শেষের পাতা

করোনা ভাইরাস

ঢাকার বিমানবন্দরে ছয় দিনে ২১৯০ জনের রোগ শনাক্ত পরীক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার

২৭ জানুয়ারি ২০২০, সোমবার, ৯:২৭ পূর্বাহ্ন

চীন থেকে বিশ্বের কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। আক্রান্তের সঙ্গে দ্রতগতিতে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এই নিয়ে এখন বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও পর্যটকদের নিয়মিত যাতায়াত থাকায় নোবেল করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি রয়েছে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। চীন থেকে আগত ফ্লাইটের যাত্রীদের বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং (রোগ শনাক্ত পরীক্ষা) করা হচ্ছে। গত ছয় দিনে ২ হাজার ১৯০ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এতে কেউ শনাক্ত হননি বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। এদিকে, চীনে এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকার বলছে, নতুন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় দুই হাজার মানুষ। যদিও বেসরকারিভাবে বলা হচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক।

গতকাল বিমানবন্দরে সরজমিন গিয়ে জানা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীন থেকে আগত ফ্লাইটের যাত্রীদের তিনটি থার্মাল স্ক্যানারের মধ্যে দুটি মেশিনে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। এখানে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে আছেন সহকারী পরিচালক ডা. সাজাদ। তিনি মানবজমিনকে জানান, ২১শে জানুয়ারি থেকে গতকাল আড়াইটা পর্যন্ত ২ হাজার ১৯০ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এতে কারো শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েনি। অন্যদিকে বিমানবন্দরে সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা কড়াকড়ি জোরদার থাকায় আগত যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এদিকে বিমানবন্দরে স্বজনদের স্বাগত ও বিদায় জানাতে আগত সাধারণ লোকের সঙ্গে করোনা ভাইরাস নিয়ে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তারা বেশির ভাগই জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তারা গণমাধ্যমের খবরে সামান্যই জানতে পেরেছেন। এর ক্ষতি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না তারা। এমনই একজন বশির উদ্দিন। তিনি জানান, পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। এজন্য তিনি বিমানবন্দরে আসার সময়ে মুখে মার্কস পড়ে এসেছেন। আরেকজন মোতাছিম বিল্লাহ। তিনি জানান, তিনি শুনেছেন চীনে এই রোগ ধরা পড়েছে।

গতকাল সোনারগাঁও হোটেলে অন্য একটি অনুষ্ঠান শেষে তাৎক্ষণিক এক ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা ও আইইডিসিআর’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, দেশের বাইরে থকে করোনা ভাইরাস নিয়ে কেউ দেশে আসছে কি না তা শনাক্তকরণে শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রোববার থেকে আরো দুটি নতুন যন্ত্র সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে(আইইডিসিআর) ভবনে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে বা বাইরে থেকে আগত কারো শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়নি। অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, এখনো সনাক্ত না হলেও আমরা এই মুহূর্তে এই ভাইরাসটি প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সতর্কতামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।

গতকাল সকাল থেকে এ বিষয়ে দফায় দফায় কয়েকটি বৈঠক করেছি। সেই সঙ্গে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল সহ আরো একাধিক হাসপাতালকে প্রস্তুত করার কাজ শুরু করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। ওই দুই কর্মকর্তা একই সঙ্গে জানান, ভারতে করোনা ভাইরাস শনাক্তের কথা আমরা শুনেছি। তবে এখনো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিংবা ভারতের সরকারি কোনো তরফ থেকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। তাই আমরা কেবল আমাদের প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। দেশে কোনো রোগী পাওয়া গেলে তাদের আলাদা করে রেখে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারি কুর্মিটোলা হাসপাতালে পৃথক ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য রি-এজেন্টও আছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নমুনা পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে। এই রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status