এক্সক্লুসিভ

করোনা: বাংলাদেশের কাঁকড়া চাষিরা তীব্র আর্থিক ক্ষতির মুখে

মানবজমিন ডেস্ক

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:৩৪ পূর্বাহ্ন

করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের কাঁকড়া চাষিরা প্রচণ্ড আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এসব কাঁকড়া রপ্তানি করা হয় চীনে। চীনাদের ডাইনিং টেবিলে প্রিয় ডিস হয় কাঁকড়া দিয়ে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে সেই কাঁকড়া রপ্তানি আপাতত স্থগিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের চাষিদের হাজার হাজার টন কাঁকড়া পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫ লাখ গরিব কৃষক। চীনে যে পরিমাণ কাঁকড়া রপ্তানি হয় তার মধ্যে শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ যায় বাংলাদেশ থেকে। চীনে এই বাজার তিন কোটি ডলারের। কিন্তু কাঁকড়া রপ্তানি আপাতত বন্ধ থাকায় তারা এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় সংকটে ভুগছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। কাঁকড়া চাষের সঙ্গে জড়িত কৃষকরা বলেছেন, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে কাঁকড়া রপ্তানি স্থগিত করা হয়। তারপর থেকে কাঁকড়ার একটি শিপমেন্টও যায়নি চীনে। অথচ বছরে এ সময়টাতে সেখানে থাকে কাঁকড়ার সাধারণত বড় ব্যবসার সময়। কারণ, চন্দ্র নববর্ষে সেখানে উৎসব থাকে। আর এ উৎসবে বেশির ভাগ পরিবারই বিলাসী খাবারের আয়োজন করে। তাতে অন্যতম উপাদান কাঁকড়া। এই সময়টাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের কাঁকড়া চাষিদের অনেকে ব্যাংক থেকে এবং দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উচ্চ হারে ঋণ নিয়েছেন। তা ব্যবহার করেছেন চাষের কাজে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় 
শহর পাইকগাছার একজন কাঁকড়া চাষি বিদ্যুৎ ঘোষ। তিনি বলেছেন, আমার উৎপাদনের শতকরা ৭০ ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে।  যেসব কাঁকড়া ভালো আছে সামনের দিনগুলোতে সেগুলোর যদি কোনো ব্যবস্থা না হয়, তাহলে তারা মারা যাবে। কাঁকড়াদের জীবিত ধরা হয়। উপযুক্ত পরিবেশে তারা ১০ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
কাঁকড়া ব্যবসায়ী রণজিৎ মণ্ডলের বাড়ি বাগেরহাটে। সেখানে গত বছর প্রায় ৭ কোটি ২০ লাখ কাঁকড়া বা ১২ হাজার টন কাঁকড়া উৎপাদিত হয়েছিল। রণজিৎ মণ্ডল বলেন, এ বছর কাঁকড়ার দাম এবার হয়তো দ্বিগুণ বা তিনগুণ। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে আমার ১২ টন জীবন্ত কাঁকড়া নষ্ট হয়ে গেছে। এর মূল্য কমপক্ষে ৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। এ কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন রণজিৎ মণ্ডল। বলেন, এই কাজ করতে গিয়ে তিনি ঋণ নিয়েছেন। তার ভাষায়, জানি না কীভাবে আমি এই ঋণ শোধ করবো। হয়তো আমাকে জেলেই কাটাতে হবে।
এ অঞ্চলের চাষের জমি ফসল ফলানোর অনুপযোগী হয়ে পড়েছে লবণাক্ততার জন্য। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এসব জমিতে ধান চাষ আর সম্ভব নয়। তাই রণজিৎ মণ্ডলের মতো হাজার হাজার কৃষক কাঁকড়া চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। রণজিৎ মণ্ডল বলেন, চীনের এই নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে পড়বে এবং তারা দারিদ্র্যে নিপতিত হবেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status