বাংলারজমিন
আম্ফানে প্লাবিত শ্যামনগরের নিম্নাঞ্চল, পানিবন্দি হাজারও পরিবার
জাহিদ সুমন, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) থেকে
২২ মে ২০২০, শুক্রবার, ৯:১৩ পূর্বাহ্ন
বুধবার রাতে আম্ফান আঘাতের পর দু’দিন গড়িয়েছে। কিন্তু ছোট ছোট দুটি স্থান ছাড়া ভেঙে যাওয়া অধিকাংশ স্থানের বাঁধ মেরামত করা যায়নি। ফলে নদীর সাথে তাল মিলিয়ে রীতিমত জোয়ার ভাটার মধ্যে বসবাস করছে উপকূলীয় দুর্গত জনপদ সাতক্ষীরার শ্যামনগরের হাজারও পরিবার।
বাসস্থানের সংকটের কারনে সাইক্লোন শেল্টার আর রাস্তাসহ উঁচু জায়গাতে আশ্রয় নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছে নানা বয়সী মানুষ। সরকারি ত্রাণ সহায়তা ছাড়া অদ্যাবধি কোন সাহায্য সহযোগীতা না পেয়ে রোযার এ সময়ে চরম দুঃসময় পার করছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো। এ অবস্থার মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার আম্ফান এর আঘাতে লন্ডভন্ড উপকূলীয় জনপদ শ্যামনগরের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন এবং ক্ষতিগ্রস্থ কিছু পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা বিরতণ করেছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে শুক্রবার বেলা দুইটার দিকেও উপজেলার কলবাড়ী থেকে নীরডুমুর পর্যন্ত বিস্তৃত কার্পেটিংকৃত পাকা সংযোগ সড়কের উপর দিয়ে জোয়ারের পানি বইছে। আম্ফান এর পর যেসব পরিবার সাইক্লোন শেল্টার ছেড়ে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যায়, তারাও শুক্রবারের জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেতে আবারও সাইক্লোন শেল্টারে ফিরেছে। বুড়িগোয়ালীনি ফরেষ্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাইক্লোন শেল্টারের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া শাহিন মোল্যা জানায় ঝড় যত না ক্ষতি করেছে, তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি করেছে বানের লোনা পানি। তার অনুসরনকারী আমজাদ মোল্যা বলেন, ঝড় সাময়িক সময়ের জন্য মানুষকে আতংকিত করলেও জোয়ারের পানি গোটা এলাকার ধনী গরিব সবাইকে বাড়ি ঘর ছাড়া করে দিয়েছে।
দাতিনাখালী গ্রামের বাঘ বিধবা জহুরা বেগম ও মরিয়ম খাতুন জানান, আম্ফান এর পর বৃহস্পতিবার বাড়িতে ফিরলেও শুক্রবারের জোয়ারের সময় শোবার ঘরের খাটের উপর দাড়িয়ে রক্ষা পেয়েছেন। পরে ভাটার টানে পানি নামতে শুরু করলে অন্যরা এসে তাদেরকে ঘর থেকে বের করে আবারও সাইক্লোন শেল্টারে পৌছে দিয়েছেন। জোয়ার ভাটার মধ্যে বসবাসরত এসব পরিবারের সদস্যরা জানায় বসত ঘর পর্যন্ত পানিতে ডুবে থাকার কারনে তারা রান্না করতে পারছে না। রান্নার কোন উপকরণ অবশিষ্ট নেই। বানের পানিতে মৎস্য খামার আর কাঁকড়ার প্রজেক্ট ডুবে যাওয়ায় আয় রোজগারের পথ বন্ধ। বাধ্য হয়ে সরকারের দেয়া খিঁচুড়ি আর শুকনা খাবার খেয়ে দিন কাটালেও খাবার পানির অভাবে নিদারুন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
একইভাবে ভাঙন কবলিত দুর্গাবাটি এলাকায় পৌছে দেখা যায় পাশের খোলপেটুয়া নদীর সাথে তাল মিলিয়ে গোটা এলাকায় জোয়ার ভাটা বইছে। এলাকাটিতে মানুষের বসবাস কম হলেও সমগ্র এলাকার শতাধিক চিংড়ি ঘের রীতিমত একাকার হয়ে রয়েছে নদীর সাথে। এছাড়া এলাকা প্লাবিত হওয়ায় অনেকে গবাদী পশুর সাথে উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছে। বাড়িঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে জানিয়ে প্রভাষক পরীক্ষিত মন্ডল জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড শুক্রবার ৮০ জন শ্রমিক দেয়ার কথা বললেও মাত্র ২০ জন শ্রমিক নিযুক্ত করে। জেলা পরিষদ সদস্য ডালিম কুমার ঘরামী শতাধিক শ্রমিক নিয়ে কাজ করেও দুর্গাবাটির ভাঙন কবলিত অংশ বাঁধতে পারেনি। তিনি আরও জানান এভাবে টানা জোয়ার ভাটা চলতে থাকলে ক্রমেই ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি গোটা এলাকা মানুষ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। বিল্লাল হোসেন ও আব্দুল হালিমসহ অন্যরা জানান, সবার চারিদিকে ভাঙনের কারনে পুর্বে থেকে মারাত্বক ঝুঁকিপুর্ন দুর্গাবাটি এলাকার দিকে কারও মনোযোগ নেই। পাউবো'র পক্ষ থেকে আন্তরিকতা দেখানো হচ্ছে না জানিয়ে তারা বলেন খোলপেটুয়ার গ্রাসে ক্ষতবিক্ষত দুর্গাবাটির ভাঙন কবলিত অংশ এখনই আটকানো না গেলে ভয়াবহ ক্ষতি হয়ে যাবে।
কাশিমাড়ী থেকে রবিউল ইসলামসহ অন্যরা জানা, ইউনিয়নের ৬টি পয়েন্টের বাঁধ ভেঙে গেলেও মাত্র একটি পয়েন্টে বাধা গেছে। বাকি পাঁচটি পয়েন্টের বাঁধ বাধা না যাওয়ায় নদীর সাথে সমানতালে জোয়ার ভাটা বইতে থাকায় ঘোলা গ্রামের আব্দুল কাদের তরফদারসহ কয়েকজনের কাঁচা ঘর নুতন করে ধসে পড়েছে। স্থানীয় সাইক্লোন শেল্টারে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বৃদ্ধ আব্দুল কাদের তরফদারসহ কয়েকটি পরিবার কাশিমাড়ী ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে গাবুরা থেকে কবিরুল ইসলাম এবং ফিরোজ হোসেনসহ অন্যদের সাথে কথা বলে জানা যায় আম্ফান এর আঘাতে বুধবার রাতে মোট চারটি পয়েন্টের বাঁধ নদীতে বিলীন হয়। শুক্রবার পর্যন্ত স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মাত্র একটি ভাঙন বাধতে সমর্থ হলেও নেবুবুনিয়া, ৩ নং ও জেলেখালী এলাকার বাঁধের ভাঙন কবলিত অংশ দিয়ে অবিরাম জোয়ার ভাটায় পানি ওঠানামা করছে। ইতিমধ্যে জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেতে পার্শ্বেমারী, নাপিতখালী, টেকেরহাট, নেবুবুনিয়া, জেলেখালী, গাবুরাসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছে। পানি ওঠানামা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত বসত ভিটায় ফেরা যাবে না বলে জানায় বানের পানিতে বাড়িঘর হারানো আজিজুর রহমান, আব্দুল বারেক অনিশেষ মন্ডল আর শাহানারা বেগমদের মত শতাধিক মানুষ।
এদিকে বুধবার রাতে আম্ফান এর আঘাতে সর্বপ্রথম ভেঙে যাওয়া সুন্দরবনের ভিতরে একমাত্র লোকালয় গোলাখালীর নিরাশ্রয় পরিবারগুলোর মধ্যে কিছু ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে উপকূলবর্তী এলাকার ভেঙে যাওয়া অংশের বাঁধ মেরামত কাজ তদারকির জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অগ্রবর্তী একটি দল শ্যামনগরে পৌছেছে।
বাসস্থানের সংকটের কারনে সাইক্লোন শেল্টার আর রাস্তাসহ উঁচু জায়গাতে আশ্রয় নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছে নানা বয়সী মানুষ। সরকারি ত্রাণ সহায়তা ছাড়া অদ্যাবধি কোন সাহায্য সহযোগীতা না পেয়ে রোযার এ সময়ে চরম দুঃসময় পার করছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো। এ অবস্থার মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার আম্ফান এর আঘাতে লন্ডভন্ড উপকূলীয় জনপদ শ্যামনগরের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন এবং ক্ষতিগ্রস্থ কিছু পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা বিরতণ করেছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে শুক্রবার বেলা দুইটার দিকেও উপজেলার কলবাড়ী থেকে নীরডুমুর পর্যন্ত বিস্তৃত কার্পেটিংকৃত পাকা সংযোগ সড়কের উপর দিয়ে জোয়ারের পানি বইছে। আম্ফান এর পর যেসব পরিবার সাইক্লোন শেল্টার ছেড়ে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যায়, তারাও শুক্রবারের জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেতে আবারও সাইক্লোন শেল্টারে ফিরেছে। বুড়িগোয়ালীনি ফরেষ্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাইক্লোন শেল্টারের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া শাহিন মোল্যা জানায় ঝড় যত না ক্ষতি করেছে, তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি করেছে বানের লোনা পানি। তার অনুসরনকারী আমজাদ মোল্যা বলেন, ঝড় সাময়িক সময়ের জন্য মানুষকে আতংকিত করলেও জোয়ারের পানি গোটা এলাকার ধনী গরিব সবাইকে বাড়ি ঘর ছাড়া করে দিয়েছে।
দাতিনাখালী গ্রামের বাঘ বিধবা জহুরা বেগম ও মরিয়ম খাতুন জানান, আম্ফান এর পর বৃহস্পতিবার বাড়িতে ফিরলেও শুক্রবারের জোয়ারের সময় শোবার ঘরের খাটের উপর দাড়িয়ে রক্ষা পেয়েছেন। পরে ভাটার টানে পানি নামতে শুরু করলে অন্যরা এসে তাদেরকে ঘর থেকে বের করে আবারও সাইক্লোন শেল্টারে পৌছে দিয়েছেন। জোয়ার ভাটার মধ্যে বসবাসরত এসব পরিবারের সদস্যরা জানায় বসত ঘর পর্যন্ত পানিতে ডুবে থাকার কারনে তারা রান্না করতে পারছে না। রান্নার কোন উপকরণ অবশিষ্ট নেই। বানের পানিতে মৎস্য খামার আর কাঁকড়ার প্রজেক্ট ডুবে যাওয়ায় আয় রোজগারের পথ বন্ধ। বাধ্য হয়ে সরকারের দেয়া খিঁচুড়ি আর শুকনা খাবার খেয়ে দিন কাটালেও খাবার পানির অভাবে নিদারুন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
একইভাবে ভাঙন কবলিত দুর্গাবাটি এলাকায় পৌছে দেখা যায় পাশের খোলপেটুয়া নদীর সাথে তাল মিলিয়ে গোটা এলাকায় জোয়ার ভাটা বইছে। এলাকাটিতে মানুষের বসবাস কম হলেও সমগ্র এলাকার শতাধিক চিংড়ি ঘের রীতিমত একাকার হয়ে রয়েছে নদীর সাথে। এছাড়া এলাকা প্লাবিত হওয়ায় অনেকে গবাদী পশুর সাথে উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছে। বাড়িঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে জানিয়ে প্রভাষক পরীক্ষিত মন্ডল জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড শুক্রবার ৮০ জন শ্রমিক দেয়ার কথা বললেও মাত্র ২০ জন শ্রমিক নিযুক্ত করে। জেলা পরিষদ সদস্য ডালিম কুমার ঘরামী শতাধিক শ্রমিক নিয়ে কাজ করেও দুর্গাবাটির ভাঙন কবলিত অংশ বাঁধতে পারেনি। তিনি আরও জানান এভাবে টানা জোয়ার ভাটা চলতে থাকলে ক্রমেই ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি গোটা এলাকা মানুষ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। বিল্লাল হোসেন ও আব্দুল হালিমসহ অন্যরা জানান, সবার চারিদিকে ভাঙনের কারনে পুর্বে থেকে মারাত্বক ঝুঁকিপুর্ন দুর্গাবাটি এলাকার দিকে কারও মনোযোগ নেই। পাউবো'র পক্ষ থেকে আন্তরিকতা দেখানো হচ্ছে না জানিয়ে তারা বলেন খোলপেটুয়ার গ্রাসে ক্ষতবিক্ষত দুর্গাবাটির ভাঙন কবলিত অংশ এখনই আটকানো না গেলে ভয়াবহ ক্ষতি হয়ে যাবে।
কাশিমাড়ী থেকে রবিউল ইসলামসহ অন্যরা জানা, ইউনিয়নের ৬টি পয়েন্টের বাঁধ ভেঙে গেলেও মাত্র একটি পয়েন্টে বাধা গেছে। বাকি পাঁচটি পয়েন্টের বাঁধ বাধা না যাওয়ায় নদীর সাথে সমানতালে জোয়ার ভাটা বইতে থাকায় ঘোলা গ্রামের আব্দুল কাদের তরফদারসহ কয়েকজনের কাঁচা ঘর নুতন করে ধসে পড়েছে। স্থানীয় সাইক্লোন শেল্টারে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বৃদ্ধ আব্দুল কাদের তরফদারসহ কয়েকটি পরিবার কাশিমাড়ী ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে গাবুরা থেকে কবিরুল ইসলাম এবং ফিরোজ হোসেনসহ অন্যদের সাথে কথা বলে জানা যায় আম্ফান এর আঘাতে বুধবার রাতে মোট চারটি পয়েন্টের বাঁধ নদীতে বিলীন হয়। শুক্রবার পর্যন্ত স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মাত্র একটি ভাঙন বাধতে সমর্থ হলেও নেবুবুনিয়া, ৩ নং ও জেলেখালী এলাকার বাঁধের ভাঙন কবলিত অংশ দিয়ে অবিরাম জোয়ার ভাটায় পানি ওঠানামা করছে। ইতিমধ্যে জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেতে পার্শ্বেমারী, নাপিতখালী, টেকেরহাট, নেবুবুনিয়া, জেলেখালী, গাবুরাসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছে। পানি ওঠানামা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত বসত ভিটায় ফেরা যাবে না বলে জানায় বানের পানিতে বাড়িঘর হারানো আজিজুর রহমান, আব্দুল বারেক অনিশেষ মন্ডল আর শাহানারা বেগমদের মত শতাধিক মানুষ।
এদিকে বুধবার রাতে আম্ফান এর আঘাতে সর্বপ্রথম ভেঙে যাওয়া সুন্দরবনের ভিতরে একমাত্র লোকালয় গোলাখালীর নিরাশ্রয় পরিবারগুলোর মধ্যে কিছু ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে উপকূলবর্তী এলাকার ভেঙে যাওয়া অংশের বাঁধ মেরামত কাজ তদারকির জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অগ্রবর্তী একটি দল শ্যামনগরে পৌছেছে।