এক্সক্লুসিভ
চান্দুরা-আখাউড়া সড়ক পুনঃনির্মাণ
ইট-সুরকি নিম্নমানের বালুতে মেশানো হচ্ছে মাটি
বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
১৭ জুন ২০২০, বুধবার, ৮:১৬ পূর্বাহ্ন
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে সিঙ্গারবিল বাজার পর্যন্ত চান্দুরা-আখাউড়া সড়ক পুনঃনির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, সড়কটি নির্মাণে নিম্নমানের ইট ও সুরকি ব্যবহার করা হচ্ছে। বালুর সঙ্গেও মেশানো হচ্ছে মাটি। এলজিইড্থির বিজয়নগর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২১.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ চান্দুরা-আখাউড়া সড়কটির চান্দুরা থেকে সিঙ্গারবিল বাজার পর্যন্ত ১৭.৫ কিমি অংশের ঢালাই কাজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলজিইডির কার্যালয় থেকে দুটি গুচ্ছে (গ্রুপ) করা হচ্ছে। এর মধ্যে চান্দুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে চম্পকনগর বাজার পর্যন্ত একটি ও চম্পকনগর বাজার থেকে সিঙ্গারবিল বাজার পযন্ত অপর গুচ্ছের কাজ করছে মৈত্রী বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুটি গুচ্ছের এই পুনঃনির্মাণ কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ২০.৯২ কোটি টাকা। সমপ্রতি সরজমিন দেখা গেছে, বিছানোর (ম্যাকাডাম) জন্য রাখা বেশির ভাগ খোয়া-ই খারাপ ইটের। আবার খোয়ার সঙ্গে মাটিও মেশানো রয়েছে। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন করলে ঠিকাদারের কাজ তদারককারী একজন বলেন, যা দেয়া হচ্ছে তা দেখতেই পাচ্ছেন। বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও একই এলাকার বাসিন্দা বাবুল আকতার বলেন, দেখার কেউ নেই, একেবারে নাম্বার ছাড়া ইট দিয়ে ঠিকাদারের লোকেরা কাজ করছে। এ বিষয়টি আমি ইউএনওকে জানিয়ে বলেছি, নিম্নমানের কাজ বন্ধ করতে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রতিদিন জেলা শহর থেকে যাতায়াতকালে এসব দেখলেও তিনি এ নিয়ে কোন আপত্তি করেন না। ফলে কাজও বন্ধ হচ্ছে না। জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, আখাউড়া ও হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহন এই সড়ক দিয়েই বিজয়নগর, আখাউড়া উপজেলা, আখাউড়া স্থলবন্দর ও জেলা সদরে যাতায়াত করে। এছাড়া সিলেট বিভাগের সবকটি জেলার মানুষ ও পাথরবাহী ট্রাক এই সড়ক দিয়ে আখাউড়া স্থলবন্দরে যাওয়া-আসা করে। আর বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে যাতায়াতের জন্য এটিই একমাত্র প্রধান সড়ক। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী স্ব্বপন সাহা বলেন, রাস্তার কাজ তদারকির দায়িত্বে এলজিইডির দায়িতপ্রাপ্ত কারো দেখা মিলছে না। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারাভাবে কাজটি সম্পাদনের পাঁয়তারা করছেন। কাজের ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না খোয়া ও বালুর অনুপাত। দরপত্রে ৭০ ভাগ খোয়া ও ৩০ ভাগ বালুর মিশ্রণ অনুপাত থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। তাছাড়া রাস্তার কার্পেটিং তুলে সেখানেই রোলার করে দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে ঠিকাদারের বক্তব্য জানতে তার নম্বরে একাধিক কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এলজিইডি’র বিজয়নগর উপজেলা প্রকৌশলী মো. জামাল উদ্দিন বলেন, এলাকার সাধারণ মানুষের প্রবণতাই হলো যেকোন কাজকে খারাপ বলা। উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানের অভিযোগের বিষয়টি জানার পর খোঁজ নিয়ে জানতে পারি নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এরপর নিজে উপস্থিত থেকে এসব খোয়া পরিবর্তন করিয়েছি।