দেশ বিদেশ

তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে চুরি

খোঁয়া যাওয়া আলামত উদ্ধার হয়নি, গ্রেপ্তার নেই

আল-আমিন

৩০ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৮:৪৫ পূর্বাহ্ন

ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স থেকে চুরির ঘটনায়  খোঁয়া যাওয়া পণ্য উদ্ধার ও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। অফিস থেকে চোর চক্র দলিলের বালাম বই, ডিভিআর কম্পিউটার হার্ডডিক্স, সিপিইউ ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাসহ কিছু ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম চুরি করে নিয়ে গেছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন যে, ওই চুরির সঙ্গে অফিসের একাধিক কর্মকর্তা ও চোর সিন্ডিকেট জড়িত। চোর চক্র দীর্ঘদিন ধরে ওই অফিসে রেকি করেছে। আর রেকি করার কারণে তারা সেখান থেকে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। নিরাপত্তা বেষ্টিত এমন একটি অফিসে চুরি হওয়ার ঘটনায় অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বিস্ময় দেখা দিয়েছে।  

গত ১৭ই জানুয়ারি রাতে তেজগাঁও ভূমি রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে চুরির ঘটনা ঘটে। এর আগেও সেখানে ৩ বার চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে চুরি ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করার কারণে ফের চুরির ঘটনা ঘটেছে। সূত্র জানায়, এ ঘটনায় বাদী হয়ে বাড্ডা জোনের সাব রেজিস্টার মনিরুল ইসলাম  থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও তদন্ত করছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এসআই বাবলুর রহমান মানবজমিনকে জানান, রেজিস্ট্রেশন কার্যালয়ের চুরির ঘটনা নিয়ে তারা এখনো অন্ধকারের মধ্যে আছেন। চুরির ঘটনায় রেজিস্ট্রেশন কার্যালয়ের কেউ জড়িত আছে কী-না তাও জানা যায়নি। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তবে চোরদের ধরতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা সাবেকুন নাহার জানান, অফিসের কিছু জিনিস চুরি হয়েছে। মামলাটি থানা পুলিশ তদন্ত করছে। অফিসের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোন ক্রুটি আছে কী-না প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। মামলার তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকতা মানবজমিনকে জানান, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের রেজিস্ট্রেশন কার্যালয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি, মোটা অঙ্কের টাকা, দলিল, কম্পিউটারের হার্ডডিক্স, ডিভিআর ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনার পরপরই কোনো রকম যাচাই-বাছাই ছাড়াই মামলার এজাহারে যা যা উলেখ করেছে সেই অনুযায়ী তদন্ত চলছে। বিপুল অঙ্কের নগদ টাকা চুরি হওয়ার আলোচনা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনো পুলিশকে খোলাসা করে কিছু জানায়নি। প্রকৃতপক্ষে সেখান থেকে কী কী চুরি হয়েছে তাও আড়াল করার  চেষ্টা চলছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। এ কারণে আলোচিত এ ঘটনা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তারা গুরুত্ব দিয়ে ঘটনা তদন্ত করে আসল রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে।
সূত্র জানায়, চোর চক্র অভিনব কায়দায় এবারের চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, পাশাপাশি চার তলা ও তিন তলা বিশিষ্ট দুইটি ভবন নিয়ে তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স। চার তলা ভবনটি নতুন। পুরাতন তিন তলা ভবনের পেছনে দলিল লেখকদের টিনশেড স্থাপনা। টিনশেড স্থাপনাটি নতুন ভবনের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। এই টিনশেডের চাল বেয়ে কমপ্লেক্স ভবনের ভেতরে ঢোকে চোরের দল। এরপর নতুন ভবনের দোতলার কলাপসিবল গেটের গ্রীল কেটে পর্যায়ক্রমে  দোতলায় বাড্ডা ও তৃতীয় তলায় উত্তরা থানার সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের তালা ও কক্ষ দুটির স্ট্রিলের আলমারি ও ড্রয়ার ভেঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ নথিসহ মোটা অঙ্কের টাকা চুরি করে।
সূত্র জানায়, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ডিভিআরসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ও সরঞ্জাম নিয়ে যায়। এ কারণে সিসি ক্যামেরায় কোনো ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। তবে কমপ্লেক্সের বাইরের একটি সিসি ক্যামেরায় ভিডিও ফুটেজে দুজনকে দেখা গেছে। পুলিশ এ দুজনকে সন্দেহে রেখে ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে।

সূত্র জানায়, এবারের চুরির ঘটনার পর তদন্তকারীরা নড়েচড়ে বসেছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি এবার গোয়েন্দা পুলিশও অভিযান চালাচ্ছে। সিআইডি সেখান থেকে বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করেছে। আলামত গুলোর সূত্র ধরে বিভিন্নস্থানে অভিযান চলছে।  সূত্র জানায়, চোরদের ধরতে ঢাকা ও পাশের জেলার নারায়নগঞ্জে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু, তাদের ধরা যায়নি। কমপ্লেক্সের বাইরে থাকা ফুটেজে  দুইজন যুবকের  চেহেরা সনাক্ত হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status