দেশ বিদেশ

শীতকালীন সবজির দাম আকাশছোঁয়া

শাকিল আহমেদ

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শনিবার, ৮:৪৭ পূর্বাহ্ন

শীত শেষ হতেই চরা রাজধানীর কাঁচা বাজার। খুচরা বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যসামগ্রী ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বাজার দরের লাগামহীন এই ঊর্ধ্বগতিতে ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। রাজধানীর কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে শীতকালিন সবজির দাম আকাশ ছোঁয়া। প্রতিটি পন্যের দামই নাগালের বাইরে। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, এক কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, কড়লা ১৬০ টাকা, ভেন্ডি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। ঝিংগা ও দুন্দল ১০০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা। বরবটি ১২০ টাকা, লেবুর হালি ৫০ টাকা, একপিচ লাউ ৮০ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শষা,গাজর টমেটু ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৫০ টাকা, শালগম ৪০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, বাধাকপি ৩০ টাকা, মুলার কেজি ৪০ টাকা।   পেঁপে ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি আটি লালশাক ৩০, পুঁইশাক ২৫, লাল শাক ১০, পালং শাক ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে হাতিরপুল কাচাবাজারের এক সবজি ব্যবসায়ি মানবজমিনকে বলেন, শীত শেষ, তাই সবজির আমদানি কম থাকায় শীতকালিন সবজি বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকারি বাজারে প্রতিটি সবজির দাম অনেক বেশি। এদিকে, মৌসুম শুরু হলেও এখনো দেশি পিয়াজের কেজি ১২০-১৩০ টাকা। মিশর থেকে আমদানিকৃত পিয়াজের কেজি ৯০ টাকা, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চীনা পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় চায়না পিয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে। দেশি নিম্নমানের পিয়াজের কেজিও এখনো ১০০ টাকার ওপরে।  দেশের আমদানিকৃত রসুন ও আদার সিংহভাগ আসে চীন থেকে। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ৫২ হাজার ৪৬১ টন রসুন আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে ৯৬ শতাংশই এসেছে চীন থেকে। একই সময়ে আদা আমদানি হয়েছে মোট ৬৯ হাজার ৪৮১ টন, যার ৪১ শতাংশ এসেছে চীন থেকে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বর্তমানে দেশটি থেকে রসুন ও আদা আমদানি কমে গেছে। এতে বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে। বাজারে বড় রসুন ২০০ টাকা ও  ছোট রসুন ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা। আদা ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেল পাইকারিতে আবারো বেড়েছে মণপ্রতি ২০০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি, রুপচাঁদা কেজি প্রতি বেড়েছে ৮ টাকা, আগে ১০৫ টাকা বিক্রি হলেও এখন ১১৪ টাকা কেজি। এক মাস পার হতেই ফের বেড়েছে আটার দাম। যদিও বিশ্ববাজারে পণ্যটির দাম নিম্নমূখী। সরকারি হিসেবেই সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। আটার দাম বাড়ানোর বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারওয়ান বাজারের এক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, ‘মিল মালিকরা দাম বাড়ানোয় আমরা পাইকারিতে সামান্য দাম বাড়িয়েছি। খুচরায় গিয়ে তা ২-৩ টাকা বেড়ে যাচ্ছে।

মাছ ও মাংসের দাম আগের মতই চড়া: প্রতিকেজি ছোটা আকারের রুই, কাতল ও মৃগেল বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ ও বড় আকারের রুই, কাতল, মৃগেল বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা, পাঙ্গাস আগের দামেই ১৪০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত এক মাস ধরে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, খাশি ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।  বয়লার মুরগি গত সপ্তাহয় বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা এ সপ্তাহে পাঁচ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে, সোনালী মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা।

দামবৃদ্ধির বিষয়ে হাতিরপুল কাঁচা বাজারের এক মাংস ব্যবসায়ী বলেন, চলতি মাসের দুই তারিখ থেকে মাংসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এ মৌসুমে ,পিকনিক, বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকায় মাংসের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। খামারিরা অন্যদিকে খাশি সাপ্লাই করছে। চাহিদা তুলনায় কম পাওয়ায় আমাদের বেশি দাম দিয়ে কিনতে এবং বিক্রি করতে হচ্ছে।
পান্থপথের  বাসিন্দা নুরে আলম সাহেদ বলেন,  নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যে দাম তাতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের খুবই কষ্ট। সরকার দাম নিয়ন্ত্রণ করবে এমন হাজারো প্রতিশ্রুতি শুনেছি। কিন্তু বাস্তবে দাম কেবল বেড়েই চলছে। এতে আমাদের মত নিম্নবিত্তের অবস্থা নাজেহাল।
 
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status