বাংলারজমিন
ঘুষের টাকা না পেয়ে মামলায় জড়ানোর অভিযোগ
জামালপুর প্রতিনিধি
২৮ জানুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ৮:৫১ পূর্বাহ্ন
ঘুষের টাকা না পেয়ে জামালপুর সদর উপজেলায় এক দরিদ্র বিদ্যুৎ গ্রাহককে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে জামালপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। গত রোববার রাতে জামালপুর প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী অনুজ চন্দ্রের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন বিদ্যুৎ গ্রাহক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, তার রাইস মিল চালানোর জন্য ২০১০ সালে তিনি জামালপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একটি সংযোগ লাইন নেন। পরবর্তীতে তিনি গুরুতর অসুস্থতার কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়লে বাড়ি-ভিটা বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে যান। দীর্ঘদিন মিল ব্যবসা বন্ধ থাকায় মঞ্জুরুল ইসলামের কাছে পিডিবি’র ৭৮ হাজার টাকা বিল বকেয়া হয়। এমতাবস্থায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর অনুজ চন্দ্র তার কাছে চল্লিশ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। তার দাবি করা ঘুষ পূরণ করলে মঞ্জুরুল ইসলামকে আর বকেয়ার টাকা পরিশোধ করতে হবে না বলে জানান ওই প্রকৌশলী। পরে এলাকাবাসীর পরামর্শে দরিদ্র মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে তার বকেয়ার বিষয়টি জানালে কিস্তির মাধ্যমে টাকাগুলো পরিশোধ করতে বলেন। নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশ অনুযায়ী মঞ্জুরুল ইসলাম কিস্তির মাধ্যমে বকেয়া সমুদয় টাকা পরিশোধ করে দেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলীর অনুজ চন্দ্র পিডিবি’র লোকজন নিয়ে গত ২রা মে ২০১৯ সালে মঞ্জুরুল ইসলামের বাড়িতে যান এবং পুনরায় টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে অনুজ চন্দ্র তার গাড়ি থেকে দুইটি ও মঞ্জুরুল ইসলামের ঘরের চৌকির নিচ থেকে পরিত্যক্ত পুরাতন আরো একটি মিটার এনে তা মঞ্জুরুল ইসলামের ঘরের দেয়ালে টাঙিয়ে ছবি তুলেন। পরবর্তীতে প্রকৌশলী অনুজ চন্দ্র নয় লাখ ৬৭ হাজার পাঁচ শ’ ১০ টাকা বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ এনে মঞ্জুরুল ইসলামের পরিবারের বিরুদ্ধে পর পর তিনটি মামলা দায়ের করলে মঞ্জুরুল ইসলাম ও তার ছেলে শ্রাবণ (২০)কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিছুদিন জেলে থাকার পর তারা জামিনে বেরিয়ে আসেন। বকেয়ার টাকা পরিশোধের পরেও শুধুমাত্র উপ-সহকারী প্রকৌশলীর অনুজ চন্দ্রের প্রতিহিংসার কারণে পরিবারটি আজ সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীর অনুজ চন্দ্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পিডিবি’র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পরিবারটি।