশ হ্রাস এবং বৈশ্বিক রেমিট্যান্স ২০ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ঘোষণা দিয়েছে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে আমরা বাংলাদেশে একটি বাজেট প্রণয়ন করেছি। এই বাজেট প্রণয়ন অত্যন্ত কঠিন ও দুরূহ কাজ ছিল। এই বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে জড়িতদের ধন্যবাদ জানাই।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও জীবন-জীবিকা রক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে বাজেট দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলছেন বাজেট একটু বেশি আশাবাদী দেখানো হয়েছে। আমরা অবশ্যই আশাবাদী। সব সময় আমাদের একটা লক্ষ্য থাকতে হবে। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর জন্য সবকিছু স্থবির। আমরা আশাকরি, সব সময় আমরা আশাবাদী যে, এই অবস্থা থাকবে না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটবে। যদি হঠাৎ উত্তরণ ঘটে আগামীতে আমরা কি করবো সেটা চিন্তা করেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি। এরই মধ্যে আমরা প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার ১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। এই ১৯টি প্যাকেজ সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত যখন হবে তখন ১২ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ সুবিধা পাবে। এ ছাড়া প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ কর্ম সুরক্ষা ও নতুন কর্মসৃজন হবে। বাজেট প্রস্তাবনায় যেসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তা উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ২ অর্জন করবো বলে নির্ধারণ করেছিলাম। প্রথম ৮ মাসে আমরা ৭ দশমিক ৮ শতাংশ অর্জনও করেছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সেটা কমে যায় এবং সংশোধন করতে বাধ্য হই। যেটা এখন ৫ দশমিক ২ শতাংশ ধার্য করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে বিশ্ব এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি কোভিড-১৯ এর প্রভাব থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসবে। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশের অর্থনীতি পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে ধরে নিয়েই আগামী ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে প্রবৃদ্ধির হার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। একই সময় নিম্ন মূল্যস্ফীতি ধরে রাখার পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সেজন্যই আমরা উচ্চাবিলাসী বাজেটই দিয়েছি। দিয়েছি এই জন্য যে, আমাদের তো একটা আকাঙ্ক্ষা আছে বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে। তাদের জীবনমান উন্নত করবো।
প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রাক্কলন পূরণে চার দফা টার্গেট পূরণে গৃহীত কর্মসূচির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, (ক) করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে আমাদের অর্থনীতির উৎপাদন ব্যাহত হলেও অর্থনৈতিক অবকাঠামোর কোনো ক্ষতি হয়নি। যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা যুদ্ধের সময় সাধারণত হয়ে থাকে। (খ) সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির ফলে কর্মসৃজন ও ব্যক্তি আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়বে এবং প্রণোদনা প্যাকেজ সমূহ সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হলে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা মহামারির পূর্বাবস্থায় চলে আসবে। (গ) অক্টোবর বা নভেম্বর মাসের মধ্যে করোনা ভাইরাস প্রতিষেধক টিকা বাজারে চলে আসলে ইউরোপ-আমেরিকায় জীবনযাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আমাদের রপ্তানি আয় কোভিড-১৯ পূর্ববর্র্তী অবস্থায় আবার ফিরে যাবে এবং সবশেষ (ঘ) বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য খুব কমে গিয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেটা আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা আশাবাদী এর ফলে বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রবাস আয়ের বর্তমান সংকটও কেটে যাবে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারের চার দফা কর্মপন্থার বিষয়গুলো তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, আমরা চারটি কৌশলগত কর্মপন্থা ঠিক করেছি। তা হচ্ছে (ক) সরকারি ব্যয় বৃদ্ধিকরণ, কর্মসৃজনকে প্রাধান্য দেয়া বিলাসী ব্যয় নিরুৎসাহিত করা এবং কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় পিছিয়ে দেয়া, (খ) আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ প্রণয়ন এবং (গ) সামাজিক সুরক্ষার আওতা বৃদ্ধিকরণ, (ঘ) বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা। শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে অর্থনীতির প্রভাব কার্যকরীভাবে মোকাবিলা করার জন্য প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার ১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। প্রণোদনা প্যাকেজসমূহ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫ কোটি ৭০ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে সুবিধা পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব কিছু বিবেচনায় নিয়েই অর্থমন্ত্রী ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের এটি ১৭তম বাজেট, বর্তমান মেয়াদের দ্বিতীয় বাজেট। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিনটি বাজেট দেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। কাজেই সব মিলিয়ে ২০টি বাজেট আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশকে উপহার দিয়েছে। এই বাজেটে অর্থনীতি পুনর্গঠন এবং করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জীবন ও জীবিকা রক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েছি। তাছাড়া বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে প্রাধান্য দেয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য, কৃষি, কর্মসৃজন এবং সামাজিক সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা এগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। অতীতের মতো এই বাজেটও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরো ২ হাজার ডাক্তার ও ৪ হাজার নার্স নিয়োগ: প্রস্তাবিত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অল্প সময়ে ২ হাজার ডাক্তার ও ৬ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। আরো ২ হাজার ডাক্তারের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। আরো ৪ হাজার নার্স নেবো। সেই নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট কার্ডিওগ্রাফার এবং ল্যাব অ্যাটেনডেন্টের ৩ হাজার নতুন পদও সৃষ্টি করা হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, মেডিকেল যন্ত্রপাতি ক্রয় ও করোনা চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২৫০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আরো একটি প্রকল্প অনেুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। ভারতে আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ, পকিস্তানে ২ দশমিক ০৩ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ১৪ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৫ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানে দেখা যায় যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় বাংলাদেশের করোনাভাইরাসে মৃত্যুহার নিম্ন পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি। যদিও একটা মৃত্যুও কাম্য নয়। তিনি বলেন, গত ১২ বছরের গড়ে ১ দশমিক ৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্যবিমোচন করছিলাম। যার ফলে বাংলাদেশের দারিদ্র্য ৪০ ভাগ থেকে ২০ দশমিক ৫ ভাগে নেমে এসেছিল। কোভিড-১৯ প্রভাবে কিছুটা ছন্দপতন হতে পারে। আমরা আশা করি আগামী অর্থবছরের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড শুরু হবে তখন দারিদ্র্য বিমোচনে পূর্বের ন্যায় ফিরে আসতে পারবো। বাংলাদেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করতে পারবো। সংসদ নেতা বলেন, সামনে যে সংকটই আসুক না কেন আওয়ামী লীগ সরকার তা শক্তভাবে মোকাবিলা করবে এবং দেশের মানুষকে অভুক্ত থাকতে দেবে না। আমাদের খাদ্য চাহিদা ৩ কোটি ৭৫ লাখ, উৎপাদন হয়েছে ৩ কোটি ৯৯ লাখ। এবছর আমাদের উদ্বৃত্ত আছে। এই উৎপাদন অব্যাহত রাখবো।
এ বাজেট বাস্তবায়ন বিরাট চ্যালেঞ্জ- বিরোধী দলীয় উপনেতা
বিরোধী দলের উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন এক বিরাট চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে বলেন, করোনার কারণে অর্থনীতি বিপর্যস্ত, কর্মহীন হচ্ছে মানুষ, দারিদ্র্যের হার বাড়ছে। সমালোচকরা বলছেন, এই বাজেট গতানুগতিক, অনুমানভিত্তিক। থোক বরাদ্দের ক্ষেত্রে যথাযথ মনিটরিং না করলে অপচয়-দুর্নীতির সম্ভাবনা থাকে। আয়ের স্বল্পতা, অন্যদিকে ব্যয়ের বিশালতা সামনে। সর্বত্র কৃচ্ছ্রতা সাধন করতে হবে, নতুবা রাজস্ব আদায় হবে না। প্রবাসীরা কর্ম হারাচ্ছে, রেমিটেন্স ২০ থেকে ২৫ ভাগ কমে যাবে, এতে রিজার্ভে টান পড়বে। তিনি বলেন, বাজেটেরও চেয়ে বেশি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে, এই পাচার থামছে না। কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, এই খাত থেকে বেশি টাকা আসবে না। করোনা কতদিনে শেষ হবে কেউ জানে না। তাই করোনার সঙ্গে বসবাস করেই অর্থনীতিকে সচল রাখতে হবে। কৃষিখাত সচল থাকলে পৃথিবীর কারো কোনো সহযোগিতা ছাড়া বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে, তাই কৃষিখাতে বরাদ্দ আরো বাড়াতে হবে। তিনি বর্তমান সংকট মোকাবিলায় দলমতনির্বিশেষে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, সারাবিশ্বে চরম এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি এবং জাতীয় চরম ক্রান্তিলগ্নে জীবন ও জীবিকা রক্ষার বাজেট উত্থাপিত হয়েছে। পুরো বিশ্বেই যেন অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে। প্রকৃতিসৃষ্ট অজানা শত্রুর আঘাতে আমরা বিপর্যস্ত, অদৃশ্য এই শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেই আমরা বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি। জীবন বাঁচানোর জন্য অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটে অনেক ধরনের সুযোগ রেখেছেন, সামাজিক নিরাপত্তার পরিধি বৃদ্ধি করেছেন। প্রতিবছরই বাজেট নিয়ে সমালোচনা হয়, এবারও হচ্ছে। গত ১১ বছর শেখ হাসিনা সরকার বাজেট বাস্তবায়ন করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, যাচ্ছেন। বাস্তবে আওয়ামী লীগের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত বিএনপি। আওয়ামী লীগ সবসময় উজানে নৌকা চালাতে অভ্যস্ত। জীবন বাঁচাতে হবে, জীবিকার সংগ্রামও চলবে। সবাই শেখ হাসিনার ওপর আস্থা-বিশ্বাস রাখুন, আমরা সংকট মোকাবিলা করে এগিয়ে যাবোই।
বৈশ্বিক অর্থনীতির মহামন্দা মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত: বৈশ্বিক অর্থনীতি মহামন্দা মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, করোনা মহামারির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি মহামন্দার দ্বারপ্রান্তে। জাতি একটি ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বব্যাপী এই সমস্যা। তবে দেশের সব ধরনের মানুষ যাতে উপকৃত হয় এজন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। ইতিমধ্যে ১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী সবার আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে বলেন, এই প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারির হাত থেকে দেশবাসী ও বিশ্ববাসী যেন মুক্তি পান। চিকিৎসাধীনরা যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২০ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ সংকুচিত হবে বলে প্রাক্কলন দিয়েছে। করোনার প্রভাবে বিশ্বব্যাপী ১৯ কোটি ৫০ লাখ কর্মীর চাকরি হ্রাস, বৈশ্বিক এফডিআই প্রবাহ ৫ থেকে ১৫ শতাংশ হ্রাস এবং বৈশ্বিক রেমিট্যান্স ২০ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ঘোষণা দিয়েছে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে আমরা বাংলাদেশে একটি বাজেট প্রণয়ন করেছি। এই বাজেট প্রণয়ন অত্যন্ত কঠিন ও দুরূহ কাজ ছিল। এই বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে জড়িতদের ধন্যবাদ জানাই।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও জীবন-জীবিকা রক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে বাজেট দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলছেন বাজেট একটু বেশি আশাবাদী দেখানো হয়েছে। আমরা অবশ্যই আশাবাদী। সব সময় আমাদের একটা লক্ষ্য থাকতে হবে। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর জন্য সবকিছু স্থবির। আমরা আশাকরি, সব সময় আমরা আশাবাদী যে, এই অবস্থা থাকবে না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটবে। যদি হঠাৎ উত্তরণ ঘটে আগামীতে আমরা কি করবো সেটা চিন্তা করেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি। এরই মধ্যে আমরা প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার ১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। এই ১৯টি প্যাকেজ সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত যখন হবে তখন ১২ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ সুবিধা পাবে। এ ছাড়া প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ কর্ম সুরক্ষা ও নতুন কর্মসৃজন হবে। বাজেট প্রস্তাবনায় যেসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তা উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ২ অর্জন করবো বলে নির্ধারণ করেছিলাম। প্রথম ৮ মাসে আমরা ৭ দশমিক ৮ শতাংশ অর্জনও করেছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সেটা কমে যায় এবং সংশোধন করতে বাধ্য হই। যেটা এখন ৫ দশমিক ২ শতাংশ ধার্য করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে বিশ্ব এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি কোভিড-১৯ এর প্রভাব থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসবে। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশের অর্থনীতি পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে ধরে নিয়েই আগামী ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে প্রবৃদ্ধির হার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। একই সময় নিম্ন মূল্যস্ফীতি ধরে রাখার পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সেজন্যই আমরা উচ্চাবিলাসী বাজেটই দিয়েছি। দিয়েছি এই জন্য যে, আমাদের তো একটা আকাঙ্ক্ষা আছে বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে। তাদের জীবনমান উন্নত করবো।
প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রাক্কলন পূরণে চার দফা টার্গেট পূরণে গৃহীত কর্মসূচির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, (ক) করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে আমাদের অর্থনীতির উৎপাদন ব্যাহত হলেও অর্থনৈতিক অবকাঠামোর কোনো ক্ষতি হয়নি। যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা যুদ্ধের সময় সাধারণত হয়ে থাকে। (খ) সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির ফলে কর্মসৃজন ও ব্যক্তি আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়বে এবং প্রণোদনা প্যাকেজ সমূহ সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হলে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা মহামারির পূর্বাবস্থায় চলে আসবে। (গ) অক্টোবর বা নভেম্বর মাসের মধ্যে করোনা ভাইরাস প্রতিষেধক টিকা বাজারে চলে আসলে ইউরোপ-আমেরিকায় জীবনযাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আমাদের রপ্তানি আয় কোভিড-১৯ পূর্ববর্র্তী অবস্থায় আবার ফিরে যাবে এবং সবশেষ (ঘ) বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য খুব কমে গিয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেটা আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা আশাবাদী এর ফলে বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রবাস আয়ের বর্তমান সংকটও কেটে যাবে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারের চার দফা কর্মপন্থার বিষয়গুলো তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, আমরা চারটি কৌশলগত কর্মপন্থা ঠিক করেছি। তা হচ্ছে (ক) সরকারি ব্যয় বৃদ্ধিকরণ, কর্মসৃজনকে প্রাধান্য দেয়া বিলাসী ব্যয় নিরুৎসাহিত করা এবং কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় পিছিয়ে দেয়া, (খ) আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ প্রণয়ন এবং (গ) সামাজিক সুরক্ষার আওতা বৃদ্ধিকরণ, (ঘ) বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা। শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে অর্থনীতির প্রভাব কার্যকরীভাবে মোকাবিলা করার জন্য প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার ১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। প্রণোদনা প্যাকেজসমূহ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫ কোটি ৭০ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে সুবিধা পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব কিছু বিবেচনায় নিয়েই অর্থমন্ত্রী ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের এটি ১৭তম বাজেট, বর্তমান মেয়াদের দ্বিতীয় বাজেট। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিনটি বাজেট দেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। কাজেই সব মিলিয়ে ২০টি বাজেট আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশকে উপহার দিয়েছে। এই বাজেটে অর্থনীতি পুনর্গঠন এবং করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জীবন ও জীবিকা রক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েছি। তাছাড়া বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে প্রাধান্য দেয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য, কৃষি, কর্মসৃজন এবং সামাজিক সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা এগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। অতীতের মতো এই বাজেটও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরো ২ হাজার ডাক্তার ও ৪ হাজার নার্স নিয়োগ: প্রস্তাবিত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অল্প সময়ে ২ হাজার ডাক্তার ও ৬ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। আরো ২ হাজার ডাক্তারের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। আরো ৪ হাজার নার্স নেবো। সেই নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট কার্ডিওগ্রাফার এবং ল্যাব অ্যাটেনডেন্টের ৩ হাজার নতুন পদও সৃষ্টি করা হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, মেডিকেল যন্ত্রপাতি ক্রয় ও করোনা চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২৫০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আরো একটি প্রকল্প অনেুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। ভারতে আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ, পকিস্তানে ২ দশমিক ০৩ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ১৪ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৫ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানে দেখা যায় যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় বাংলাদেশের করোনাভাইরাসে মৃত্যুহার নিম্ন পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি। যদিও একটা মৃত্যুও কাম্য নয়। তিনি বলেন, গত ১২ বছরের গড়ে ১ দশমিক ৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্যবিমোচন করছিলাম। যার ফলে বাংলাদেশের দারিদ্র্য ৪০ ভাগ থেকে ২০ দশমিক ৫ ভাগে নেমে এসেছিল। কোভিড-১৯ প্রভাবে কিছুটা ছন্দপতন হতে পারে। আমরা আশা করি আগামী অর্থবছরের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড শুরু হবে তখন দারিদ্র্য বিমোচনে পূর্বের ন্যায় ফিরে আসতে পারবো। বাংলাদেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করতে পারবো। সংসদ নেতা বলেন, সামনে যে সংকটই আসুক না কেন আওয়ামী লীগ সরকার তা শক্তভাবে মোকাবিলা করবে এবং দেশের মানুষকে অভুক্ত থাকতে দেবে না। আমাদের খাদ্য চাহিদা ৩ কোটি ৭৫ লাখ, উৎপাদন হয়েছে ৩ কোটি ৯৯ লাখ। এবছর আমাদের উদ্বৃত্ত আছে। এই উৎপাদন অব্যাহত রাখবো।
এ বাজেট বাস্তবায়ন বিরাট চ্যালেঞ্জ- বিরোধী দলীয় উপনেতা
বিরোধী দলের উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন এক বিরাট চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে বলেন, করোনার কারণে অর্থনীতি বিপর্যস্ত, কর্মহীন হচ্ছে মানুষ, দারিদ্র্যের হার বাড়ছে। সমালোচকরা বলছেন, এই বাজেট গতানুগতিক, অনুমানভিত্তিক। থোক বরাদ্দের ক্ষেত্রে যথাযথ মনিটরিং না করলে অপচয়-দুর্নীতির সম্ভাবনা থাকে। আয়ের স্বল্পতা, অন্যদিকে ব্যয়ের বিশালতা সামনে। সর্বত্র কৃচ্ছ্রতা সাধন করতে হবে, নতুবা রাজস্ব আদায় হবে না। প্রবাসীরা কর্ম হারাচ্ছে, রেমিটেন্স ২০ থেকে ২৫ ভাগ কমে যাবে, এতে রিজার্ভে টান পড়বে। তিনি বলেন, বাজেটেরও চেয়ে বেশি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে, এই পাচার থামছে না। কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, এই খাত থেকে বেশি টাকা আসবে না। করোনা কতদিনে শেষ হবে কেউ জানে না। তাই করোনার সঙ্গে বসবাস করেই অর্থনীতিকে সচল রাখতে হবে। কৃষিখাত সচল থাকলে পৃথিবীর কারো কোনো সহযোগিতা ছাড়া বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে, তাই কৃষিখাতে বরাদ্দ আরো বাড়াতে হবে। তিনি বর্তমান সংকট মোকাবিলায় দলমতনির্বিশেষে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, সারাবিশ্বে চরম এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি এবং জাতীয় চরম ক্রান্তিলগ্নে জীবন ও জীবিকা রক্ষার বাজেট উত্থাপিত হয়েছে। পুরো বিশ্বেই যেন অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে। প্রকৃতিসৃষ্ট অজানা শত্রুর আঘাতে আমরা বিপর্যস্ত, অদৃশ্য এই শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেই আমরা বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি। জীবন বাঁচানোর জন্য অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটে অনেক ধরনের সুযোগ রেখেছেন, সামাজিক নিরাপত্তার পরিধি বৃদ্ধি করেছেন। প্রতিবছরই বাজেট নিয়ে সমালোচনা হয়, এবারও হচ্ছে। গত ১১ বছর শেখ হাসিনা সরকার বাজেট বাস্তবায়ন করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, যাচ্ছেন। বাস্তবে আওয়ামী লীগের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত বিএনপি। আওয়ামী লীগ সবসময় উজানে নৌকা চালাতে অভ্যস্ত। জীবন বাঁচাতে হবে, জীবিকার সংগ্রামও চলবে। সবাই শেখ হাসিনার ওপর আস্থা-বিশ্বাস রাখুন, আমরা সংকট মোকাবিলা করে এগিয়ে যাবোই।