ভারত
অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য মমতার ‘স্নেহের পরশ’
কলকাতা প্রতিনিধি
১৯ এপ্রিল ২০২০, রবিবার, ১১:১২ পূর্বাহ্ন
পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বার বার শোনা গেছে মানবিক হওয়ার বার্তা। তিনি নিজেও মানবিক হিসেবে বিভিন্ন সময়ে আবির্ভূত হয়েছেন। লকডাউনের সময়ও মমতার মানবিকতার প্রমাণ পাওয়া গেল অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য। আকস্মিক লকডাউনের জন্য রাজ্যে রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকরা আটকে পড়ায় মুখ্যমন্ত্রীই প্রথম সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লিখে এসব অভিবাসী শ্রমিকের জন্য সেল্টার হোম ও খাদ্যের ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়েছিলেন। আসলে মমতা বুঝেছেন, দীর্ঘ লকডাউনে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা অভিবাসী শ্রমিকদের। বিভিন্ন রাজ্যে এরা আটকে পড়েছেন। পশ্চিমবঙ্গেও আটকে রয়েছেন একাধিক রাজ্যের শ্রমিক। তবে শ্রমিকদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হলেও এদের হাতে অর্থ না থাকায় ঘরে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন অনেকে। সরকার জানিয়েছে, কাউকেই বর্তমান অবস্থান থেকে আপাতত নড়তে দেয়া হবে না। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী অভিবাসী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ‘স্নেহের পরশ’ নিয়ে। মমতা জানিয়েছেন, অভিবাসী শ্রমিকদের এবার আর্থিক সাহায্য করবে রাজ্য সরকার। শুক্রবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন আর্থিক সহায়তার এই ‘স্নেহের পরশ’ প্রকল্পের কথা। মমতা জানিয়েছেন, আগামী সোমবার থেকে অনলাইনে অন্য রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে টাকা পৌঁছে যাবে। প্রত্যেকে পাবেন হাজার রুপি করে। কাজ হারিয়ে তারা যাতে অসহায় বোধ না করেন, লকডাউন ভেঙে বাড়ি ফেরার চেষ্টা না করেন, তার জন্য এই প্রচেষ্টা বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গে থাকা অন্য রাজ্যের অভিবাসী শ্রমিকদের জন্যও মমতা মানবিকতার নজির তৈরি করেছেন। বলা হয়েছে, কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অভিবাসী শ্রমিকরা বাড়ি ভাড়া দিতে না পারলে, জোর করা যাবে না। বাড়ি মালিকদের অন্তত একমাস অপেক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি, রাজ্যবাসীর মতো তাদেরও বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী পাওয়ার সুবিধায় অস্থায়ী রেশন কার্ডও দেয়া হয়েছে। এদিকে, চিকিৎসার জন্য মুম্বই, ভেলোর, দিল্লি, চেন্নাইয়ে যেসব পরিবার আটকে পড়েছে, তাদেরও আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়লেও নেয়া হবে একই ব্যবস্থা। যেমন ৩৪ জনের একটি তীর্থযাত্রীর দল নিয়ে বৃন্দাবনে আটকে পড়েছেন জানার পরেই রাজ্য সরকার তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী চাল, ডাল, তেল পৌঁছে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতের যে কোনও প্রান্তে রাজ্যের মানুষ বিপদে পড়লে রাজ্যের ১০৭০ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে যথাসাধ্য সাহায্য করবে রাজ্য সরকার।