বিশ্বজমিন
আমেরিকার মাস্ক ‘ডাকাতি’ নিয়ে ক্ষুব্ধ জার্মানি, কানাডা ও ফ্রান্স
মানবজমিন ডেস্ক
৫ এপ্রিল ২০২০, রবিবার, ৯:০৬ পূর্বাহ্ন
জার্মানিগামী হাজার হাজার মাস্ক জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘটনাকে ‘আধুনিক দস্যুতা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জার্মান কর্তৃপক্ষ। বার্লিনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আঁন্দ্রে গেইসেল বলেন, করোনা ভাইরাস চলাকালে ব্যবহৃত ২ লাখ মাস্কের একটি চালান ব্যাংককে আটক করেছে মার্কিন কর্মকর্তারা। ওই মাস্ক বার্লিন অঙ্গরাজ্যের পুলিশ সদস্যদের জন্য আগেই অর্ডার দেয়া হয়েছিল। এ খবর দিয়েছে ডয়েচে ভেলে।
জার্মান সংসদীয় দলের চেয়ারম্যান রলফ মুতজেনিখ বলেন, এই জব্দ করার ঘটনা অবৈধ। তিনি এ বিষয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছেন। তিনি ডয়েচে ভেলেকে বলেন, “সুরক্ষামূলক মুখবন্ধনীর ক্ষেত্রে অবৈধ পন্থার আশ্রয় নেয়া উচিত নয়। মিত্রদের মধ্যে এ কথা আরও বেশি খাটে। মাস্কের সরবরাহ কম হলেও!” তিনি বলেন, এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেলে কেন্দ্রীয় সরকারকে অবশ্যই এ নিয়ে কাজ করতে হবে।
অপরদিকে ক্ষুব্ধ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেইসেল আরও বলেন, ওই মাস্ক এক মার্কিন কোম্পানির কাছ থেকে কেনা হয়েছে। স্থানীয় একটি পত্রিকা জানিয়েছে, মাস্ক তৈরি হয়েছে চীনে। তিনি বলেন, “সংকটের সময়ও নৈরাজ্য দিয়ে পরিচালিত হওয়া উচিত নয়।” তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য জার্মান কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়া মার্কিন কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি স্থানীয় স্বাস্থ্য সরঞ্জাম উৎপাদনকারী কোম্পানি ৩এম’কে নির্দেশ দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রেই যতবেশি সম্ভব এন-৮৫ রেসপিরেটর সরবরাহ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ফরাসি রাজনীতিকরাও। তারা বলছেন, ফ্রান্সে সরবরাহের জন্য মাস্কসহ সুরক্ষামূলক সামগ্রী তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো যুক্তরাষ্ট্র কিনে নিয়ে যায়।
করোনা আক্রান্ত ফ্রান্সের এলে-দ্য অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট ভ্যালেরি পেক্রিস এ সপ্তাহে বলেছেন, ফ্রান্সে সরবরাহের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম শেষ মুহূর্তে এসে “চড়া দামে ছিনিয়ে নেয় আমেরিকানরা।”
তিনি বলেন, “আমেরিকানরা অঢেল টাকা ঢেলেছে। ফলে যারা এই সংকটকে পুঁজি করে অর্থ কামাতে চায়, তারা টাকার কাছে হার মেনেছে।”
এদিকে সম্প্রতি খোদ কানাডার প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, কানাডা যেসব চিকিৎসা সামগ্রী অর্ডার করেছিল, সেগুলোর অল্পই দেশে পৌঁছেছে। কারণ, কোনো ক্রেতা সেগুলো আরও চড়া দাম দিয়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমরা বুঝতে পারছি যে আমেরিকায় প্রয়োজন অনেক বেশি। কিন্তু কানাডায়ও তো এসবের প্রয়োজন। সুতরাং, আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”