প্রথম পাতা

ই-পাসপোর্ট, ২০,০০০ আবেদন ২৭ দিনে

আল-আমিন

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পাসপোর্ট আবেদন ও বিতরণ সেবাকে আরো দ্রুতগামী করার জন্য ইতিমধ্যে চালু হয়েছে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) সেবা। মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের জায়গায় ই-পাসপোর্টের আবেদন করছেন অনেকে। পাসপোর্ট আবেদনকারীদের মধ্যে সাড়াও পড়েছে ব্যাপক। উদ্বোধনের পর গত ২৭ দিনে ঢাকায় অনলাইনে প্রায় ২০ হাজার আবেদন পড়েছে। তবে ই-পাসপোর্ট পেতে ভোগান্তির    শিকার হচ্ছেন আবেদনকারীরা।

আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা ও ছবি তোলার জন্য লম্বা লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। আবেদন যাচাইয়ের বারকোড রিডার মেশিন ঠিকমতো রিড করতে পারছে না। আবেদনকারীর ছবি, ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের মণির ছবি নিতে সময় লাগছে বেশী। অনেক জনের ঠিকানা মিলছে না। একারণে সময় লাগছে। অনেকেই একস্থান থেকে অন্যস্থানে আবেদন করার কারণে ঠিকানা চিহ্নিত করার সমস্যায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ। কেউ কেউ ই-পাসপোর্টের বিষয়টি বুঝতে না পেরে সংশ্লিষ্ট অফিসে খোঁজ নিতে আসছেন। তারাও লাইন দাঁড়াচ্ছেন। এতে ই-পাসপোর্ট পেতে ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন সাধারণ আবেদনকারীরা। কর্তৃপক্ষ বলছেন, ইতিমধ্যে দ্রুত প্রিন্টের জন্য মেশিন কেনার জন্য টেন্ডার দেয়া হয়েছে। এছাড়াও জনবলও বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। প্রিন্ট মেশিন কেনা হলে ও জনবল বাড়ালে এই সংকট দ্রুত সমাধান হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ পিএসসি গতকাল মানবজমিনকে জানান, আবেদনকারীর ছবি, আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের মণির ছবি নিতে বেশি সময় লাগছে। কারও কারও চোখের মনি ও আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না। এতে বেশী সময় লাগছে।
তিনি আরও জানান, উদ্বোধনের পর এখন পর্যন্ত ঢাকা শহরে প্রায় ২০ হাজার আবেদন পড়েছে। ওই আবেদনগুলো আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ডেলিভারি দিবো বলে আশা করছি।
সরজমিনে গতকাল আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, ই-পাসপোর্টের জন্য আলাদা বিভাগ খোলা হয়েছে। সেখানে দেখা গেলো লম্বা লাইন। সব কিছুই করতে হচ্ছে অনলাইনে। অনলাইনে আবেদন করার পর কারও পাসপোর্ট যদি প্রস্তুত হয়ে যায় তাহলে ফিরতি বার্তা দিয়ে তা আবেদনকারীকে জানিয়ে দেয়া হয়।  

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একাধিক ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ মিলার কারণে তাদের আঙ্গুলের ছাপ বার বার নেয়া হচ্ছে। এছাড়াও যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র অনেক আগে হয়েছে তাদের অনেকের ছবি স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে না।
লাইনে দাঁড়ানো মিরপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, আমার পাসপোর্টের মেয়াদ ৫ বছরের ছিলো। ওই মেয়াদ শেষ হয়েছে। তিনি আরও জানান, আমার মেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় স্ব-পরিবারে থাকে। তাকে দেখার জন্য সেখানে যেতে হবে। এক স্বজনের মুখে শুনলাম যে, কোন ঝুট ঝামেলা ছাড়াই ই-পাসপোর্টের আবেদন করলে দ্রুত পাসপোর্ট পাওয়া যাবে। কিন্তু, এখানে এসে রিড মেশিন কাজ না করার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ৩ ঘণ্টায় কোন কাজ হয়নি।

ঢাবির শিক্ষার্থী উম্মে আরা কুলসুম জানান, আমার বাবার চিকিৎসার জন্য পাশের দেশ ভারতে যেতে হবে। দ্রুত পাসপোর্ট পাবার আশায় ই-পাসপোর্টের আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু, অফিসে এসে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। আমার চোখের মণি মিলছিলনা বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও ভেতরে লোকজন কম হওয়ার কারণে দ্রুত কাজ করতে পারছেন না।
দারুস সালাম থেকে আসা মোক্তার হোসেন জানান, গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি আমি অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন করি। জমা ও ছবি তোলার তারিখ দেয়া হয় ১৭ই ফেব্রুয়ারি। পরে কর্তৃপক্ষ আমাকে জানায়, তার স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণের জন্য তাকে স্থানীয় পৌরসভার সনদ লাগবে। সেই সনদ তিনি নিয়ে এসেছেন।

তিনি আরও জানান, সনদ তিনি অফিসে জমা দিয়েছেন। কিন্তু, বারকোড রিডার মেশিন ঠিকানাটি এডিট করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। তারা জানালেন, ২১ দিন পর আবারও ওই ঠিকানা সংশোধন করতে পারবেন। বারকোড মেশিনে সমস্যা রয়েছে বলে জানিয়েছেন।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ই-পাসপোর্টের নতুন প্রযুক্তিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা তেমন নেই পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। একারণে তাদের বেশী সময় লাগছে। এছাড়াও তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status