ভারত
অল্প উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ ঘিরে প্রবল বিতর্ক
পরিতোষ পাল, কলকাতা থেকে
২৯ এপ্রিল ২০২০, বুধবার, ২:৩৩ পূর্বাহ্ন
প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে। গত সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী প্রথম এই নির্দেশের কথা জানিয়েছিলেন। এরপরে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে মঙ্গলবার একই কথা জানিয়ে বাড়িতে করোনা রোগীর চিকিৎসা-নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশের পরে সাধারণ মানুশেষর মধ্যে যেমন তেমনি চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ মহলেও জোর তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে নির্দেশিকা জারি করেছে তাতে বলা হয়েছে, উপসর্গহীন এবং অল্প উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিরা চাইলে বাড়িতে থেকে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। তবে আক্রান্তের বাড়িতে প্রোটোকল মেনে আইসোলেশনে থাকার মতো জায়গা থাকতে হবে। এবং তিনি যে প্রোটোকলের অন্যথা করবেন না, তা হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। অবশ্য স্বাস্থ্য দপ্তদরের কর্মীরা সব সময় নজর রাখবেন এই সব রোগীর উপর। প্রযোজনে চিকিৎসকের পরামর্শও দেওয়া হবে। তবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে চিকিৎসকদের একাংশ বলেছেন, প্রাথমিক লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিরা বাড়িতে ‘আইসোলেশন’-এ থেকে যদি সুস্থ হয়ে যান, তা হলে হাসপাতালে চাপ পড়বে না। ফলে করোনা আক্রান্ত নয় এমন রোগীদের নিশ্চিন্তে চিকিৎসা করার জন্য বেড পাওয়া যাবে। চিকিৎসক-গবেষকদের একাংশ মনে করছেন, যে-মাত্রারই সংক্রমণ হোক না কেন, বাড়িতে কোয়রেন্টিন বা আইসোলেশন পদ্ধতির উপরে ভরসা করার কোনও সুযোগ নেই। কেননা, বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকাকালীন করোনা সংক্রান্ত নিয়মবিধি (মাস্ক পরা, হাত ধোয়া বা দূরত্ব বিধি) পালন করা অনেকটাই ব্যক্তির ‘ইচ্ছে-নির্ভর’ হয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে বা কোয়রেন্টিন কেন্দ্রে প্রশাসনিক নজরদারির মধ্যে থাকতে হয়। ফলে বাড়িতে থাকলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাই করছেন তারা। এক জনস্বাস্থ্র বিশেষজ্ঞ বলেচেন, বিদেশে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হলেও আমাদেও মত দেশের পরিস্থিতিতে এটা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। বরং এর ফলে মানুষের মধ্যে একধরণের উদাসীনতাই দেখা যাবে। তারা আর হাসপাতালের শরণাপন্ন হবেন না। এদিকে গোটা ভারতে করোনায় মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে সারা দেশে, যা এখনও পর্যন্ত রেকর্ড। এখনও পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৯৭ জন নতুন করে আক্রান্তও হয়েছেন। সব মিলিয়ে ভারতে এখন করোনা রোগীর সংখ্যা হয়েছে ৩১ হাজার ৩৩২ জন। সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। তার পরের দু’টি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে গুজরাত ও দিল্লি।