শেষের পাতা

আঞ্চলিক যোগাযোগে ‘সম্ভাবনা’ দেখছে নেপাল

ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে টাস্কফোর্স

কূটনৈতিক রিপোর্টার

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৯:০৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বাণিজ্য ও কানেকটিভিটি বাড়াতে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রায় ২০ বছরের মধ্যে এই প্রথম পূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সফরে ঢাকায় আসা নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ কুমার গাওয়ালির সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় গতকালের সকালে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের বাণিজ্য বাড়াতে চাই। দ্বিপক্ষীয় ওই বাণিজ্য সীমিত পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। কীভাবে বাণিজ্য ও কানেকটিভিটি বাড়ানো যায় তা নিয়ে পরবর্তী আলোচনা এবং বাস্তব সুপারিশের জন্য দুই দেশের প্রতিনিধিদের একটি টাস্কফোর্স কাজ করবে।

এদিকে বিকালে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ট্র্যাটেজিট স্টাডিজ (বিস) আয়োজিত বাংলাদেশ নেপাল রিলেশন্স: পারসপেক্টিভ অব সাব-রিজিওনাল কো-অপারেশন শীর্ষক অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনারের বক্তৃতায় আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক সংযোগ ও সহযোগিতার নানা দিক নিয়ে কথা বলেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে তিনি উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ-কানেক্টিভিটির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে অভিন্ন স্বার্থে সেটি দ্রুত এবং পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানোর তাগিদ দেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি। তিনিও আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধির বিভিন্ন উপায় নিয়ে কথা বলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, হিমালয় কন্যা খ্যাত নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দুদির ঢাকায় বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করেছেন। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়েও তার কথা হয়েছে। সব খানেই তিনি উপ-আঞ্চলিক সম্ভাবনাকে এক্সপ্লোর করার বার্তা বা তাগিদ দিয়েছেন। বাংলাদেশ-ভারত, নেপাল এবং ভূটানকে নিয়ে গঠিত চতুর্দেশীয় যোগাযোগ উদ্যোগ বিবিআইএন বাস্তবায়নে জোর দিয়েছেন। যদিও ওই উদ্যোগের ভূটানের অংশ নিয়ে মাঝপথে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কাঠমাণ্ডু এতদিন ভিন্ন চিন্তা করলেও এখনও ঢাকা ও দিল্লির চাওয়া মতে থিম্পুর পরবর্তী অন্তর্ভূতির সূযোগ রেখেই উদ্যোগটি এগিয়ে নিতে রাজী হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বিবিআইএন ছাড়াও বিমস্‌টেককে এগিয়ে নেয়া এবং সার্ককে কার্যকর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠক সূত্র বলছে, মন্ত্রী পর্যায়ের ওই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক পর্যালোচনা,  ট্রানজিট, কানেক্টিভিটিসহ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো, বিদ্যুৎ এবং জ্বালানী ক্ষেত্রে সহযোগিতা, পানি সম্পদের ব্যবহার, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা, পর্যটন, মানুষে মানুষে যোগাযোগ, মানব সম্পদের উন্নয়ন এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তুৃত আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া বৈশ্বিক পরিমন্ডলে বিশেষত জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা-সংগঠনে বাংলাদেশ ও নেপাল পরস্পরের প্রতি সহযোগিতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এজেন্ডার অনেক বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অগ্রগতির কথা জানানো হয়। নেপালের মন্ত্রী বলেন,  ভারতের জিএমআর কোম্পানি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করছে।

সেখান থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ। কবে নাগাদ আমদানি শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি জিএমআর কোম্পানির ওপর নির্ভর করছে। তবে আগামী ৫-৬ বছরের মধ্যে তা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। বৈঠকে দুটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে আরও আলোচনা হবে। আমরা অগ্রাধিকার বাণিজ্যিক চুক্তি (পিটিএ), বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি (ইপিএ) সই করতে চাই। নেপালের মন্ত্রী বা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ নিয়ে আর কথা বাড়াননি। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনের আনুষ্ঠানিক আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদ্বয় ছাড়াও দুই দেশের রাষ্ট্রদূত এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status