অনলাইন
দেশে প্রতি ৬ তরুণে একজনের বেশি কাজ হারিয়েছেন, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তরুণীরা
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৭ মে ২০২০, বুধবার, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন
ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) মনে করে, করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবে প্রতি ৬ জন তরুণের মধ্যে ১ জন কাজ হারিয়েছেন৷ আবার যাদের কাজ রয়েছে তাদের ২৩ শতাংশের কর্মঘণ্টা কমে এসেছে। শ্রমবাজারের ওপর করোনা ভাইরাসের (কভিড-১৯) মহামারির প্রভাব নিয়ে সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে তরুণ কর্মজীবীদের বিষয়ে উদ্বেগজনক এই চিত্র প্রকাশ করেছে আইএলও। চলতি বছর ফেব্রুয়ারির পর থেকে চালানো এক সমীক্ষার ভিত্তিতে তারা এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আইএলও জানিয়েছে, করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশের তরুণদের প্রতি ৬ জনে একজন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। আর যারা এখনো কাজ করছেন তাদের কর্মঘণ্টা ২৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আইএলও মনিটর বলছে, কভিড-১৯ অ্যান্ড দ্য ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক’ এর চতুর্থ সংস্করণের তথ্য অনুযায়ী, মহামারি দুনিয়ার তরুণদের প্রতি বৈষম্যমূলকভাবে আঘাত হানছে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব ধারাবাহিকভাবে ও দ্রুতগতিতে বাড়ছে, আর এক্ষেত্রে তরুণদের চেয়ে তরুণীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চলমান মহামারিতে তরুণরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তিনভাবে- একদিকে তারা কাজ হারাচ্ছেন অন্যদিকে তাদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ব্যাহত হচ্ছে। এটা আবার তাদের চাকরির বাজারে প্রবেশ ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বর্তমানে অন্য যে কোনো বয়সভিত্তিক গ্রুপের চেয়ে বেশি। দুনিয়াজুড়ে এখন প্রায় ২৭ কোটি তরুণ কর্মহীন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত। আইএলও’র মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেন, কভিড-১৯ জনিত অর্থনৈতিক সংকট অন্য যে কোনো বয়সের কর্মজীবীদের চেয়ে তরুণদের বিশেষত তরুণীদের কঠিনভাবে ও তীব্রগতিতে আঘাত হানছে। আমরা যদি তরুণদের অবস্থার উন্নতির জন্য কার্যকর ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করি তাহলে এ ভাইরাসের রেশ আরো অন্তত এক দশক বয়ে বেড়াতে হবে। বাংলাদেশে দায়িত্বরত আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর টুয়োমো পুটিয়ানা এ প্রসঙ্গে বলেন, মহামারি বাংলাদেশে ঝুঁকিতে থাকা তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য সত্যিকার বিপদ বয়ে এনেছে। চাকরির সুযোগ বিপুলহারে হ্রাস পেয়েছে। তরুণদের জন্য ইতিবাচক ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণে যথেষ্ট বিনিয়োগ প্রয়োজন। দুঃখজনকভাবে নিম্ন মজুরি ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে ভুগতে থাকা তরুণী কর্মীরাই মহামারিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আইএলও মনিটর জানায়, কভিড-১৯ অ্যান্ড দ্য ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক এর চতুর্থ সংস্করণ নিরাপদে কর্মক্ষেত্রগুলো চালু করার জন্য বিশদ ও অব্যাহতভাবে কভিড-১৯ পরীক্ষা ও কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের পরামর্শ দিয়েছে। যেসব দেশে শক্তিশালী টেস্টিং ও ট্রেসিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে সেসব দেশে কর্মঘণ্টা হ্রাস পাওয়ার ঘটনা ৫০ শতাংশ কমে গেছে। অন্যদিকে এই টেস্টিং ও ট্রেসিং ব্যবস্থা সাময়িক হলেও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে যেখানে তরুণদের কাজে লাগনো যায়। আইএলও মনিটর জানাচ্ছে, ২০২০ সালের প্রথম তিনমাসে দুনিয়াতে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মঘণ্টা হারিয়ে গেছে।