বাংলারজমিন

রাজারহাটে ১০ টাকা কেজির চাল খাওয়ার অনুপযোগী

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

৮ এপ্রিল ২০২০, বুধবার, ৫:৫২ পূর্বাহ্ন

দেশব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসে কর্মহীন মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি মোতাবেক কুড়িগ্রামের রাজারহাটে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১০টাকা কেজি দরের পঁচা-দুর্গন্ধ ও পোকা ধরা নিম্নমানের খাওয়ার অনুপযোগী ও ওজনে কম থাকায় চাল সুবিধাভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা এসব পঁচা চাল ফেরত দিতে গেলে উল্টো অসদাচরণ করে পুলিশে দেয়ার হুমকী দেয় ডিলাররা। তবে কিছু কিছু ডিলার উপজেলা খাদ্য গুদামকেই দায়ী করেছেন।

বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ২৩জন ডিলারের মাধ্যমে ৭ই এপ্রিল মঙ্গলবার থেকে ১১হাজার ৮২৭জন কার্ডধারীদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হয়। উপকারভোগীরা এ চাল ১০টাকা কেজি দরে কিনতে এসে নানা রকমের হয়রানির শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সুবিধাভোগীদের সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ১০টাকা কেজি দরের চাল কিনতে ৩০ কেজির বস্তা সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু যাদের অর্থ সংকট তারা বস্তা কিনতে পারছে না। নিরুপায় হয়ে তাদের খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে। এছাড়া অতি কষ্টে উপার্জন করা ৩০০টাকা দিয়ে ৩০ কেজি চাল সংগ্রহ করে বাড়ী নিয়ে যাওয়ার পর বস্তা খুলে দীর্ঘদিনের পুরাতন, পঁচা-দুর্গন্ধ ও পোকা ধরা নষ্ট চাল দেখতে পায়। অভিযোগ পেয়ে এ প্রতিবেদক উপজেলার ঘড়িয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের চায়না বাজার, শরিষাবাড়ীহাট, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রতিগ্রাম বাজার, রাজারহাট বাজারের সোনালী ব্যাংক চত্বর, ছিনাই ইউনিয়নের চাঁন্দের বাজার স্পটে গিয়ে এ সত্যতা মেলে। এ সময় সুবিধাভোগীদের লাইনে-বেলাইনে চাল সংগ্রহ করতে দেখা যায়। অনেক স্থানে সামাজিক দুরত্ব বজায় থাকছে না। চাল সংগ্রহ করার পর উপকারভোগীরা চাল নিয়ে বাড়িতে গিয়ে নষ্ট চাল দেখে ফেরত নিয়ে আসলে ডিলাররা উল্টো পুলিশে দেয়ার হুমকী দিচ্ছে। নিরুপায় হয়ে অসহায় দুস্থ উপকারভোগীরা পঁচা নষ্ট চালই বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রতিগ্রাম বাজারের স্পটে মনশ্বর গ্রামের রাশেদুল ইসলাম নামের এক উপকারভোগী চাল উত্তোলন করার পর পঁচা দুর্গন্ধ যুক্ত ও পোকা ধরা খারাপ চাল পাওয়ায় সকাল ১১টা থেকে ডিলার মফিজুল ইসলামকে চাল ফেরত নিতে চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু ফেরত নেয়নি উল্টো পুলিশে দেয়ার হুমকী দিয়েছে। মন্দির গ্রামের বাবলু মিয়া সকাল সাড়ে ৯টায় চাল উত্তোলন করে পঁচা চাল পাওয়ায় দুপুর দেড়টা পর্যন্ত পাল্টানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এ প্রতিবেদকের কাছে প্রতারিত ভোক্তভোগীরা অভিযোগ করলে, ডিলারের সাথে কথা বলতে গেলে  উল্টো পাল্টা কথা বলে প্রেসক্লাব রাজারহাটের কোষাধ্যক্ষ মোঃ এনামুল হককে। এছাড়া ওই ডিলারের ভাড়াটিয়া লোক বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক নিজেকে দাবী করে মিলন (৩৫) প্রেস ক্লাব রাজারহাটের কোষাধ্যক্ষ মো. এনামুল হককে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করে।
এ সময় ট্যাগ অফিসার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ডিএফএ আঃ সামাদ উপস্থিত ছিলেন। ছিনাই ইউনিয়নের মেখলি গ্রামের রফিকুল নামের এক কার্ডধারী চাঁন্দের বাজারের স্পটে ডিলারের কাছ থেকে চাল নিয়ে খুলে পঁচা চাল পেলে ফেরত দিতে গেলে ডিলার প্রথম পর্যায়ে ফেরত নিতে চায়নি। পরে চাপাচাপির পর ফেরত নেন। কিন্তু ডিলার মোজাফ্ফর অভিযোগ করে বলেন, চাল তো উপজেলা খাদ্য গুদাম সরবরাহ করেছে, তারাই এ রকম বস্তা দিয়েছে। ফেরত না নিলে তখন আমার বড় ধরনের ক্ষতি হবে।  

খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) আব্দুল আউয়াল বলেন, পঁচা চাল যাওয়ার কথা নয়। তবে দু’চারটা চালের বস্তা গুদামের একেবারে নীচ থেকে চলে যেতে পারে। গেট পার হওয়ার পর আমার দায়িত্ব নেই।

উপজেলা খাদ্য কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহা. যোবায়ের হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status