শেষের পাতা

ডা. পলাশের অন্যরকম লড়াই

স্টাফ রিপোর্টার

৩০ মে ২০২০, শনিবার, ১২:০০ অপরাহ্ন

ডা. মো. নাজমুজ জামান পলাশ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার নিউরোলজি’র চিকিৎসক। ৩৩ বছর বয়সী এই চিকিৎসকের ক্লোন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইটা ২০১৯ সাল থেকে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজধানীর বনানীতে বসবাস করছেন। নিজের স্বাস্থ্য ঝুঁকি জেনেও  অনলাইন এবং অফলাইনে করোনার সময়টাতে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সমপ্রতি মানবজমিন-এর সঙ্গে কথা হয় তার। বিস্তারিত আলাপে ডা. নাজমুজ তার সেবা কার্যক্রম নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ক্লোন ক্যানসার ধরা পরার পর চিকিৎসকরা জানায় বাঁচার আশা খুব ক্ষীণ। ভারতে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানায় লাস্ট স্টেজে আছেন তিনি। আর দশটি সাধারণ মানুষের মত তার স্বাভাবিকভাবে স্টুল (মলত্যাগ) হয় না। পেটে ্তুঅল্টারনেট স্টুল পাসিং ব্যাগ্থ বসিয়ে দেয়া হয়েছে। যেটা একজন স্বাভাবিক মানুষ কল্পনা করতে পারেনা। এখন পর্যন্ত বারোটি কেমোথেরাপি দেয়া হয়েছে। বুকে একটি ঘড়ি সাদৃশ্য ডিভাইস স্থাপন করে দেয়া হয়েছে। যেটা হার্টের সঙ্গে সংযুক্ত। সেখানে কেমোথেরাপি দেয়া হয়। ফলে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মাথাব্যথা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। তারপরেও কিন্তু আমি বসে নেই। হাসপাতালে আউটডোরে নিয়মিত রোগী দেখা। কখনো ডিউটিতে অবহেলা করিনা। ডিউটির বাইরে কোনো ছুটিই আমি ওভাবে কাটাইনা। বন্ধুরা আমাকে নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন থাকে। প্রায়সই বলে অসু্‌স্থ শরীর নিয়ে ডিউটি করোনা। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে, চিকিৎসক হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব। যদিও আমার সহকর্মীরা আমাকে যথেষ্ট সাপোর্ট দেয়ার চেষ্টা করে। করোনা চলাকালীন সময়ে গত ৯ই এপ্রিল আমার অপারেশন হয়। এখন টেলি মেডিসিন পদ্ধতিতে রোগীদের সমস্যা শুনে পরামর্শ এবং ওষুধ দিয়ে থাকি। আমি মনে করি আমাকে দেখে অন্য ফ্রন্টলাইনার চিকিৎসকরা উৎসাহিত হোক। এই দু:সময়ে নিজের ভালো চিন্তা করে একজন চিকিৎসক হিসেবে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকাটা আমার কাছে এক ধরনের পাপবোধ মনে হয়। কেউ কেউ এখন রোগী দেখেন না। ফলে কখনো কখনো মনে হয় আমি তাদের উৎসাহের স্থল হতে পারি। করোনায় মৃতের সংখ্যা যত বাড়ে আমি তত হতাশ হই। কারণ আমি নিজ এলাকায় রোগী দেখতে যেতাম। মাগুরা। কিশোরগঞ্জ। এখন যদিও সেটা সাময়িকভাবে বন্ধ আছে। রোগীকে সেবা দেয়াই একজন চিকিৎসকের ধর্ম। গ্রামের বাড়ি মাগুরা। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। বড় ভাই কানাডা প্রবাসী। বাবা ইঞ্জিনিয়ার মো. নুরুজ্জামান একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। মা পারভীন সুলতানা গৃহিণী। স্ত্রী ফারিয়া খান আইনজীবী। একমাত্র ছেলে ৭ বছর বয়সী পারিজা স্কলাস্টিকা স্কুলে প্রথম শ্রেণীতে পড়ে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status