মত-মতান্তর
থমকে দাঁড়িয়েছে পৃথিবী
মু আ কুদ্দুস
১ মে ২০২০, শুক্রবার, ১২:০৮ অপরাহ্ন
জানালা দিয়ে দেখি,শহর মৃতপুরী। আমগাছে ঝুঁলে আছে আম, কেউ ঢিল ছুঁড়ে না। বৃষ্টি ঝড়ছে, বিদ্যুৎ চমকানো বিকট শব্দেও ভয় পাচ্ছে না পথের মানুষ। করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক এখন কারো মধ্যে নেই। যেন থমকে দাঁড়িয়েছে পৃথিবী।সবাই বলছে, ভালো থাকবেন নিজেকে নিয়ে ।কারন রোগ হলে কোথায় যাবেন? হাসপাতালে, পাবেন না।ড,সাদত হূসাইন সাহেব যেখানে উপেক্ষিত সেখানে সাধারণ মানুষের কী হবে, ভাবুন? বনানী কাঁচাবাজার মাঠে সাধারণ মানুষের একজন বললেন,ভাই টিভিতে দেখলাম কোন হাওড়ে কাটা হচ্ছে কাঁচা ধান? বললাম,ধান পেকে গেলে কাটতে তো হবেই। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে চলে গেলেন।আজ মাস পেড়িয়ে গেলো।চীনের করোনা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।দুই লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশিদের বহু ভাই বোন না ফেরার দেশে চলে গেছেন। একসঙ্গে কাজ করেছি, কথা বলেছি, বনভোজন,চা টেবিলে আডডা দিয়েছি সেই খোকনকে হারিয়েছি। স্বপন ভাইকে হারিয়েছি। মানবজমিন পত্রিকার দুই সহকর্মীকে হারিয়ে পরিচিত ফোনে বড়বেশী ভয় হয়। আরো কতো জনকে হারাতে হবে কেউই জানিনা। টিভির সামনে বসলে বোবা হয়ে যাই। মৃত যেন থামছেই না। কী হলে করোনা হয় , না জানার কারণে আরো ভয় হয়। স্বাধীনতার সময় লাশ দেখেছি, লাশ পড়েছে,শুনেছি। কিন্তু এমন ভাবে শ শ লাশের মিছিল দেখিনি। আতঙ্কে অনেক ফোন আর রিসিভ করি না। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরা করোনা পৃথিবীর বড়বড় শক্তিধর দেশগুলোকে চিবিয়ে খাচ্ছে। সেই ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের কাছে আমরা আজ অসহায়।এরপরো আমাদের দেশে চালচুরির ঘটনা ঘটে। রমজানে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। রাস্তায় বসে ভিখিরি কাঁদে।কারন, বাসার ভিতরে ঢুকতে পাড়েনা। কোনখানে পাবে সাহায্য,তাও জানেনা। প্রতিদিন নাতিকে নিয়ে খেলি।সেও বলে , করোনা ভাইরাসের কথা।হাত কীভাবে পরিষ্কার করতে হয়,তা দেখিয়ে দেয় সাবান হাতে। শ্বাস বদ্ধ সময় কতো কষ্টের কতো নিষ্ঠুর সবাইকেই বুঝিয়ে দিয়েছে।আজ মহাসংকটে আমরা। আমাদের দেশ। কাজেই সবাইকে সবভুলে এক হয়ে কাজ করা উচিৎ। সবশেষে বলছি, জানিনা ফুরাবে কবে এই পথ চলা।হে মহান সৃষ্টিকর্তা, তুমি আমাদের বাঁচা ও।