শেষের পাতা

৩০ ভাগ ভোট পড়েছিল ৫০ ভাগ বাড়ানো হয়েছিল

স্টাফ রিপোর্টার

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রবিবার, ৮:৫২ পূর্বাহ্ন

বিগত জাতীয় নির্বাচনে ৩০ শতাংশেরও কম ভোট পড়েছিলো বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান। শনিবার সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সপ্তম জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, সর্বশেষ নির্বাচনে হয়তো ৩০ শতাংশেরও কম ভোট পড়েছিলো এবং পরে আরো ৫০ শতাংশ বেশি করে তা দেখানো হয়েছে। আকবর আলি খান জানান, যেখানে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩০ শতাংশেরও কম সেখানে জাতীয় নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে দেখানো হয়েছিলো। সাধারণত, জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেয়ার হার তুলনামূলক কম থাকে কারণ সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো তৃণমূল পর্যায়ে আশানুরূপ সংগঠিত থাকে না। কিন্তু যখন ইউনিয়ন পরিষদ অথবা নগর পর্যায়ে নির্বাচন হয় তখন স্থানীয় প্রার্থীরা অনেক বেশি সক্রিয় থাকে। তারা তাদের আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষী সকলকেই ভোট দিতে উৎসাহিত করে। তাই কোনোভাবেই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট প্রদানের হার জাতীয় নির্বাচনের থেকে বেশি হতে পারে না।

আকবর আলি খান বলেন, নির্বাচন কমিশনের উচিৎ প্রতিটা কেন্দ্রে ভোটের ফল ঘোষণার পূর্বে ওই কেন্দ্রে পড়া ভোটের সংখ্যা যাচাই করা। যদি দেখা যায় সেখানে ৯৫, ৯৮ কিংবা ১০০ ভাগ ভোট পড়েছে তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে ওই কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করা উচিত। এভাবে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে গেলে অনেক অনিয়মই বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, ইভিএমের ওপর মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ইভিএম প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক বেশি কার্যকর। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই এ নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। বাংলাদেশেও ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সতর্ক থাকা উচিত। তিনি বলেন, আমি মনে করি ২০ দফার চেয়ে এখন এক দফা দাবি তোলা উচিত। আর তা হলো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ-এর মাল্টিপারপাস হলরুমে আয়োজিত সম্মেলনে সারা দেশ থেকে আগত ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের প্রায় এক হাজার প্রতিনিধি অংশ  নেন। সভাপতিত্ব করেন সুজন কেন্দ্রীয় সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান। সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবু হেনা, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান, বিশিষ্ট রাষ্টবিজ্ঞানী ড. রওনকজাহান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ। সুজন নেতৃবৃন্দের মধ্যে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সুজন এর নির্বাহী সদস্য আলী ইমাম মজুমদার, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন, সুজন জাতীয় কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আবু হেনা বলেন, সুজন গণতন্ত্র, সুশাসন ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য কাজ করছে। এজন্য সুজন অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য। গণতন্ত্র চলতে পারে যখন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত হন। আর এই প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হন নির্বাচনের মাধমে। তাই যোগ্য ব্যাক্তিদের নির্বাচিত করা গেলে গণতন্ত্র কাজ করতে পারে এবং সুশাসন বিরাজ করতে পারে। আলী ইমাম মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পরিচ্ছন্ন করার লক্ষ্যে সুজন নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status