রকমারি

মাটির সামগ্রী বানিয়ে সংসার চলে তাদের

তোফায়েল হোসেন জাকির, সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) থেকে

২৭ জানুয়ারি ২০২০, সোমবার, ২:৫৯ পূর্বাহ্ন

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মধ্য রসুলপুর গ্রামের পালপাড়া এলাকার প্রায় ১০ টি পরিবারের মানুষ পুর্ব পুরুষের পেশাকে আজও আঁকড়ে ধরে আছেন। তাদের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে এখানো তৈরী করে আসছেন কাদামাটির পণ্যসামগ্রী। সুনিপুন হাতে মাটি দিয়ে হাড়ি-পাতিল, কলসী, থালা-বাটি, সরা-বাসন প্রভৃতি তৈরীকৃত জিনিসপত্র বিক্রি করেই সংসার চলে তাদের।

সরজমিনে দেখা যায়, নিভৃত পল্লী অঞ্চলের মধ্য রসুলপুর পালপাড়ায় সোহাগী রানী, ধর্মপাল চন্দ্র, গীতারানী ও মনোরঞ্জন পাল চন্দ্রসহ আরও অনেকে মাটির সামগ্রী তৈরী এবং তা শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কথা হয় তাদের সঙ্গে। তারা জানান, অতীতে গ্রাম-গঞ্জে মাটির তৈরী পণ্যসামগ্রীর কদর ছিলো অনেকা বেশী। এসব পণ্য শোভা পেত প্রত্যেক বাড়িতে। গ্রীষ্মকালে মাটির কলসির এক গ্লাস পানি যেন দুর করে দিত সব ক্লান্তিকে। এছাড়া গৃহস্থালির নিত্যব্যবহার দ্রব্যাদি, পুতুল, খেলনা, প্রতিমা, প্রতিকৃতি, ফুলের টপসহ অসংখ্য জিনিস আজও তৈরি হয়ে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। তবে ইদানিং প্রযুক্তির ব্যবহার ও আধুনিকতার ছোয়ায় দিন দিন তা হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে এ ব্যবসায় মন্দাভাব থাকায় এই মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িতদের চলছে দুর্দিন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতেও দৃঢ় মনোবল নিয়ে মাটির পণ্য তৈরী ও তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন রসুলপুরের কুমারপাড়ার ১০ পরিবারের মানুষরা।
 
এই শিল্পের অন্যতম কারিগর ধর্মপাল চন্দ্র বলেন, এসব জিনিসপত্র তৈরী প্রধান উপকরণ মাটি। এঁটেল ও দোআঁশ মাটি সংগ্রহ করার পর তা কাদা করে একটি গোলাকৃতির চাকের মধ্যে পণ্য বানানো হয়। এরপর রোদে শুকাতে হয় সেইসব পণ্যগুলো। শুকানো হলেই ভাটায় (বড় চুলা) খড়কুটো জ্বালিয়ে তা পোড়ানো হয়ে থাকে।

আরেক কারিগর সোহাগী রাণী জানান, তৈরী করা মাটির দ্রব্যসামগ্রীগুলো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারিতে বিক্রি করা হয়। যা বিক্রি করে প্রতি মাসে খরচ বাদে লাভ হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এ থেকে সংসারের চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, মধ্য রসুলপুর গ্রামে প্রায় ৫০ টি পরিবার মৃৎশিল্পের কাজ করতেন। এটির চাহিদা কমে যাওয়া অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছে। এখন এটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা একান্ত জরুরি। কেননা, সরকার যদি মৃৎশিল্প গোষ্ঠীকে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে সহায়তা দিতে পারে, তাহলে মাটির শিল্পের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status