এক্সক্লুসিভ
শনাক্ত হার অনেক
২৪ জুন ২০২০, বুধবার, ৮:০৯ পূর্বাহ্ন
শাহরাস্তিতে ৪ শনাক্ত
শাহরাস্তি (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ৪ জন ইউপি চেয়ারম্যান আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৩ জন চিকিৎসাধীন ১ একজন চেয়ারম্যানের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে গত সোমবার বিকালে চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিসের প্রেরিত রিপোর্টে নতুন করে ১ জন চেয়ারম্যানের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। অন্যদিকে এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে ৪০৯ জনের নমুনা পাঠানো হয়। তার মধ্যে প্রাপ্ত ২৬৮ জনের নমুনা রিপোর্টে ২০৪ জনের নেগেটিভ এবং ৬৪ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু এবং ৩ জন সুস্থ হয়েছেন। অন্য আক্রান্তরা হোম কোয়ারেন্টিনে এবং হোম আইসোলেশন চিকিৎসাধীন থাকার বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. প্রতিক সেন (ইউএইচএফপিও) নিশ্চিত করেন। আক্রান্ত চেয়ারম্যানদের পরিবার সূত্র জানায়, এই উপজেলায় বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের প্রকোপ দৃশ্যমান হতেই ওই ইউপিগুলোর চেয়ারম্যানরা জনগণের ত্রাণ ও জানের নিরাপত্তায় রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ওই যুদ্ধে লড়তে গিয়ে অদৃশ্য ভাইরাসটির সংক্রমণের দখলে চলে যান এ ৪ চেয়ারম্যান। প্রথম দফায় মঙ্গলবার ৯ই জুন মেহের দক্ষিণ ইউপির চেয়ারম্যান শফি আহমেদ মিন্টু (৬৫) কোভিড-১৯ শনাক্তের নমুনা দিয়েই রাতেই তার করোনা উপসর্গে মৃত্যু হয়। অবশ্য পরে তিনি করোনা পজেটিভ ছিলেন বলে শনাক্ত হয়। এভাবেই ৩ বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিন্টু করোনায় পরাস্ত হন। বুধবার ১০ই জুন মিন্টুর নামাজে জানাজায় বর্তমানে আক্রান্ত ৩ চেয়ারম্যান সমবেদনা জানাতে হাজির হন তার কফিনের পাশে। সেখান থেকে গিয়ে প্রথমে টামটা উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক দর্জি সোমবার ৮ই জুন অসুস্থতা বোধ করে কোভিড শনাক্তকরণে নমুনা দেন। গত শুক্রবার ১২ই জুন তিনি করোনা আক্রান্ত হন বলে নিশ্চিত হন। তিনি মুঠোফোনে জানান, শরীরে ব্যথা, কাশি, গলা ব্যথা নিয়ে সুস্থতার আশায় ১৪ দিন অতিক্রম করেছেন। এখন শনিবার ২০ই জুন দ্বিতীয় নমুনা দিয়ে রিপোর্টের অপেক্ষায় সকলের নিকট দোয়া প্রার্থী।
একইভাবে করোনা হানা দেয় টামটা দক্ষিণ ইউপি’র চেয়ারম্যান জহিরুল আলম মানিকের ঘরে। তিনি গত শনিবার ১৩ই জুন জ্বর অনুভব করে নমুনা দেন। পরে মঙ্গলবার ১৫ই জুন তার করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। তারপর প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্বজনরা দ্রুত ঢাকা স্থানান্তর করে। বর্তমানে তিনি তার ঢাকা ওয়ারি নিজ বাসায় হোম কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সকলের নিকট দোয়া প্রার্থনা করেছেন। অবশেষে দিনরাত ছুটে চলা রায়শ্রী উত্তর ইউপির চেয়ারম্যান সেলিম পাটোয়ারী লিটন। গত সোমবার ১৫ই জুন জ্বর অনুভব করে বৃহস্পতিবার ১৮ই জুন নমুনা দেন। অবশেষে সোমবার ২২শে জুন তার রিপোর্ট করোনা পজেটিভ আসে। তিনি বর্তমানে নিজ বাসায় শুষ্ক কাশি, গলা ব্যথা উপসর্গ নিয়ে হোম আইসোলেশন রয়েছে। এ ৪ মানবিক চেয়ারম্যান জনগণের জান-মালের নিরাপত্তায় যুদ্ধ করতে গিয়ে এখন নিজেরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেঁচে থাকার জীবন যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছেন বলে জানান। ওই যুদ্ধে তারা যেন উত্তীর্ণ হতে পারেন সেজন্য সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন। এদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (আব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি তাদের আশু রোগ মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে এ কোভিড যুদ্ধে উত্তীর্ণ হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণের হাতিয়ার ইউপি চেয়ারম্যানদের করোনা আক্রান্তের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরিন আক্তার সকলের খোঁজখবর রাখছেন বলে নিশ্চিত করেন।
নীলফামারীতে ৯ শনাক্ত
নীলফামারী প্রতিনিধি: ২৪ ঘণ্টায় আরো ৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হওয়ায় এ জেলায় ৩০৫ জনের দেহে সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গেল। তবে করোনা সংক্রমণ রোধের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি এ জেলাতে। ২২শে জুন পর্যন্ত এ জেলায় ৬ জন মারা গেলেও সুস্থ হয়েছেন ১৩৫ জন। তবে যে হারে লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে করে চরম অবনতির দিকেই এগুচ্ছে এ জেলার করোনা পরিস্থিতি। সিভিল সার্জন দপ্তর জানায়, ২২শে জুন পর্যন্ত এ জেলা থেকে ৩০৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হলেও ফল পাওয়া গেছে মাত্র ২৫২৫ জনের। নমুনা পরীক্ষা নিয়ে দীর্ঘ জটের কারণেও সংক্রমণ বাড়ছে নীলফামারীতে বলেও অনেকের ধারণা।
কালীগঞ্জে ৩ শনাক্ত
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় গতকাল নতুন করে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৮ জনে। যার মধ্যে মারা গেছে একজন ও সুস্থ হয়েছেন ১০ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুলতান আহমেদ। ডা. সুলতান আহমেদ আরো জানান, মঙ্গলবার নতুন করে উপজেলার ফয়লা, নিশ্চিন্তপুর ও বারবাজার ইউনিয়নের বাদেডেহী গ্রামের একজন করে মোট তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে আর বাকিদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া, ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, ঝিনাইদহে মঙ্গলবার নতুন ৪৭টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে। যার মধ্যে ৩টি নমুনার রিপোর্ট পজেটিভ বাকি ৪৪টি নেগেটিভ। নতুন আক্রান্ত সবাই কালীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। এনিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৩২ জনে। যার মধ্যে মারা গেছে দুইজন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪৫ জন।
ফরিদপুরে ৮৪ শনাক্ত
ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরে দিনদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত এক হাজার তিনশত ৬ জন। এদের মধ্যে পুলিশ, র্যাব, স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে। এদিকে দিনদিন আশঙ্কাজনক হারে করোনা বাড়ায় জেলার ভাঙ্গা উপজেলাকে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।
জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, ফরিদপুরে নতুন করে যে ৮৪ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে তাদের মধ্যে ফরিদপুর সদরে ৪০ জন, বোয়ালমারীতে ১৬ জন, সদরপুরে ৯ জন, ভাঙ্গা ও মধুখালীতে ৫ জন করে, আলফাডাঙ্গায় ৪ জন, নগরকান্দা ও চরভদ্রাসনে ২ জন করে এবং সালথায় ১ জন। নতুন শনাক্তদের মধ্যে ২৬ জন নারী ও ৫৮ জন পুরুষ। এদের মধ্যে ফরিদপুরে ১১ পুলিশ, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ একজন চিকিৎসক ও তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। নতুন শনাক্তের মধ্যে তিন মাসের একটি মেয়ে শিশুও রয়েছে।
মাগুরায় ৮ শনাক্ত
মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরায় গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত নতুন করে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত ৭২ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছে ৩৪ জন। মারা গেছে ২ জন। নতুন শনাক্ত হওয়া ৮ জনের মধ্যে মাগুরা পৌরসভার ৫ জন, মহম্মদপুরে ২ জন ও শালিখায় ১ জন। আক্রান্তদের হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মাগুরা সিভিল সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সাহা গতকাল দুপুরে জানান, জেলায় নতুন ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত হওয়া নতুন ৮ জন হলো সদরের পৌরসভার খান পাড়ায় ১ জন, জজ কোর্ট বাংলোর ২ জন, স্টেডিয়াম পাড়ায় ১ জন, পুলিশ লাইন পাড়ায় ১ জন, শালিখার গোপালগ্রামে ১ জন, মহম্মদপুর ভাটারা গ্রামের ১ জন, মহম্মদপুর দীঘায় ১ জন। এ পর্যন্ত মোট রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল ১ হাজার ৩২৭ জনের। প্রাপ্ত রিপোর্ট পাওয়া গেছে ১ হাজার ১৫৯ জনের। এখন পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭২ জন। জেলায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৩৪ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে আছেন ৩৪ জন।
তাড়াশে ২ শনাক্ত
তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নতুন করে দুইজন (কোভিড-১৯) করোনাভাইরাস পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। নতুন দুজনের মধ্যে একজন তাড়াশ পৌর শহরে ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও বারুহাস ইউনিয়নের বিনীতপুর গ্রামের বেল্লাল হোসেন (৪০) এবং দেশীগ্রাম ইউনিয়নের মাঝদক্ষিণা গ্রামের নরসিংদী ফেরত শ্রী জয় চন্দ্র রাজ (৩২)। নতুন করে এই দুজনসহ উপজেলা মোট ৯ জন করোনা পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন মিঞা শোভন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তাড়াশ হাসপাতালের করোনা বিষয়ক মুখপাত্র শাহাদত হোসেন, জানান, গত ১১ই জুন তাড়াশ হাসপাতাল থেকে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে সিরাজগঞ্জ মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চৌদ্দগ্রামে ১২ শনাক্ত
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে করোনায় নতুন আক্রান্ত হয়েছে ১২ জন। মৃত্যু হয়েছে ষাটোর্ধ্ব ১ জনের। এ নিয়ে সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৪ জনে। হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে সুস্থ হয়েছে নতুন ৯৩ জনসহ ১৫৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। গতকাল বিকালে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. হাবিবুর রহমান। জানা গেছে, ১৮ই জুন নমুনা সংগ্রহের পর ২৩শে জুন ১২ জনের পজেটিভ রিপোর্ট আসে। তারা হলেন; ইউএসপিও অফিসের ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল ইসলাম, সার্কেল এএসপি অফিসের একেএম লেয়াকত আলী, পৌর এলাকার চান্দিশকরা গ্রামের টিটু চক্রবর্তী, গাজী ইউসুফ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এদু মিয়া, নোয়াপাড়ার মো. রিপন, চৌদ্দগ্রাম বাজারস্থ ফাতেমা মঞ্জিলের হালেমা বেগম, চৌদ্দগ্রাম এলাকার ঝর্ণা বণিক, বাতিসা ইউনিয়নের দেবিপুরের ফয়েজ আহমেদ, জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের নোয়াগ্রামের শাফি, মুন্সিরহাট ইউনিয়নের সিংরাইশের বাচ্চু মিয়া ও আলকরা ইউনিয়নের বেলাল হোসাইন। এরমধ্যে দেবিপুরের ফয়েজ আহাম্মদ গত ২২ জুন সোমবার ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। এদিকে দিন দিন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সর্বত্র আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শাহরাস্তি (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ৪ জন ইউপি চেয়ারম্যান আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৩ জন চিকিৎসাধীন ১ একজন চেয়ারম্যানের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে গত সোমবার বিকালে চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিসের প্রেরিত রিপোর্টে নতুন করে ১ জন চেয়ারম্যানের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। অন্যদিকে এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে ৪০৯ জনের নমুনা পাঠানো হয়। তার মধ্যে প্রাপ্ত ২৬৮ জনের নমুনা রিপোর্টে ২০৪ জনের নেগেটিভ এবং ৬৪ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু এবং ৩ জন সুস্থ হয়েছেন। অন্য আক্রান্তরা হোম কোয়ারেন্টিনে এবং হোম আইসোলেশন চিকিৎসাধীন থাকার বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. প্রতিক সেন (ইউএইচএফপিও) নিশ্চিত করেন। আক্রান্ত চেয়ারম্যানদের পরিবার সূত্র জানায়, এই উপজেলায় বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের প্রকোপ দৃশ্যমান হতেই ওই ইউপিগুলোর চেয়ারম্যানরা জনগণের ত্রাণ ও জানের নিরাপত্তায় রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ওই যুদ্ধে লড়তে গিয়ে অদৃশ্য ভাইরাসটির সংক্রমণের দখলে চলে যান এ ৪ চেয়ারম্যান। প্রথম দফায় মঙ্গলবার ৯ই জুন মেহের দক্ষিণ ইউপির চেয়ারম্যান শফি আহমেদ মিন্টু (৬৫) কোভিড-১৯ শনাক্তের নমুনা দিয়েই রাতেই তার করোনা উপসর্গে মৃত্যু হয়। অবশ্য পরে তিনি করোনা পজেটিভ ছিলেন বলে শনাক্ত হয়। এভাবেই ৩ বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিন্টু করোনায় পরাস্ত হন। বুধবার ১০ই জুন মিন্টুর নামাজে জানাজায় বর্তমানে আক্রান্ত ৩ চেয়ারম্যান সমবেদনা জানাতে হাজির হন তার কফিনের পাশে। সেখান থেকে গিয়ে প্রথমে টামটা উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক দর্জি সোমবার ৮ই জুন অসুস্থতা বোধ করে কোভিড শনাক্তকরণে নমুনা দেন। গত শুক্রবার ১২ই জুন তিনি করোনা আক্রান্ত হন বলে নিশ্চিত হন। তিনি মুঠোফোনে জানান, শরীরে ব্যথা, কাশি, গলা ব্যথা নিয়ে সুস্থতার আশায় ১৪ দিন অতিক্রম করেছেন। এখন শনিবার ২০ই জুন দ্বিতীয় নমুনা দিয়ে রিপোর্টের অপেক্ষায় সকলের নিকট দোয়া প্রার্থী।
একইভাবে করোনা হানা দেয় টামটা দক্ষিণ ইউপি’র চেয়ারম্যান জহিরুল আলম মানিকের ঘরে। তিনি গত শনিবার ১৩ই জুন জ্বর অনুভব করে নমুনা দেন। পরে মঙ্গলবার ১৫ই জুন তার করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। তারপর প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্বজনরা দ্রুত ঢাকা স্থানান্তর করে। বর্তমানে তিনি তার ঢাকা ওয়ারি নিজ বাসায় হোম কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সকলের নিকট দোয়া প্রার্থনা করেছেন। অবশেষে দিনরাত ছুটে চলা রায়শ্রী উত্তর ইউপির চেয়ারম্যান সেলিম পাটোয়ারী লিটন। গত সোমবার ১৫ই জুন জ্বর অনুভব করে বৃহস্পতিবার ১৮ই জুন নমুনা দেন। অবশেষে সোমবার ২২শে জুন তার রিপোর্ট করোনা পজেটিভ আসে। তিনি বর্তমানে নিজ বাসায় শুষ্ক কাশি, গলা ব্যথা উপসর্গ নিয়ে হোম আইসোলেশন রয়েছে। এ ৪ মানবিক চেয়ারম্যান জনগণের জান-মালের নিরাপত্তায় যুদ্ধ করতে গিয়ে এখন নিজেরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেঁচে থাকার জীবন যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছেন বলে জানান। ওই যুদ্ধে তারা যেন উত্তীর্ণ হতে পারেন সেজন্য সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন। এদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (আব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি তাদের আশু রোগ মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে এ কোভিড যুদ্ধে উত্তীর্ণ হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণের হাতিয়ার ইউপি চেয়ারম্যানদের করোনা আক্রান্তের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরিন আক্তার সকলের খোঁজখবর রাখছেন বলে নিশ্চিত করেন।
নীলফামারীতে ৯ শনাক্ত
নীলফামারী প্রতিনিধি: ২৪ ঘণ্টায় আরো ৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হওয়ায় এ জেলায় ৩০৫ জনের দেহে সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গেল। তবে করোনা সংক্রমণ রোধের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি এ জেলাতে। ২২শে জুন পর্যন্ত এ জেলায় ৬ জন মারা গেলেও সুস্থ হয়েছেন ১৩৫ জন। তবে যে হারে লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে করে চরম অবনতির দিকেই এগুচ্ছে এ জেলার করোনা পরিস্থিতি। সিভিল সার্জন দপ্তর জানায়, ২২শে জুন পর্যন্ত এ জেলা থেকে ৩০৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হলেও ফল পাওয়া গেছে মাত্র ২৫২৫ জনের। নমুনা পরীক্ষা নিয়ে দীর্ঘ জটের কারণেও সংক্রমণ বাড়ছে নীলফামারীতে বলেও অনেকের ধারণা।
কালীগঞ্জে ৩ শনাক্ত
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় গতকাল নতুন করে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৮ জনে। যার মধ্যে মারা গেছে একজন ও সুস্থ হয়েছেন ১০ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুলতান আহমেদ। ডা. সুলতান আহমেদ আরো জানান, মঙ্গলবার নতুন করে উপজেলার ফয়লা, নিশ্চিন্তপুর ও বারবাজার ইউনিয়নের বাদেডেহী গ্রামের একজন করে মোট তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে আর বাকিদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া, ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, ঝিনাইদহে মঙ্গলবার নতুন ৪৭টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে। যার মধ্যে ৩টি নমুনার রিপোর্ট পজেটিভ বাকি ৪৪টি নেগেটিভ। নতুন আক্রান্ত সবাই কালীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। এনিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৩২ জনে। যার মধ্যে মারা গেছে দুইজন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪৫ জন।
ফরিদপুরে ৮৪ শনাক্ত
ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরে দিনদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত এক হাজার তিনশত ৬ জন। এদের মধ্যে পুলিশ, র্যাব, স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে। এদিকে দিনদিন আশঙ্কাজনক হারে করোনা বাড়ায় জেলার ভাঙ্গা উপজেলাকে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।
জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, ফরিদপুরে নতুন করে যে ৮৪ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে তাদের মধ্যে ফরিদপুর সদরে ৪০ জন, বোয়ালমারীতে ১৬ জন, সদরপুরে ৯ জন, ভাঙ্গা ও মধুখালীতে ৫ জন করে, আলফাডাঙ্গায় ৪ জন, নগরকান্দা ও চরভদ্রাসনে ২ জন করে এবং সালথায় ১ জন। নতুন শনাক্তদের মধ্যে ২৬ জন নারী ও ৫৮ জন পুরুষ। এদের মধ্যে ফরিদপুরে ১১ পুলিশ, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ একজন চিকিৎসক ও তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। নতুন শনাক্তের মধ্যে তিন মাসের একটি মেয়ে শিশুও রয়েছে।
মাগুরায় ৮ শনাক্ত
মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরায় গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত নতুন করে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত ৭২ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছে ৩৪ জন। মারা গেছে ২ জন। নতুন শনাক্ত হওয়া ৮ জনের মধ্যে মাগুরা পৌরসভার ৫ জন, মহম্মদপুরে ২ জন ও শালিখায় ১ জন। আক্রান্তদের হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মাগুরা সিভিল সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সাহা গতকাল দুপুরে জানান, জেলায় নতুন ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত হওয়া নতুন ৮ জন হলো সদরের পৌরসভার খান পাড়ায় ১ জন, জজ কোর্ট বাংলোর ২ জন, স্টেডিয়াম পাড়ায় ১ জন, পুলিশ লাইন পাড়ায় ১ জন, শালিখার গোপালগ্রামে ১ জন, মহম্মদপুর ভাটারা গ্রামের ১ জন, মহম্মদপুর দীঘায় ১ জন। এ পর্যন্ত মোট রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল ১ হাজার ৩২৭ জনের। প্রাপ্ত রিপোর্ট পাওয়া গেছে ১ হাজার ১৫৯ জনের। এখন পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭২ জন। জেলায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৩৪ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে আছেন ৩৪ জন।
তাড়াশে ২ শনাক্ত
তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নতুন করে দুইজন (কোভিড-১৯) করোনাভাইরাস পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। নতুন দুজনের মধ্যে একজন তাড়াশ পৌর শহরে ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও বারুহাস ইউনিয়নের বিনীতপুর গ্রামের বেল্লাল হোসেন (৪০) এবং দেশীগ্রাম ইউনিয়নের মাঝদক্ষিণা গ্রামের নরসিংদী ফেরত শ্রী জয় চন্দ্র রাজ (৩২)। নতুন করে এই দুজনসহ উপজেলা মোট ৯ জন করোনা পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন মিঞা শোভন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তাড়াশ হাসপাতালের করোনা বিষয়ক মুখপাত্র শাহাদত হোসেন, জানান, গত ১১ই জুন তাড়াশ হাসপাতাল থেকে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে সিরাজগঞ্জ মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চৌদ্দগ্রামে ১২ শনাক্ত
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে করোনায় নতুন আক্রান্ত হয়েছে ১২ জন। মৃত্যু হয়েছে ষাটোর্ধ্ব ১ জনের। এ নিয়ে সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৪ জনে। হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে সুস্থ হয়েছে নতুন ৯৩ জনসহ ১৫৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। গতকাল বিকালে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. হাবিবুর রহমান। জানা গেছে, ১৮ই জুন নমুনা সংগ্রহের পর ২৩শে জুন ১২ জনের পজেটিভ রিপোর্ট আসে। তারা হলেন; ইউএসপিও অফিসের ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল ইসলাম, সার্কেল এএসপি অফিসের একেএম লেয়াকত আলী, পৌর এলাকার চান্দিশকরা গ্রামের টিটু চক্রবর্তী, গাজী ইউসুফ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এদু মিয়া, নোয়াপাড়ার মো. রিপন, চৌদ্দগ্রাম বাজারস্থ ফাতেমা মঞ্জিলের হালেমা বেগম, চৌদ্দগ্রাম এলাকার ঝর্ণা বণিক, বাতিসা ইউনিয়নের দেবিপুরের ফয়েজ আহমেদ, জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের নোয়াগ্রামের শাফি, মুন্সিরহাট ইউনিয়নের সিংরাইশের বাচ্চু মিয়া ও আলকরা ইউনিয়নের বেলাল হোসাইন। এরমধ্যে দেবিপুরের ফয়েজ আহাম্মদ গত ২২ জুন সোমবার ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। এদিকে দিন দিন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সর্বত্র আতঙ্ক বিরাজ করছে।