এক্সক্লুসিভ
বড়াইগ্রামে নিম্নমানের ইট খোয়া-বালু দিয়ে রাস্তা নির্মাণ
বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
২৮ জুন ২০২০, রবিবার, ৭:৩৬ পূর্বাহ্ন
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া গুরুমশৈল এলাকায় সোয়া এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট-খোয়া-বালু ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। পুরাতন ভাঙা বিল্ডিংয়ের সিমেন্টযুক্ত ইট এবং পোড়া কালো রঙের ফাঁপা ইটের আধলা দিয়ে এ রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তায় এমন নিম্নমানের কাজ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দেখেও দেখছে না। এতে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বনপাড়া গুরুমশৈল মসজিদ থেকে বেলালের বাড়ি পর্যন্ত এক হাজার ২৫০ মিটার রাস্তা পাকা করার জন্য ১ কোটি ১৪ লাখ ৩১ হাজার ১৮৫ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। নাটোরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইসলাম কনস্ট্রাকশনের নামে কাজটি বরাদ্দ হলেও ঠিকাদার মিলন হোসেন কিনে নিয়ে কাজটি করছেন। প্রায় ১ বছর বক্স কেটে ফেলে রাখার পর সম্প্রতি রাস্তাটির কাজ শুরু হলে নিম্নমানের মিঠা আধলা (অর্ধেক) আকারের ইটের খোয়া ও মাটিযুক্ত বালি দিয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠে। গতকাল সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, নির্দিষ্ট পরিমাপের খোয়া দিয়ে রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও তা না করে রাস্তা জুড়ে ইট ফেলে রাখা হয়েছে। সে সব ইট শ্রমিক দিয়ে রাস্তাতেই কোন রকমে ভেঙ্গে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে রাস্তার বেশির ভাগ অংশে আধলা থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন ৪-৫ ইঞ্চি আকারের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। কোথাও কোথাও পুরাতন দালান ঘরের সিমেন্টের পলেস্তার যুক্ত ইটের খোয়া দেয়া হয়েছে। সাব ফেজ স্তরটি ৬ ইঞ্চি হওয়ার কথা থাকলেও তা কোনভাবেই তিন ইঞ্চির বেশি হবে না। এ ব্যাপারে গুরুমশৈল গ্রামের আব্দুল হাকিম জানান, ইঞ্জিনিয়ার অফিসের লোকের সামনেই দায়সারা গোছের রাস্তার কাজ করলেও অজ্ঞাত কারণে তারা দেখেও না দেখার ভান করছেন। একই গ্রামের ফুলবার হোসেন বলেন, শুরু থেকেই স্থানীয় লোকজন কাজের মান নিয়ে আপত্তি করছেন। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন গ্রামের লোকের নামে মামলা দেয়ার হুমকি দেন। তাই আমরা আর কিছু বলি না। ইটভাঙ্গার কাজে ব্যস্ত একাধিক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক। ইট ভেঙ্গে শেষ করা আমাদের দায়িত্ব। তাতে কতটুকু ছোট বড় হলো এতো দেখার সময় কই। ঠিকাদারের পক্ষে কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা দুলাল হোসেন ও আফতাব হোসেন রাস্তায় নিম্নমানের ইট কিছুটা ব্যবহার হচ্ছে বলে স্বীকার করেন। ঠিকাদার মিলন হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি রাস্তা দেখতে যেতে পারিনি। তাই কেমন উপকরণ দিচ্ছে বলতে পারছি না। আমি খোঁজ নিচ্ছি। নাটোর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম জানান, এ রাস্তার কাজের মান নিয়ে অনেকেই আমাকে মোবাইল ফোনে অভিযোগ জানিয়েছে। আমি সরেজমিনে কাজটি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।