অনলাইন

আরব নিউজের প্রতিবেদন

ঈদে বেতন পায়নি ১০ হাজারের বেশি পোশাককর্মী

মানবজমিন ডেস্ক

২৭ মে ২০২০, বুধবার, ৬:২৬ পূর্বাহ্ন

ফাইল ছবি

রমজানের শেষের দিনগুলো বেতনের দাবিতে টানা বিক্ষোভ করে গেছেন দেশের হাজার হাজার পোশাককর্মী। কিন্তু তাও পরিবারের সঙ্গে ঈদুল ফিতর উদযাপনের জন্য বেতন পায়নি এমন ১০ হাজারের বেশি শ্রমিক। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) জানিয়েছে, ৬০টির বেশি পোশাক কারখানা ঈদের আগে তাদের কর্মীদের বেতন দেয়নি। অন্যদিকে, পশ্চিমা ক্রেতারা ৩১৫ কোটি ডলারের বেশি ক্রয়োদেশ (অর্ডার) বাতিল ও অর্থ পরিশোধ বন্ধ করায় গত দুই মাসে দেশজুড়ে বন্ধ হয়ে গেছে ৪৭৮টি কারখানা।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) মহামারি শুরুর পর থেকে দেশটির পোশাক শিল্পের উপর বড় ধরনের আঘাত নেমে এসেছে। বহু পশ্চিমা ক্রেতারা দেশের পোশাক কারখানাগুলোকে আগ থেকে করা অর্ডার দেয়া পণ্য উৎপাদনের জন্য বা ইতিমধ্যে তৈরি করা পণ্যের অর্থ পরিশোধ করেনি।

মার্চ মাসে বাংলাদেশ সরকার পোশাককর্মীদের বেতন ও বোনাসের জন্য ৬০ কোটি ডলার প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট আরশাদ জামাল দিপু বলেন, আমাদের বেশিরভাগ কারখানাই ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন ও বোনায় দিয়ে দিয়েছে। তবে, কিছু কারখানা তাদের সকল অর্ডার হারানোয় ও চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখে তেমনটা করতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, যেসব কারখানা তাদের শ্রমিকদের অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি, সেগুলোর সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ পাওয়ার আবেদন করার জন্য সরকারি নির্দেশনার আওতায় পড়েনি। এগুলো মূলত ছোট ও মধ্যম-আকারের কারখানা। এই কারখানাগুলো সাধারণত বড় কারখানাগুলোর সাবকনট্রাক্টর হিসেবে কাজ করতো।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, যেসব কারখানা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তাদের পণ্যের ৮০ শতাংশ রপ্তানি করতে পেরেছে কেবল সেগুলোকেই প্রণোদনা পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
দিপু জানান, অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতারা ‘সৃষ্টিকর্তার হস্তক্ষেপের’ কথা বলে বাংলাদেশি পোশাকজাত পণ্য সরবরাহকারীদের ডিসকাউন্ট হারে বা কম দামে পণ্য কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন। এসব কারণে দেশের পোশাক শিল্প সংকটের মুখে পড়েছে।

সম্মিলিত গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার জানান, ২০ হাজার পোশাক শ্রমিক ঈদের আগে বেতন পায়নি বলে তার সংগঠনের কাছে তথ্য রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা কারখানার মালিক ও বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে ঈদের ছুটির পর তাৎক্ষণিকভাবে বৈঠকে বসবো। আমাদের শ্রমিকরা সমাজের প্রান্তিক গোষ্ঠীর সদস্য। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বেতন পরিশোধ করা উচিৎ।

এদিকে, যেসব কারখানা তাদের শ্রমিকদের বেতন সময়মতো পরিশোধ করতে পারেনি তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথা চিন্তা করছে সরকার। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিচালক শিব নাথ রায় বলেন, ‘ঈদের ছুটি শুরুর আগেই শ্রমিকদের সকল প্রাপ্য পরিশোধ করার কথা ছিল কারখানা ব্যবস্থাপকদের।’  তিনি জানান, ঈদের ছুটি শেষে আদালতের কার্যক্রম চালু হলেই যেসব কারখানা শ্রমিকদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধ করেনি তাদের বিরুদ্ধে শ্রম আইনে মামলা করা হবে। একইসঙ্গে, শ্রমিকদের প্রাপ্য পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের লাইসেন্সও নবায়ন করা হবে না।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হচ্ছে পোশাক শিল্প। বিজিএমইএ অনুসারে, গত বছর এই শিল্প থেকে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। বর্তমানে দেশজুড়ে ৪ হাজারের বেশি পোশাক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় কাজ করেন ৪০ লাখের বেশি শ্রমিক।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status