অনলাইন

সুরক্ষা ছাড়াই ফুলডাউনে চলছে চট্টগ্রাম বন্দরের কাজ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে

২৯ মার্চ ২০২০, রবিবার, ২:৫০ পূর্বাহ্ন

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পুরো চট্টগ্রাম কার্যত লকডাউন। কিন্তু ফুলডাউনে কাজ চলছে চট্টগ্রাম বন্দরের বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে (অফডক) তৈরি পোশাক রপ্তানির কাজ। তাও কোনোরকম সুরক্ষা ছাড়াই।

শ্রমিকদের ভাষ্য, কাজ করার সময় বন্দরে করোনা থেকে শ্রমিকদের সুরক্ষায় কোনো ব্যবস্থা নেই। মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ছাড়াই কাজ করছেন তারা। কাজ করতে না চ্ইালেও জোর করা হচ্ছে। এমনকি রাস্তা থেকে শ্রমিক ধরে এনে কাজ করানো হচ্ছে।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন অফডক মালিক সংগঠন বাংলাদেশ ইংল্যান্ড কনটেইনার ডিপো এসোসিয়েশন (বিকডা) সভাপতি নুরুল কাইয়ুম খান। তিনি বলেন, করোনার জন্য সরকারি ছুটিতে আমরা শ্রমিক পাচ্ছি না কাজ করানোর জন্য। রাস্তা থেকে ধরে আনা শ্রমিক দিয়ে কাজ করাতে হচ্ছে।
অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও রপ্তানি কাজ সচল রেখেছি আমরা। কিন্তু এখানে অনেক শ্রমিক সচেতন নয়। তাই তারা মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করছেন না। যদিও আমরা এসব সুরক্ষামুলক সামগ্রী ব্যবহার করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।

আমদানি-রপ্তানির স্বার্থে করোনা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার টার্মিনাল ও নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালে পণ্য হ্যান্ডলিং কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে বলে জানান সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমীন।

তিনি বলেন, এ জন্য একটি বিশেষ মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ২ হাজারের বেশী শ্রমিকের চিকিৎসার জন্য ৩জন সার্বক্ষণিক চিকিৎসক নিয়োজিত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপত্তা সামগ্রী প্রদান, পুরো শরীর স্ক্যানার, জাহাজে উঠার জন্য সবাইকে পিপিই সরবরাহ, পর্যাপ্ত স্যানিটাইজার ও হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বন্দর পরিচালনা পরিষদের সদস্য মো. জাফর আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করেই বন্দরের কার্যক্রম মনিটরিং হচ্ছে। বন্দর পরিষদের সদস্য, পরিবহন, নৌ-বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে থাকছেন। যাতে জাহাজ আগমন ও পণ্য খালাসের মতো কার্যক্রম ব্যাহত না হয়। কারণ বাংলাদেশে সমুদ্রপথে পণ্যের ৯২ শতাংশ আমদানি-রপ্তানিই হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে।

তিনি বলেন, চীনে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসলেও বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত শুরু হয়েছে। বিষয়টিকে মাথায় রেখে বন্দরের প্রতিটি গেইটে হাত ধোয়ার জন্য সাবান ও পানি সরবারহ করা হয়েছে। শ্রমিক, গাড়ী চালক যারাই বন্দরের অভ্যন্তরে জেটিতে প্রবেশ করবে তাদেরকে বেশিক্ষণ সেখানে অবস্থান না করার অনুরোধ জানানো হয়।

তিনি আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় টানা ১০ দিনের ছুটি চলাকালীন চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালনা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা হয়। এতে শুধুমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, জরুরি চিকিৎসা ও সেবাসামগ্রী শুল্কায়ন করে খালাস হচ্ছে। রপ্তানি কার্যক্রমও সচল আছে। পাইলটিং সার্ভিস হিসেবে বন্দরের কাজ ২৪ ঘন্টা ৭ দিন নীতিতে চলছে। এতে কাস্টমসসহ সব সেবা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পর ১৬ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় চট্টগ্রাম বন্দর। এ সময় বহি:নোঙর ও জেটিতে বিদেশি জাহাজ ভিড়ায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। এরপর ২০ মার্চ শুক্রবার থেকে বহিনোঙ্গর ও জেটিতে বিদেশি জাহাজ ভিড়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status