কলকাতা কথকতা

কলকাতা  কথকতা         

পাভনিতের  বার্থডে কেক পোঁছালো তার শ্রাদ্ধের দিনে

জয়ন্ত চক্রবর্তী,  কলকাতা

২৫ মে ২০২০, সোমবার, ৪:২৯ পূর্বাহ্ন

প্রতিকি ছবি

 পাভনিত  সিং শেঠির  বার্থডে কেক তার বেহালার পর্ণশ্রীর  ফ্ল্যাটে পৌঁছাতে গিয়ে হকচকিয়ে গিয়েছিল ডেলিভারি বয়টি।  এ কোথায়  এলো সে!  সবাই সাদা পোশাক পরে ঘুরছে।  গম্ভীর উচ্চারণে গুরু গ্রন্থ পাঠ চলছে।  বার্থডে কেকটি  নিয়ে কুন্ঠিত ডেলিভারি বয় যখন ঠিকানা মেলাবার চেষ্টা করছে,  তখনই  চোখ ফ্রেমে বাঁধানো ছবিটির দিকে গেল।  ছবির গলায় সাদা মালা ঝুলছে।  এই ভদ্রলোকই না কদিন আগে তাদের কেক শপে গিয়ে নিজের বার্থডে কেকের অর্ডার দিয়ে বলেছিলেন,  শনিবার তাঁর জন্মদিন।  সেদিনই যেন কেকটি  ডেলিভারি দেওয়া হয়।  কেকশপ তার কথা রেখেছিল।  কিন্তু  জন্মদিন উদযাপন করার জন্যে  পাভনিত সিং  শেঠি ছিলেন না।  একত্রিশ বছরের পাভনিত দুরন্ত আম্ফানের বলি হয়ে তার আগেই চলে গেছেন অমৃতলোকে।                বেহালার   সাদার্নব্রিজ বহুতলের বাসিন্দা ছিলেন আর্মি কন্ট্রাক্টর  অমরজিৎ  সিং শেঠির ছেলে পাভনিত।  বাবার সঙ্গেই ব্যবসা করতেন।  আম্ফানের ঝোড়ো রাতে  বাবার জন্যে ব্লাডপ্রেসারের ওষুধ কিনতে গিয়ে আরও কজনের সঙ্গে উপেন ব্যানার্জি রোডে  ইলেক্ট্রিকিউটেড হয়ে মৃত্যু হয় পাভনিতের।  সারারাত জলেই পরে ছিল দেহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে।  ঝোড়ো রাতে  কেউ খোঁজ নিতে পারেনি।  পরদিন ভোরে পাভনিতের দেহের খোঁজ মেলে।  অমরজিৎ সিং শেঠীর একটাই প্রশ্ন,  ওইরকম  বিধংসী ঝড়ে সি ই এস সির  কি উচিত ছিলনা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া?  তাহলে বাবার প্রেসারের ওষুধ কিনতে যাওয়া ছেলের এভাবে মৃত্যু হতো না !              আম্ফানের শিকার একত্রিশ বছরের পাভনিত।  তার জন্মদিনে আর কেক কাটা  হলোনা।  কেউ গেয়ে উঠলো না -  হ্যাপি বার্থডে  টু ইউ...  পাভনিত যেখানে পৌঁছেছে আম্ফানের কল্যানে,  সেখানে এ গান পৌঁছাবে না।      
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status