বাংলারজমিন

ভৈরবের সেই নবজাতককে দত্তক নিলেন ডিসি

স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে

২৯ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৮:০৭ পূর্বাহ্ন

ভৈরবে ভিক্ষুকের কোলে রেখে যাওয়া নবজাতককে দত্তক নিয়েছেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী। আদালতের মাধ্যমে তিনি কন্যা শিশুটির অভিভাবক হয়েছেন। আদালতে জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল বারী আবেদন মঞ্জুর করে শিশুটিকে তাঁর কাছে দত্তক দেয়ার নির্দেশনা দেন। আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর রাতে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানা নিজ বাসভবনে নিয়ে যান। বর্তমানে শিশুটি ইউএনও’র কাছে আদর-স্নেহ পাচ্ছে। আদালতের নির্দেশনার বিষয়টি নিশ্চিত করে ভৈরবের উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানা বলেন, ‘নবজাতককে আমাদের ডিসি স্যার দত্তক নিয়েছেন। তবে তাকে নিতে আগামী বৃহস্পতিবার স্যার আসবেন। আমরা ওই দিনই স্যারের পরিবারের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করব। এই কয়দিন আমার কাছে থাকবে নবজাতকটি।’ গত শুক্রবার (২৪শে জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড দুর্জয় মোড়ের দক্ষিণ পাশে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল এলাকার ইসলাম ফার্মেসীর সামনে বসা বৃদ্ধা ভিক্ষুকের কাছে কালো চাদর গায়ে জড়ানো এক যুবতী বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে দুই থেকে তিন দিন বয়সী নবজাতকটিকে রেখে পালিয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও ওই যুবতী ফিরে না আসায় ভিক্ষুক নারী বিষয়টি ফার্মেসির মালিক আশরাফুল আলম মুকুলকে জানান। ফার্মেসি মালিক আশরাফুল আলম মুকুল বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানাকে জানালে তিনি এলাকাবাসীর সহযোগিতায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ এর মাধ্যমে নবজাতকটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর শিশুটিকে দত্তক নিতে স্থানীয় এবং ঢাকা থেকে বেশ কয়েকজন ইউএনও’র সাথে যোগাযোগ করেন। এছাড়া শিশুটিকে কি করা হবে, কোথায় রাখা হবে- এইসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানার জন্য রোববার জেলা প্রবেশন অফিসার মো. মহসীন আদালতের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন। এছাড়া শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী আদালতে আবেদন করেন। সোমবার জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর কাছে শিশুটিকে দত্তক দেয়ার ব্যাপারে আদালত নির্দেশনা দেয়। আদালতের নির্দেশনা পেয়ে সোমবার রাতে ইউএনও তাঁর বাসায় নেয়ার আগ পর্যন্ত ফুটফুটে শিশুটি হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর সহধর্মিণীর নাম সুমনা আনোয়ার। এই দম্পতির সামিহা চৌধুরী নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। দেড় বছর বয়সী সামিহা চৌধুরীর সাথে এবার হেসে-খেলে বড় হবে দত্তক নেয়া নবজাতকটি।
এদিকে শিশুটি ডিসির পরিবারে বড় হবে জেনে বেশ খুশি ফার্মেসির মালিক আশরাফুল আলম। তিনি বলেন, ‘কে জানত শিশুটির কপালে এত ভালো কিছু লেখা ছিল! আবার মনে হলো, যার কেউ নেই তার সৃষ্টিকর্তা আছে।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status