দেশ বিদেশ

বাবুগঞ্জ ঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:০৯ পূর্বাহ্ন

 বরিশালের বাবুগঞ্জ খেয়াঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি। সরকারি মূল্য তালিকায় পারাপারের নির্ধারিত ভাড়া ৬ টাকা থাকলেও সেখানে নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা। অর্থাৎ অতিরিক্ত ১৪ টাকা ভাড়া নেয়া হয়। এছাড়া যাত্রীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত, দুর্ব্যবহারসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। সরজমিন দেখা গেছে, বাবুগঞ্জের সন্ধ্যানদী দিয়ে কেদারপুর ও আগরপুর ইউনিয়নের লোক পারাপার হয়। প্রতিদিন এই দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার লোক ঘাট ব্যবহার করে যাতায়াত করে। এদের মধ্যে রয়েছে বড় সংখ্যক একদল শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। বরিশালের ১১৭টি ফেরি, লঞ্চ ও খেয়াঘাটের মধ্যে অধিকাংশ ঘাট থেকে সরকার নির্ধারিত টোল আদায় করছে না ইজারাদাররা। তারা ইচ্ছামতো যাত্রীদের কাছ থেকে টোল আদায় করছে। যাত্রীরা মালামাল বহন করলে আরও বেশি টাকা দিতে হয় ঘাট ইজারাদারদের। এ অবস্থায় তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এসব ঘাট থেকে চলাচল করা কয়েক লাখ যাত্রী। বিআইডব্লিউটিএ’র ৯০টি লঞ্চ, ফেরি ও খেয়াঘাট রয়েছে। এর প্রতিটি ঘাট থেকে পৃথক পৃথক চার্জ নেয়ার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় প্রতিটি ঘাটেই এ নির্দেশনা অমান্য করে অর্থ আদায় করছে ইজারাদাররা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ যাত্রীরা। যাত্রীদের দাবি, ঘাটে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা জরুরি। বিআইডব্লিউটিসিরও চারটি ঘাট রয়েছে। সেগুলোতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। একইভাবে বরিশাল জেলা পরিষদের ২৩টি ঘাট রয়েছে। এছাড়া খেয়া পারাপারে আরও বেশি অনিয়ম রয়েছে। বাবুগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ট্রলারে পারাপার হওয়া ভুক্তভোগী এক যাত্রী বলেন, এটাতো শুরু থেকেই হচ্ছে। বছরে একবার ঘাট ডাক বা ইজারা নেয়া হয়। পারাপারের মূল্য সরকারিভাবে নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু তিন টাকার স্থানে পাঁচ টাকা নেয়া একটি বিষয়। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, ঘাটে সাধারণত দুটি ট্রলার থাকার কথা। সেখানে একটি ট্রলার দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বিশেষ ট্রলার ব্যবহার করে যাত্রী পারাপার করছে। এতে করে ঘাটে দিতে হয় ৫ টাকা। আবার বিশেষ ট্রলারে দিতে হয় ৫ টাকা। ফলে ৬ টাকা ভাড়ার পরিবর্তে গুণতে হচ্ছে ২০ টাকা। এই অনিয়মের বিষয়ে বলার কোনো স্থান নেই। বলার জায়গা পাচ্ছে না মানুষ। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে ঘাটের সব শ্রমিক একজোট হয়ে যাত্রীদের ওপর চড়াও হয়। তেড়ে আসে। এ বিষয়ে মাঝে মধ্যেই যাত্রীদের সঙ্গে ঘাটের শ্রমিকদের বাকবিতণ্ডা হয়। ওরা দলে অনেক ভারি। কেদারপুরের এক যাত্রী বলেন, এখন রক্ষকই যদি ভক্ষক হয় তাহলে কোথায় যাবো আমরা। যে দু-একজন প্রতিবাদ করে তারাও অপমানসহ নানা হেনস্থার শিকার হচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঘাট ইজারাদার মাইনুল হাসান পারভেজ বলেন, আমার বিষয়ে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমরা বরং ঘাটে শিক্ষার্থী, পুলিশ, আনসারদেরকে বিনা পয়সায় পারাপারের ব্যবস্থা করে থাকি। ঘাট আমার নামে ইজারা হলেও কোনো অভিযোগই সত্য না। আগামী ২৬ তারিখ ঘাট নতুন করে ইজারা ডাকা হবে। এখন ঘাটে কোনো যাত্রী যদি বেশি টাকা দিয়ে পারাপার হয় সেক্ষেত্রে আমার কি করার আছে। আমার ঘাটে মাত্র ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ইজারা নেয়া হয়েছে। সারা বাংলাদেশকে দেখেন। শুধু আমাকে দেখলে হবে না। এ বিষয়ে বরিশাল নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি একিন আলি সরদার মানবজমিনকে বলেন, নদী পারাপারের ক্ষেত্রে বেশি ভাড়া নেয়ার বিষয়ে এলাকার সাধারণ জনগণ যদি চায় তাহলে ঘাটের ইজারাদার তাদের বাধ্য করতে পারে না। এক্ষেত্রে ইজারাদারের বিরুদ্ধে জনগনের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই এটা হয়ত বন্ধ করা সম্ভব।
বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা নুশরাত জাহান খান বলেন, ঘাটের ব্যবস্থাপনা করা হয় বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে। তারপরেও যদি এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসে তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status