বিশ্বজমিন

করোনা: ইতালিতে ডজনখানেক শহর অবরুদ্ধ, অনুমোদন ছাড়া প্রবেশ-বের হওয়া নিষিদ্ধ

মানবজমিন ডেস্ক

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রবিবার, ৯:৪৭ পূর্বাহ্ন

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দু’জন মারা যাওয়ার পর উত্তরাঞ্চলীয় দুটি এলাকা লোম্বারডি এবং ভেনেতোর ডজনখানেক শহরকে অবরুদ্ধ বা লকডাউন করে দিয়েছে ইতালি। আরোপ করা হয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। এর অধীনে বিশেষ অনুমতি ছাড়া বাইরে থেকে কেউ ওই এলাকায় প্রবেশ করতে বা ওই এলাকা থেকে বাইরে বের হতে পারবেন না। ওই দুটি এলাকায় বসবাস প্রায় ৫০ হাজার মানুষের। সেখানকার সব স্কুল বন্ধ ও স্পোর্টস বিষয়ক কর্মকা- স্থগিত করা হয়েছে। আজ রোববার সেখানে সেরি আ ফুটবলের বেশ কিছু ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। তা স্থগিত করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

ইউরোপে সবচেয়ে বেশি করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে ইতালিতে। এর প্রাদুর্ভাব রোধে ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা নিয়েছে ইতালি। করোনা ভাইরাসে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৯ নিশ্চিত হওয়ার পর শনিবার দিনের শেষে জরুরি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী গুসেপে কন্টে। তিনি বলেছেন, ওই দুটি এলাকায় বিশেষ অনুমতি ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে বা সেখান থেকে কেউ বাইরে বের হতে পারবেন না। এই নির্দেশ যাতে জনগণ মানতে বাধ্য হয় সে জন্য পুলিশ মোতায়েন করবে প্রশাসন। প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীও নামানো হতে পারে।

ইতালি কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে লোম্বারডি ও ভেনেতোতে করোনা ভাইরাস ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই একে নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়ছে। লোম্বারডি এলাকার স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা গুলিও গ্যালেরা বলেছেন, এই ভাইরাসে সংক্রমণের ধারা অত্যন্ত শক্তিশালী। নতুন এই ভাইরাস ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে ছড়িয়েছে। এখন তা বিশ্বের ২৬টি দেশে। এসব দেশে কমপক্ষে ১৪০০ মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১১ জন।

ওদিকে চীনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তারা বলেছেন, সেখানে এই ভাইরাসে মৃত্যুর হার কমেছে। একই সঙ্গে শনিবার কমেছে নতুন আক্রান্তের হারও। চীনে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ হাজার ৩৯২ জন। মারা গেছেন ২৩৪৮ জন। কিন্তু চীনের বাইরে কিভাবে এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে অথবা চীনের সঙ্গে এর যোগসূত্র আছে কিনা, অথবা অন্য কোনো ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কিনা, এসব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ সংস্থার প্রধান ড. টেডরোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস বলেছেন, এখন সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো দুর্বল স্বাস্থ্য সেবার দেশগুলোকে নিয়ে, বিশেষ করে আফ্রিকাকে নিয়ে।

চীনের পরেই সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়াতে। জাপানের উপকূলে নোঙর করা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের যাত্রীদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৬০০ মানুষ। ওদিকে ওই জাহাজের ৩২ জন বৃটিশ ও অন্য ইউরোপীয়ান যাত্রীরা ফেরার পর তাদেরকে উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়াতে মারা গেছেন চতুর্থ একজন। এতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৫৫০। আগের দিনের চেয়ে যা কমপক্ষে ১০০ বেশি। বেশির ভাগ আক্রান্তের সঙ্গে যোগসূত্র আছে একটি হাসপাতাল ও ধর্মীয় একটি গ্রুপের।

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে যাওয়া ইসরাইলি নন এমন ২০০ যাত্রীকে একটি বিমান থেকে নামার অনুমতি দেয় নি ইসরাইল কর্তৃপক্ষ। ওই যাত্রীদের ফেরত পাঠানো হয়েছে সিউলে। ওই বিমানে থাকা ১২ জন ইসরাইলিকে রাখা হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে। ইরানে মারা গেছেন আরও একজন। এ নিয়ে সেখানে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫। সেখানে ১৪টি প্রদেশে স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় ও সাংস্কৃতিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status