বাংলারজমিন
দুই দিবসে যশোরের ফুলচাষিদের ২০ কোটি টাকা বিক্রির টার্গেট
নূর ইসলাম, যশোর থেকে
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শুক্রবার, ৮:৫৪ পূর্বাহ্ন
পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ফুলের জমজমাট বেচাকেনা হয়েছে ফুলের সাম্রাজ্য খ্যাত যশোরের গদখালিতে। গত চার দিনে জেলার একমাত্র ফুলের এ পাইকারি বাজার থেকে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা অন্তত ২০ কোটি টাকার ফুল কিনেছেন। আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারি আরো কমপক্ষে ২ কোটি টাকার বেচাকেনার আশা করছেন ফুল প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্টরা। সুজলা-শষ্য শ্যামলার এদেশে পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনের মন রাঙাতে ফুলের বিকল্প নেই। আর এই ফুলের চাহিদার সিংহ ভাগই সরবরাহ করা হয় যশোর থেকে। এখানকার চাষীরা সারা বছর ফুল বিক্রি করলেও পহেলা ফাল্গুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ফুল বিক্রির সাথে সারা বছরের লাভ-ক্ষতির হিসাব মিলিয়ে থাকেন। এ বছরও গত চার দিন ধরে দুই দিবসের বেচাকেনা চলছে গদখালি বাজারে। বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, জিপসি, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ ১২ প্রকার ফুল কিনে ট্রাক, বাসসহ বিভিন্ন পরিবহনে ওই ফুল নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এ বছর গোলাপ ফুল ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় এ ফুলের ফলন হয়েছে কম। তবে আশাতীত দাম পাওয়ায় সে লোকশান পুশিয়ে উঠেছেন চাষীরা। ফুল চাষী ইসমাইল হোসেন বলেন, এ বছর দুটি ঝড়ের কারণে ও আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় গোলাপ ফুল গাছ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। কৃষি বিভাগের পরামর্শে অনেকভাবে চেষ্টা করে কিছুটা রক্ষা পান চাষিরা। পরে গাছে ফলন আসে। তবে আগে থেকেই অনেক গাছ আক্রান্ত হওয়ায় ফুলের ফলন ছিল অর্ধেকেরও কম। তবে ফলন কম হলেও গোলাপ ফুলের দাম বেশ চড়া। প্রতি পিস গোলাপ ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এতে ফলন কম হলেও ক্ষতি পুশিয়ে গেছে। এবারের পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে তারা গত বছরের তুলনায় অন্যান্য ফুলের দাম পেয়েছেন বেশ। বেচাকেনাও চলছে জমজমাট। সবমিলিয়ে লাভবান তারা। দেশের বিভন্ন স্থান থেকে ফুল কিনতে আসা পাইকাররা জানান, গোলাপ ফুলের অস্বাভাবিক দাম। এতো দামে গোলাপ কিনে লাভ করা দুষ্কর হবে। তবে অন্যান্য ফুলের দাম স্বাভাবিক বলেন তারা। বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম জানান, বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষে গেল ৯ই ফেব্রুয়ারি থেকে গদখালি বাজারে ফুলের বেচাকেনা শুরু হয়েছে। গত চার দিনে এ বাজার থেকে অন্তত ২০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। আগামীকালও (আজ) শুক্রবারও স্থানীয়ভাবে কিছু ফুল বিক্রি হবে। সবমিলিয়ে কমপক্ষে ২২ কোটি টাকা লেনদেন হবে। গোলাপ ফুলের বাড়তি দামে পাইকাররা কিছুটা অসন্তুষ্ট হলেও ভালো দাম পেয়ে খুশি ফুল চাষীরা। গদখালি ফুলের বাজারে প্রতিপিস জারবেরা-৮/১২ টাকা, গোলাপ-১৫/২০, রজনিগন্ধা-৪/৫, গ্লাডিওলাস-৮/১২, গাদাফুল প্রতি হাজার এক’শ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এদিকে গতকাল বসন্তবরণের উৎসবে যশোরের পাইকারী ও খুচরা ফুলের মার্কেটে ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। যশোরের খুচরা বাজারে প্রতি পিস গোলাপ ফুল বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে। এছাড়া প্রতি পিস রজণীগন্ধা ২০ থেকে ২৫ টাকা, গ্লাডিউলাস প্রতি পিস ২০ থেকে ২৫ টাকা, জারবেরা প্রতি পিস ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, প্রতি পিস বেলি ফুলের মালা বিক্রি হচ্ছে ১শ’ থেকে দেড়শ’ টাকা দরে। এছাড়া মেয়েদের মাথার ফুলের রিং বা ক্রাউন বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ি২শ’ থেকে ২৫০ টাকা দরে।