বাংলারজমিন
কয়রায় খোলা আকাশের নিচে গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা
কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
২৯ মে ২০২০, শুক্রবার, ৭:৩৩ পূর্বাহ্ন
কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের হায়াতখালী নদীর চরে অবস্থিত খড়িয়া মাঠবাড়ি গুচ্ছগ্রামের অধিকাংশ ঘর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে তছনছ হয়ে গেছে। জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় গুচ্ছগ্রামের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে সেখানে জোয়ারভাটা চলমান থাকায় গুচ্ছগ্রাম ছেড়ে অন্যত্রে চলে গিয়ে অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছে। বসবাসের উপযোগী হিসাবে গড়ে তোলার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে গুচ্ছগ্রামে বসবাসকারী অধিবাসীরা। শুধু মঠবাড়ি নয় আম্ফানের তা-বে কয়রার গোবরা ও শেওড়া আশ্রয়কেন্দ্র গুচ্ছগ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়রা উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে কয়রা উপজেলার মহারাজপুর, কয়রা সদর, উত্তর বেদকাশি ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ২১ টি পয়েন্টের পাউবো’র বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। আশ্রয়কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উঁচু জায়গায় বসবাস করছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা। আম্ফানের তান্ডবে কয়রা উপজেলায় ১ বছর পূর্বে নির্মিত আশ্রয়ণ ও গুচ্ছগ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই না পাওয়া মানুষগুলো গুচ্ছগ্রামে আশ্রয় পেলেও আম্ফানের আঘাতে তাদের সেই মাথা গোঁজার জায়গাটুকু তছনছ করে দেয়ায় অনেককেই দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলতে দেখা যাচ্ছে। খড়িয়া মাঠবাড়ি গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা ইপিকা মন্ডল ও মো. ফারুক হোসেন বলেন, আম্ফানের আঘাতে তাদের গুচ্ছগ্রামে জোয়ারভাটা অব্যাহত রয়েছে। ঝড়ের তান্ডবে অনেক ঘড়বাড়ি, পায়খানা বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া পানির আধার টিউবয়েলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। জোয়ারের সময় পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে ঘড়বাড়ি। সেখানে বসবাস করার মতো কোনো পরিবেশ নেই। রাস্তার উপর কিংবা স্কুল প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করতে হচ্ছে। অনেক পরিবারের লোকজন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে বলে তারা জানায়। গোবরা গুচ্ছগ্রামে বসবাসকারী শেখ কওছার বলেন, গুচ্ছগ্রামের মাল্টিপারপাস, টিউবয়েলসহ মাটির রিং বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাগালী ইউনিয়নের শেওড়া গুচ্ছগ্রামে পানি প্রবেশ করায় সেখানেও ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্যাহ আল মামুন লাভলু বলেন, প্রায় ১ বছর আগে নির্মিত সম্পুর্ণ কাজ শেষ করা খড়িয়া মাঠবাড়ি গুচ্ছগ্রামে ভুিমহীনরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছিল। ঘুর্ণিঝড়ের তান্ডবে তছনছ করে দেয়ায় সেখানে কেউ বসবাস করতে পারছেনা। অবিলম্বে এটি পুন:নির্মাণ করে মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তোলার দাবি জানিয়েছেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল কুমার সাহা বলেন, মাঠবাড়ি গুচ্ছগ্রামটি পুন:নির্মাণ করা না হলে সেখানে বসবাস করা সম্ভব নয়। কয়রার ৩টি গুচ্ছগ্রামের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।