দেশ বিদেশ

নাশকতা চেষ্টার তথ্য

প্রভাবশালী প্রার্থীদের ওপর চোখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর

রুদ্র মিজান

৩০ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৮:৪৬ পূর্বাহ্ন

প্রতীকী ছবি

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাশকতার ছক কষছেন কিছু কাউন্সিলর প্রার্থী। তাদের নাশকতা চেষ্টার কিছু তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। এসব তথ্যকে ভিত্তি করে তাদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। যে কেন্দ্রে প্রতিপক্ষের ভোটার বেশি সেই কেন্দ্রই টার্গেট করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ভাড়াটে ক্যাডারদের কাজে লাগাতে পারেন এসব প্রার্থী। এমনকি আত্মগোপনে, দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীদেরও সহযোগিতা চাইছেন তারা। মেয়র প্রার্থী নিয়ে তেমন কোনো ভাবনা নেই এই কাউন্সিলর প্রার্থীদের। তারা প্রত্যেকেই নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করতে তৎপর। বির্তকিত প্রভাবশালী প্রার্থীরা অর্থের বিনিময়ে ক্যাডারদের নিজ বলয়ে জড়াচ্ছেন। এসব ভাড়াটে ক্যাডাররা দল-মতের বাইরে গিয়ে অর্থের বিনিময়ে কাজ করছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ককটেল বোমা তৈরির উপকরণ সংগ্রহ করেছেন এমন কয়েকজনের তথ্য পাওয়া গেছে। গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে, গত ১২ই জানুয়ারি তিন কেজি সালফার কেনা হয়েছে ঢাকা উত্তরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের এক কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে। মিরপুর-১০ এর জুটপট্টি এলাকার একটি বাসায় নাশকতা সৃষ্টির সরঞ্জাম রাখা হয়েছে। জহির নামে এক যুবকের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে এই ক্ষেত্রে। প্রায় এক সপ্তাহ আগে একই ওয়র্ডের আরেক প্রার্থী দুই কেজি সালফার সংগ্রহ করেছেন। অস্ত্র সংগ্রহেরও অভিযোগ রয়েছে এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে। সূত্রমতে, সালফারের সঙ্গে অনেক রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে ককটেল জাতীয় বোমা তৈরি করছে দুষ্কৃতিকারীরা।
ঢাকা উত্তরের তিন নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জিন্নাত আলী মাতবর। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এই ওয়ার্ডে নির্বাচন করছেন সাবেক কাউন্সিলর যুবলীগের উত্তরের সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম মানিক। এই দুই প্রার্থীকে নিয়ে শঙ্কা রয়েছে এলাকায়। অন্যান্য প্রার্থীদের নিজস্ব ভোট ব্যাংক থাকলেও নাশকতা করার মতো প্রভাব নেই বলে স্থানীয়দের ধারণা। একই অবস্থা উত্তরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে। ইতিমধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে সেখানে। এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বিতর্কিত প্রার্থী আব্দুর রউফ নান্নু। মাদক বিরোধী অভিযানের সময় আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। নানা অভিযোগ থাকলেও নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বি যুবলীগ নেতা জুয়েল রানা। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এই প্রার্থীর মিছিলে ইতিমধ্যে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এই ওয়ার্ডে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন, বিদ্রোহী হয়েছেন বুলবুল আহমদ মল্লিক। এই ওয়ার্ডের একজন প্রার্থীর পক্ষে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে ক্যাডার প্রস্তত করা হচ্ছে কয়েক প্রার্থীর পক্ষে। উত্তরের ছয় নম্বর ওয়ার্ডে প্রভাবশালী এক বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে নাশকতা চালানো হতে পারে বলে তথ্য রয়েছে। ইতিমধ্যে ওই প্রার্থীর পক্ষে চিহিৃত ক্যাডারদের নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গোয়েন্দাদের নজর রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ২, ৫, ৬, ১২, ২০, ২৬, ৪৩, ৫১, ৫৬, ৫৭ ও ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতি। ঢাকা উত্তরের ১, ৩, ৪, ৫, ১৮, ২৭,২৮, ৩০ ও ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে দৃষ্টি রয়েছে গোয়েন্দাদের। এসব ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন প্রভাবশালী এবং বির্তকিতদের অনেকে। তাদের প্রত্যেকের রয়েছে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। যে কোনো সময় অনভিপ্রেত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে তারা। এসব বিষয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান মানবজমিনকে বলেন, নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ কাউকে নষ্ট করতে দেয়া হবে না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে তৎপর। কেউ নাশকতা সৃষ্টি করতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দাগী, সন্ত্রাসীসহ এ ধরণের ব্যক্তিদের প্রতি গোয়েন্দাদের দৃষ্টি রয়েছে বলে জানান তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status