বিশ্বজমিন

নির্মাণ শ্রমিক থেকে ষাঁড়দৌড় প্রতিযোগী: তুলনা হচ্ছে বোল্টের সঙ্গে

মানবজমিন ডেস্ক

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রবিবার, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন

দক্ষিণ ভারতের এক নির্মাণ শ্রমিকের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে অলিম্পিকে স্বর্ণজয়ী ও বিশ্বরেকর্ডধারী দৌড়বিদ উসাইন বোল্টের সঙ্গে। শ্রীনিবাস গাওড়া নামে ওই ব্যক্তি কর্ণাটক রাজ্যের কাম্বালায় ষাঁড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। ধান ক্ষেতে ষাঁড়ের সঙ্গে দৌড় দিতে হয় প্রতিযোগিকে। শ্রীনিবাস মাত্র ১৩.৪২ সেকেন্ডে ১৪২ মিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছিলেন। অপরদিকে উসাইন বোল্ট ৯.৫৮ সেকেন্ডে ১০০ মিটার পাড়ি দিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে বলা হয়, শ্রীনিবাসকে নিয়ে ভারতে হইচই পড়ে গেছে। তবে কাম্বালার সরকারি সংস্থার তরফ থেকে তাকে বোল্টের সঙ্গে তুলনা করার ব্যাপারে সতর্কতা উচ্চারণ করা হয়েছে। কাম্বলা একাডেমির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক কে গুনাপালা কাদাম্বা বলেন, ‘আমরা এই ধরণের তুলনা আমলে নিতে চাই না। অলিম্পিকে অনেক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও উন্নততর ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সময় পরিমাপ করা হয়।’ বেশ কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকায় শ্রীনিবাসের সঙ্গে বোল্টের জামাইকার বিশ্বরেকর্ডের তুলনা আসার পর অধ্যাপক কাদাম্বা ওই মন্তব্য করেন।

তবে শ্রীনিবাস নিজে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে খুবই আনন্দিত। তিনি এজন্য প্রশংসা করেছেন নিজের দুই সহদৌড়বিদ অর্থাৎ দুই ষাঁড়কে! তিনি বিবিসিকে বলেন, কাম্বালা প্রতিযোগিতায় তিনি ৭ বছর ধরে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি স্কুলে থাকার সময় কাম্বালা দেখতাম। তখনই এই প্রতিযোগিতার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠি।’

তবে এই কাম্বালা প্রতিযোগিতা বেশ বিতর্কিত। মূলত, কর্দমাক্ত ধান ক্ষেতে এই প্রতিযোগিতা হয়। কর্ণাটকের উপকূলে এই ক্রীড়ার উদ্ভব। প্রতিযোগিরা ধানক্ষেতের মধ্য দিয়ে দৌড়ান। এপার থেকে ওপারের দূরত্ব হয় ১৩২ থেকে ১৪২ মিটার। মানুষ দৌড়বিদের পাশে থাকে ২ ষাঁড়। তবে আন্তর্জাতিক প্রাণিঅধিকার কর্মীরা এই প্রতিযোগিতার কড়া সমালোচনা করেন। ২০১৪ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ষাঁড়ের দৌড় প্রতিযোগিতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ দেওয়ার কারণ ছিল পার্শ্ববর্তী রাজ্য তামিলনাড়ুতে ষাঁড়-লড়াইয়ের প্রতিযোগিতা থেকে উদ্ভূত বিতর্কের কারণে। দুই বছর পর কর্ণাটকের রাজ্য আদালতও কাম্বালা সংক্রান্ত সকল ক্রীড়ানুষ্ঠান বন্ধ করার আদেশ দেয়।

তবে অধ্যাপক কাদাম্বা বলেন, এরপর থেকে এই ক্রীড়া আরও অনেক মানবিক করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিযোগিদের শেখানো হয়েছে প্রাণিদের অপ্রয়োজনীয়ভাবে আঘাত করা ছাড়াই কীভাবে তাদের দৌড়ানো যায়। ২০১৮ সালে মূলত শর্তসাপেক্ষে আবার কাম্বালা প্রতিযোগিতার অনুমতি দেওয়া হয়। একটি শর্ত ছিল যে চাবুক ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু এখনও এই প্রতিযোগিতা নিয়ে সমস্ত বাধা দূর হয়নি। আন্তর্জাতিক প্রাণি অধিকার সংগঠন পেটা ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করেছে এই যুক্তিতে যে, কাম্বালা পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত বেআইনি ছিল। তবে অধ্যাপক কাদাম্বার মতে, যে কাম্বালা কয়েক দশক আগে চালু ছিল, সেই তুলনায় এখনকার কাম্বালা অনেক আলাদা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status