শেষের পাতা

নাঈমে শেষ বিকালে স্বস্তি

ইশতিয়াক পারভেজ

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রবিবার, ৯:৩১ পূর্বাহ্ন

শেষ বিকালে পানি পানের বিরতি। দিনের আর ১৪ ওভার বাকি। জিম্বাবুয়ের স্কোর বোর্ডে ১৯০ রান ৪ উইকেট হারিয়ে। ক্রিজে সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে দলীয় অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরিটাও তুলে নিলেন। টাইগারদের কপালে ভাঁজ। কিন্তু নাঈম হাসান আরভিনকে আউট করে শেষ বিকালে বাংলাদেশকে এনে দিলেন স্বস্তি। প্রথন দিন শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ২২৮/৬। ফলে ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে মানসিকভাবে কিছুটা এগিয়ে থেকে আজ মাঠে নামবে মুমিনুল হক সৌরভের দল। ক্রিজে থাকা জিম্বাবুয়ের শেষ ৪ ব্যাটসম্যানকে যত দ্রুত ফেরানো যায় ততই মঙ্গল বাংলাদেশের জন্য।
দলীয় ৭ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়ে তুলে আরভিনের জিম্বাবুয়ে। অধিনায়ক নিজেই দেয়াল হয়ে দাঁড়ান টাইগার বোলারদের সামনে। পুরোদিনই পরীক্ষা নিয়েছেন রাহীদের। সেই সঙ্গে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরিও মিলেছে তার। তবে দৃঢ়তা নিয়ে বল হাতে লড়াই চালিয়ে যান তরুণ স্পিনার নাঈম হাসান। দিন শেষে তার ঝুলিতে জমা পড়েছে ৪ উইকেট, ৬৮ রান খরচায়। সংবাদ সম্মেলনে এসে নাঈম জানান, এক জায়গায় ধৈর্য ধরে বল করেই সফল হয়েছেন তিনি। তবে টাইগারদের দিনের আক্ষেপের নাম মিস ফিল্ডিং। কয়েকটি ক্যাচ ছেড়ে জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যানদের জীবন না দিলে দিন শেষে আরো ভালো অবস্থানে থাকতো স্বাগতিকরা।  
শেষ ৬ টেস্টে হার। সেখানে আবার পাঁচটিতেই ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়। টেস্টে গেল বছরটা এক কথায় যাচ্ছেতাই ছিল বাংলাদেশের। এ বছরের শুরুতেও ভাগ্য বদলায়নি। দ্বিতীয় দফায় পাকিস্তান সফরে সিরিজের প্রথম টেস্টে লজ্জার হার নিয়ে দেশে ফেরে টাইগাররা। অভিজাত ফরম্যাটে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার অবস্থা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কঠিন লড়াইয়ে পথই হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ দল। তাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দেশের মাটিতে একমাত্র টেস্টে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার মিশনে নেমেছেন মুমিনুলরা। গতকাল সকালে সেই মিশনের শুরুটা টস হেরে। ব্যাট করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রথম ৭ ওভারে দারুণ ধৈর্যের পরিচয় দেয় জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার। মাটি কামড়ে পড়ে থাকা উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী। নাঈমের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরের পথ দেখান ২ রান করা কেভিন কাসুজাকে। ক্রিজে এসে আরেক ওপেনার প্রিন্স মাসভরের সঙ্গী হন অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত প্রথম সেশনটা নিজেদের করে নেয় সফরকারীরা। ৩০ ওভারে ৮০/১ তোলে লাঞ্চে যায় জিম্বাবুয়ে।
দ্বিতীয় সেশনে সেই প্রতিরোধ ভেঙ্গে দলকে স্বস্তি এনে দেন অফস্পিনার নাঈম হাসান। ওপেনার প্রিন্স মাসভরেকে ৬৪ রানে দেখান সাজঘরের পথ। এই সাফল্য আসতে পারতো আরো আগেই। যদি তার বলে হাত না ফসকাতো তিনটি ক্যাচ। নাঈম নিজেও একটি রিটার্ন ক্যাচ ছাড়েন। শেষ পর্যন্ত তার রিটার্ন ক্যাচেই শেষ হয় মাসভরের অধ্যায়। ভাঙে আরভিনের সঙ্গে তার ১১১ রানের জুটিটাও। নাঈমের পরের ওভারেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে স্টাম্পে বল টেনে বোল্ড হন ব্রেন্ডন টেইলর (১০)।
কিন্তু ক্রিজে অবিচল সফরকারী দলের অধিনায়ক আরভিন ব্যাট হাতে দারুণ কিছু করে দেখানোর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন বোধ হয়। তাকে সঙ্গ দিতে এসে আত্মবিশ্বাসী সিকান্দার রাজাও নাঈমের শিকার। ৬২ বল খেলেন ১৮ ধৈর্যশীল ইনিংস। এরপর লড়াই করেন শুধু অধিনায়ক আরভিন। ২২৭ বল করে ১০৭ রান করেন তিনি। শেষ বেলায় তাকে সঙ্গ দিতে এসে জায়েদের দ্বিতীয় শিকার হন মারুমা। দিনের অন্তিম মুহূর্তে আরভিন যখন নাঈমের বলে বোল্ড হন, জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ তখন ২২৬ রান। ক্রিজে ৯ রানে অপরাজিত আছেন চাকাভা। এই চাকাভার বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি আছে। দ্বিতীয় দিন তাকে দ্রুত না ফেরালে সকালে বাংলাদেশকে ভোগাতে পারেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।
টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল সারাদিনে ব্যবহার করেছেন ৪ বোলারকে। এর মধ্যে সফল নাঈম ও রাহী। তবে পেসার ইবাদত হোসেন ১৭ ওভার বল করে বেশ কৃপন ছিলেন। ৮ মেডেন দিয়ে খরচ করেন মাত্র ২৬ রান। তবে অভিজ্ঞ স্পিনার তাইজুল ২১ ওভারে দিয়েছেন সর্বোচ্চ ৭৫ রান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status