বিশ্বজমিন

আইসিস বধু শামীমা এখন...

মানবজমিন ডেস্ক

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, সোমবার, ১২:৩৭ অপরাহ্ন

বৃটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার পর অনেকটাই পাল্টে গেছে আইসিস বধু হিসেবে পরিচিত শামীমা বেগম! প্রথমবারের মতো সে আইসিসের প্রচলিত কালো বোরকা ত্যাগ করেছে। সিরিয়ার আল রোজ শরণার্থী ক্যাম্পে বোরকার বাইরে এসে প্রথমবারের মতো ছবি তুলেছে। এবার ভ্যালেন্টাইনস ডে বা বিশ্ব ভালবাসা দিবসে নিজের আশ্রয় বা মেক-শিফটকে সাজিয়েছিল ভালবাসার রঙে। পরেছে জিন্সের প্যান্ট। পায়ে উঠেছে ওয়েস্টার্ন জুতা। মাথায় লাল হেড স্কার্ফ। আর নাক চকচক করছে। তার ওপর আরো জ্বল জ্বল করছে ডায়মন্ডের নাকফুল। শামীমাকে নিয়ে সচিত্র একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল। তাতেই এসব কথা বলা হয়েছে।

আরো বলা হয়েছে, এভাবে মাথায় লাল হেডস্কার্ফ, পরনে জিন্স আর ডায়মন্ডের নাকফুল পরে শামীমাকে দেখা যেতে পারতো ইংল্যান্ডের লিভিং রুমে। কিন্তু সে নিজেই সব শেষ করে দিয়েছে। যোগ দিয়েছে আইসিসে। তারপরের কাহিনী সবারই জানা। ১৫ বছর বয়সে সে স্কুল পালিয়ে যোগ দিয়েছিল আইসিসে। এখন তার বয়স ২০ বছর। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আল রোজ শরণার্থী শিবিরে এখন বসবাস করে মার্কিন বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক কিম্বারলি পলম্যানের সঙ্গে। নতুন করে তারা তাদের আশ্রয়শিবিরের তাঁবুকে সাজিয়েছে। ভালবাসা দিবসে নতুন করে ভালবাসার রঙে সাজিয়েছে তা। এদিন তারা ভালবাসার চিহ্ন হার্টস দিয়ে সাজায় তাঁবু। আর ভিতরে যোগ করে রূপকথার মতো করে লাইটিং। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো প্রথমবারের মতো তারা কালো বোরকার বাইরে এসেছে। এই শরণার্থী ক্যাম্পে এই কালো বোরকা নিষিদ্ধ। কারণ, নারী ও শিশুদের উগ্রবাদ থেকে বের করে আনার জন্য এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

কিম্বারলিকে নিয়ে শামীমা যে তাঁবুতে থাকে সেখানে আছে হিটিং, ইলেকট্রিসিটি, স্যাটেলাইট টিভি এবং রান্নার জিনিসপত্র। জাতিসংঘ তাদেরকে কম্বল দিয়েছে। সেই কম্বল ব্যবহার করে তারা তাঁবুতে বানিয়েছে একটি ছোট্ট সোফা। বৃটেনের পতাকা ব্যবহার করে বানানো একটি কুশন রয়েছে শামীমা বেগমের। এটি তাকে বানিয়ে দিয়েছে তাঁবুতে তার সঙ্গে থাকা কিম্বারলি। তাঁবুতে আছে ভালবাসা নিয়ে লেখা কবিতা। তাতে ঝুলছে উৎসাহমুলক উদ্ধৃতি।

ডেইলি মেইল আরো লিখেছে, ৫ বছর আগে ১৫ বছর বয়সে অন্য দুই স্কুলছাত্রী খাদিজা সুলতানা ও আমিরা আব্বাসকে সঙ্গে নিয়ে শামীমা বেগম পাড়ি জমায় সিরিয়ার উদ্দেশে। সেখানে গিয়ে যোগ দেয় আইসিসে। সিরিয়া পৌঁছার মাত্র ১০ দিন পরেই শামীমা বিয়ে করে ডাচ নাগরিক ইয়াগো রিডিজককে। তখন ইয়াগোর বয়স ছিল ২৩ বছর। এর আগে ইয়াগো ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। তাকে আটকে রাখা হয়েছে কুর্দিদের একটি বন্দিশিবিরে। গত বছর শরণার্থী শিবিরে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয় শামীমা। আগের দুটি সন্তানের মতো এই সন্তানটিও মারা যায়। ওই সময়ের আগেই সে বৃটেনে ফেরার আবেদন জানায়। কিন্তু সরকার তার সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে। তারই ধারাবাহিকতায় এ মাসে আরো একটি বড় আঘাত আসে ২০ বছর বয়সী শামীমার জন্য। সে নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে। সেই আপিলের প্রথম দফায় হেরে যান শামীমা।

যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেল এবিসি নিউজকে সে বলেছে, গত বছর যখন তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হলো তখন পুরো পৃথিবী তার কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেছে। আদালত রুলে বলেছে, শামীমার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া যেতে পারে। কারণ, এতে তিনি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়বে না। এ অবস্থায় তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চাওয়ার কথা বলা হয়। কারণ, তিনি বাংলাদেশী পিতামাতার সন্তান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status