বাংলারজমিন

রামগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

৩০ জুন ২০২০, মঙ্গলবার, ৭:৫১ পূর্বাহ্ন

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা জাহাঙ্গীর কোম্পানির বাড়ি থেকে হরকার বাড়ি পর্যন্ত ও আথাকরা গোপাল বাড়ি থেকে নাপিত বাড়ি পর্যন্ত এ দুইটি রাস্তা বিগত তিন বছর যাবৎ কাজ না করে বার বার প্রকল্প দেখিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে সরকারের ১৭ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪৮ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অত্র ইউপি চেয়ারম্যান বশির আহম্মদ মানিকের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে দুদকে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় সূত্র ও উপজেলা প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দেহলা জাহাঙ্গীর কোম্পানির বাড়ি থেকে সরকার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ২০১৭-১৮ অর্থ বছর ৪০ দিনে কর্মসূচি প্রকল্প থেকে ৩৫ শ্রমিক বাবদ ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থ বছর একই রাস্তার জন্য একই প্রকল্প থেকে আবারো ৩৫ শ্রমিক বাবদ ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে একই রাস্তার নাম পরিবর্তন করে হরকার বাড়ি স্থলে সরকার বাড়ি প্রকল্প দেখিয়ে ভোলাকোট ইউনিয়ন পরিষদের ১% (ভূমি কর) প্রকল্প থেকে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৪৮ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। অপরদিকে আথাকরা গোপাল বাড়ি থেকে নাপিত বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটিতে মাটি দ্বারা উন্নয়নের  কাবিটা প্রকল্পের ২০১৭-১৮ অর্থ বছর ১ লাখ ৮০ হাজার, একই অর্থ বছর ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প থেকে ৫৫ জন শ্রমিক বাবদ ৪ লাখ ৪০ হাজার ও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে একই রাস্তার হিজবুল বাড়ি থেকে নাপিত বাড়ি পর্যন্ত নাম পরিবর্তন করে ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প থেকে ৩০ জন শ্রমিক বাবদ ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে ও সরজমিন গিয়ে আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেছে। দেহলা গ্রামের নূরনবী, জাহাঙ্গীর, খোদেজা বেগম, আথাকরা গ্রামের নিরধ ঘোষ, উমেষ ঘোষ, আলী আহম্মদ (সাবেক রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিস সহকারী) সহ এলাকাবাসী জানান, জাহাঙ্গীর কোম্পানির বাড়ির থেকে হরকার বাড়ি, আথাকরা গ্রামের গোপাল বাড়ি থেকে নাপিত বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি অত্যন্ত সরু ও খানাখন্দে ভরা, রিকশাসহ যেকোন যান চলাচলের অযোগ্য। এ রাস্তাটি অনেক পুরনো বিগত ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এ রাস্তার জন্য সরকারি বরাদ্দ হয়েছে বলেও আমাদের জানা নাই। বরং ইট ভাটার মালিক ও মাটি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাঠের ফসলি জমির মাটি কেটে নেয়ার সময় ব্যক্তি উদ্যোগে ব্যবসায়ীরা রাস্তায় কয়েকটি স্থানে কিছু মাটি ফেলে খানাখন্দ ভরাট করে দেয়। এছাড়াও তারা নিজেরা বাড়ির পুকুর লিজ দিয়ে ও গ্রামবাসীর কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করে ৪-৫ বছর পূর্বে কংক্রিট দিয়ে রাস্তাটি মেরামত করেন। ইউনিয়ন প্যানেল চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন চৌধুরী জানান, আমরা পরিষদের সকল সদস্য চেয়ারম্যান বশির আহম্মেদের নিকট এ ব্যাপারে জানাতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে উল্টো আমাদেরকে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছেন। পরে কোনো উপায়ন্তর না দেখে নোয়াখালী দুদক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বরাবর অভিযোগ করেছি। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান বশির আহম্মেদের সঙ্গে
বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। রামগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দিলীপ দে জানান, আমি অত্র উপজেলায় গত ডিসেম্বর মাসে যোগদান করেছি, আমি যোগদানের পর থেকে যাচাই-বাছাই করে প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছি এবং কাজ বুঝে নিয়ে বিল  দিয়েছি। এর পূর্বে কি হয়েছে আমার জানা নাই।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান জানান, এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে দুদকে অভিযোগের একটি কপি হাতে পেয়েছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status