শেষের পাতা

কোয়ারেন্টিন না মেনে বেশির ভাগ প্রবাসী নিখোঁজ

আল আমিন

২৫ মার্চ ২০২০, বুধবার, ৮:২৮ পূর্বাহ্ন

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশে গত ৮ই মার্চ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী ধরা পড়ে একজন ইতালি ফেরত প্রবাসীর কাছ থেকে তার দুই আত্মীয় আক্রান্ত হন। এরপর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। স্থাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গতকাল পর্যন্ত চার জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ জন। সারা বিশ্বে এই মহামারী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর প্রবাসীরা স্থল ও আকাশ পথে বাংলাদেশে আসতে থাকেন। তারা ছড়িয়ে পড়েছেন দেশের আনাচে-কানাছে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর শংঙ্কা, বিদেশ ফেরত আসাদের দ্বারাই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা বেশি। গত ১লা মার্চ থেকে ২৩শে মার্চ পর্যন্ত বিদেশ থেকে বাংলাদেশে প্রবাসী এসেছেন ২ লাখ ৯৯ হাজার ২০০ জন।

পাসপোর্টে অনেকের স্থায়ী ঠিকানা দেয়া থাকলেও অনেকেই স্থায়ী ঠিকানার বাড়িতে নেই। দেশে ফেরা এসব প্রবাসী কোথায় আছেন তা নিশ্চিত হতে হিমশিম খাচ্ছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ বিষয়ে র‌্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। বিদেশ থেকে আসা যদি কোন প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টিন না করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে কর্মকর্তারা জানান।  দেশ ও বৃহত্তর  জনগণের স্বার্থে তারা কঠোর ভূমিকা পালনের সঙ্গে সঙ্গে কোন ছাড় না দেয়ার মানসিকতা নিয়ে মাঠে কাজ করছেন।

এ বিষয়ে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার মানবজমিনকে জানান, করোনা ভাইরাসের বিষয়ে দেশের মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। সবাইকে মানবিক হতে হবে। যারা বিদেশ থেকে দেশে এসেছেন কিন্তু, হোম কোয়ারেন্টিন মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বিদেশ ফেরতদের হোম  কোয়ারেন্টিনে রাখা মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের জন্য এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ। দেশের বিভিন্নস্থানে জরিমানা করা হচ্ছে, তবুও অনেকেই হোম  কোয়ারেন্টিনের নিয়ম মানছেন না।  গত ১লা মার্চ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে আকাশপথে প্রায় ২ লাখ ৯৯ হাজার ২০০ জন দেশে এসেছেন। তাদের একটি অংশ করোনা আক্রান্ত বলে ধারণা করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সূত্রে জানা গেছে, বিদেশ থেকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এসেছেন ৩৩ হাজার ২০ জন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে এসেছেন চার হাজার ৫৬৯, রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় এসেছেন ৯৪৯, খুলনা সিটি করপোরেশনে দুই হাজার ৪১৩, বরিশাল  সিটি করপোরেশনে ১৩৩, সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় ৮৭০, ঢাকা জেলায় ১৪ হাজার ৩৮৯, চট্টগ্রাম জেলায় ২০ হাজার ১৮৪, চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই হাজার ২৭৬, রাজশাহী জেলায় দুই হাজার ৭৭৭, হবিগঞ্জে দুই হাজার ৮৬২, মুন্সীগঞ্জে ছয় হাজার ৫৭৭, বান্দরবানে ২১৯, নওগাঁয় দুই হাজার ২০৪, খুলনা জেলায় আট হাজার ৩২৬, নারায়ণগঞ্জে  পাঁচ হাজার ৯৬০, কক্সবাজারে দুই হাজার ৫৬৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই হাজার ২৭৬, বাগেরহাটে তিন হাজার ৭৮৬, নোয়াখালীতে ছয হাজার ৯৪৪, সিরাজগঞ্জে এক হাজার ৯৪৪, নড়াইলে দুই হাজার ৬০৫, ফরিদপুরে চার হাজার ৭৪১, ফেনীতে চার হাজার ৮৯৫, বগুড়ায় তিন হাজার ১২৯, ঝিনাইদহে চার হাজার ২১, রাজবাড়ীতে এক হাজার ৯৬৮, লক্ষ্মীপুরে তিন হাজার ৫৫৯, জয়পুরহাটে ৮৯১, কুষ্টিয়ায় তিন হাজার ১০৯, কুমিল্লায় ১৬ হাজার ৪০৭, সাতক্ষীরায় ১০ হাজার ২৬০, মানিকগঞ্জে দুই হাজার ৭১৯, রাঙামাটিতে ৩০০, নাটোরে এক হাজার ৫০৭ ও যশোরে ১৬ হাজার ৪৫০ জন প্রবাসী।
গাজীপুরে চার হাজার ৯৪১, খাগড়াছড়িতে ৩১৮, পাবনায় তিন হাজার ৩৪৭, মাগুরায় দুই হাজার ৫২৫, নরসিংদীতে চার হাজার ৬১৯, শরীয়তপুরে তিন হাজার ২১৯, রংপুরে এক হাজার ৫৭৩, চুয়াডাঙ্গায় দুই হাজার ৯৯, মাদারীপুরে তিন হাজার ৫৯৯, চাঁদপুরে পাঁচ হাজার ৯২০, গাইবান্ধায় এক হাজার ২৬, মেহেরপুরে এক হাজার ৩২৫, গোপালগঞ্জে চার হাজার ৩৩৯, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১২ হাজার ৮৫, কুড়িগ্রামে ৬২১, কিশোরগঞ্জে তিন হাজার ৪০, লালমনিরহাটে ৭৬৪, বরিশালে চার হাজার ২৬৬, টাঙ্গাইলে পাঁচ হাজার ৭৮৫, ও সিলেট জেলায় সাত হাজার ৩৪৯ জন।

নীলফামারীতে এক হাজার ২৫৯, পিরোজপুরে দুই হাজার ৩৩, ময়মনসিংহে তিন হাজার ৬২৭, মৌলভীবাজারে চার হাজার ১৮, দিনাজপুরে তিন হাজার ৮৮, ঝালকাঠিতে এক হাজার ১১৯, ঠাকুরগাঁওয়ে এক হাজার ৩৮৬,  নেত্রকোনায় এক হাজার ২৪, শেরপুরে ৫৪০, সুনামগঞ্জে দুই হাজার ৪৮০, পঞ্চগড়ে এক হাজার ৮৫, পটুয়াখালীতে এক হাজার ৩৩৪, ভোলায় এক হাজার ৫৮৭, জামালপুরে এক হাজার ৩৩৮ জন ও বরগুনায় ৯৩৭ জন প্রবাসী বিদেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। যারা দেশে এসেছেন সেই প্রবাসীরা  পাসপোর্ট করার সময় যে ঠিকানা ব্যবহার করেন, সেই ঠিকানা অনুযায়ী তাদের তালিকা সংশ্লিষ্ট জেলা বা মহানগরে পাঠিয়ে দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। কিন্তু বেশিরভাগকেই ঠিকানানুসারে পাওয়া যাচ্ছে না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status