বিশ্বজমিন

লিবিয়া নিয়ে মুখোমুখি রাশিয়া-তুরস্ক

মানবজমিন ডেস্ক

২৯ মে ২০২০, শুক্রবার, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন

লিবিয়ার পূর্বাাঞ্চলে যুদ্ধবাজ জেনারেল খলিফা হাফতারের সমর্থনে সেখানে যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে রাশিয়া। এতে ক্ষুব্ধ লিবিয়ার রাজধানীতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সরকার গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল একর্ড (জিএনএ)র সমর্থক তুরস্ক। রাশিয়ার এমন পদক্ষেপে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। এতে বলা হয়, মার্কিন সেনাবাহিনীর আফ্রিকা কমান্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকা কমান্ড তথ্য জানতে পেরেছে যে, মাঠ পর্যায়ে রাশিয়ার রাষ্ট্র মদতপুষ্ট প্রাইভেট মিলিটারি কন্ট্রাক্টরদের সমর্থনে লিবিয়ায় সামরিক যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে মস্কো। এসব যুদ্ধবিমানের ওপর রঙ করা হয়েছে। ফলে তা রাশিয়ার যুদ্ধবিমান তা চেনার উপায় নেই।
লিবিয়ায় রাশিয়ার উপস্থিতির বিষয়ে মস্কো অস্বীকৃতি জানালেও ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডের গবেষক সামুয়েল রামানি বলেন, রাশিয়ার মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান লিবিয়ায় মোতায়েনের নতুন এই খবরে তুরস্কের সঙ্গে তাদের উত্তেজনাকে বৃদ্ধি করবে। তার মতে, তুরস্কের সেনাবাহিনীর আক্রমণকে প্রতিহত করার উদ্দেশেই এসব যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থল ও বিমান বাহিনী। পুরোপুরি যুদ্ধের অবস্থায় আছে তারা। এ ছাড়া রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে আকাশপথে বড় ধরনের সংঘর্ষের মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে। বুধবার জাতিসংঘ বলেছে, তারা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লিবিয়া পরিস্থিতি অনুসরণ করছে। লিবিয়ায় যদি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা কোনোভাবে লঙ্ঘন হয় তাহলে কি ভয়াবহ পরিণতি ঘটতে পারে তা তুলে ধরে জাতিসংঘ।
উল্লেখ্য, সিরিয়ার বিদ্রোহী ও লিবিয়ার জিএনএ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে তুরস্ক। অন্যদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও লিবিয়ার জিএনএ বিরোধী শক্তি জেনারেল হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া। অর্থাৎ এই দুটি দেশ নিয়ে তুরস্ক ও রাশিয়ার অবস্থান পুরোপুরি বিপরীতমুখী। সম্প্রতি তাই প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও জেনারেল হাফতারের মধ্যে তাদের অভিন্ন শত্রু তুরস্কের বিরুদ্ধে কিছু সমঝোতা হয়। জেনারেল হাফতার সিদ্ধান্ত নেন আট বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া লিবিয়ার দূতাবাস নতুন করে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে খুলে দিতে। অন্যদিকে হাফতারের নিয়ন্ত্রণে থাকা বেনগাজি শহর ও দামেস্কের মধ্যে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে।
রামানি বলেছেন, রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদে এমন অবস্থানের ফলে সম্পর্কে কি দাঁড়াবে তা পরিষ্কার নয়। সম্প্রতি লিবিয়া থেকে ওয়াগনার গ্রুপকে সরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া। এর পরিবর্তে সেখানে মোতায়েন করেছে যুদ্ধবিমান। তুরস্কের অগ্রাভিযানের চেয়ে এটা বড় কিছু হবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে মস্কো কিন্তু কূটনৈতিক সমাধানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও লিবিয়ার হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের প্রধান আগুইলা সালেহ’র মধ্যে বৈঠক হয়েছে।
রামানি আরো বলেন, রাশিয়ার যুদ্ধবিমান মোতায়েনের জবাবে লিবিয়াতে যে বড় কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে তুরস্ক তেমনটা মনে হয় না। তবে রাশিয়া যদি আকাশপথে আক্রমণ জোরালে করে সেক্ষেত্রে অধিক সজাগ থাকতে হবে। এক্ষেত্রে রাশিয়ান এস-৪০০ ডিফেন্স সিস্টেম তার অবস্থানেই থাকবে। রাশিয়ার এই অবস্থা দুর্বল হবে যদি এতে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে এবং তাতে সুবিধা পাবে তুরস্ক। তবে বিষয়টি অদূর ভবিষ্যতে হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ, এখন বিশ^জুড়ে চলছে করোনা ভাইরাস মহামারি।
এপ্রিলে তুরস্ক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় করার কথা। এ জন্য ওয়াশিংটন থেকে তারা কঠোর অবরোধের মুখে পড়তে পারে। কিন্তু ওই প্রতিরোধ ব্যবস্থা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status