দেশ বিদেশ

ভোটার তালিকা হালনাগাদ বিল নিয়ে বাহাস

সংসদ রিপোর্টার

২৭ জানুয়ারি ২০২০, সোমবার, ৯:১২ পূর্বাহ্ন

ভোটার তালিকা হালনাগাদ বিল নিয়ে সংসদে বাহাস হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় এমপিদের মধ্যে গতকাল সংসদে ওই বাহাস হয়। বিএনপি দলীয় এমপিদের বিরোধিতার মুখে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ভোটে দিলে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময়সীমা ৩০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৬০ দিন নির্ধারণ করে ‘ভোটার তালিকা (সংশোধন) আইন-২০২০’ নামে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। বিলটি পাসের আগে বিলটির উপর জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপি দলীয় সদস্যরা। এ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান এবং বিএনপির মো. হারুনুর রশীদ ও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। আলোচনায় অংশ নিয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের প্রয়োজন হয় যখন মানুষ ভোট দিতে পারে। যে দেশে দিনের ভোট রাতে হয়, ভোটে পুলিশ প্রশাসন ক্যাডার বাহিনী, যে দেশের মৃত মানুষরা কবর থেকে উঠে এসে ভোট দেয়। যে দেশে খুশিতে ঠেলায় ভোট দিতে ভোটাররা লাইনে দাঁড়ায় সেই দেশে ভোটার তালিকা থাকা বা না থাকায় কি আসে যায়, সেটা বুঝে আসে না। তিনি বলেন, যেহেতু রাতের অন্ধকারে ভোট দেয় পুলিশ প্রশাসন এবং দলীয় ক্যাডার সে দেশে ভোটার তালিকা হিসেবে বরং তাদের একটা সুষ্ঠু তালিকা করা উচিত বলে মনে করি। এছাড়া ক্ষমতাসীন আস্থাভাজন ছাড়া যেহেতু প্রায় কেউ-ই ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে পারে না। সেহেতু ভোটার তালিকায় তাদের নাম নির্ভুলভাবে আসলেই চলে। তাই জনগণের করের টাকা বাঁচাতে জনগণ মানুষ যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে অলিক স্বপ্নে আশাহত না হয় তাই এ প্রেক্ষাপটে হালনাগাদ দূরে থাকুক আদৌ প্রয়োজন আছে কি-না সেটা জনমত যাচাই করা হোক। বিএনপি দলীয় অপর এমপি হারুনুর রশীদ বলেন, ভোটার তালিকা প্রয়োজনটা কি। আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব, এটার জন্যই তো ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়। হালনাগাদ করে আমাদের কি হবে। তিনি বলেন, যদি নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে না পারে। ভোটাররা যদি ভোট দিতে যেতে না পারে তাহলে ভোটার তালিকা করে কি হবে। বিষয়টি জনমত যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজন আছে। হারুনুর রশীদ বলেন, নির্বাচন কমিশন যে সমস্ত আইন করছে বিধিবিধান করছে এগুলো কি মানছি। আপনারা চাচ্ছেন এভাবেই নির্বাচন করা হবে, এভাবেই নির্বাচনী কার্যক্রম চলবে, এভাবে নির্বাচনী উৎসব চলবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনে রীতিমতো যুদ্ধ হচ্ছে। ?দুই দল দুই প্রার্থীর মধ্যে যুদ্ধ হচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নীরব, প্রশাসন নীরব, কেউ কোন কাজ করছে না। আইন প্রণয়ন বাদ দেন দেশ যেভাবে ফ্রি স্টাইলে চলছে এভাবে এক দলীয়ভাবে দেশ চালান। এসবের কোনো প্রয়োজন নেই। জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলীয় সদস্য যা বলেছেন আমি কিন্তু আশ্চর্য হয়নি। ওনাদের তো ভোট করার অভ্যাস নেই। তিনি বলেন, ওনারা কি করেন। ভোটারবিহীন নির্বাচন, তাতেও খুশি না। ?ওনারা করলেন ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার। ওনারা তো এই কথা বলবেন। ওনারা ভোটার ছাড়া নির্বাচন করলেন ১৫ই ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালে। খুনিদের ওইখানে বসান। এই হচ্ছে ওনাদের নিয়ম-কানুন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ওইখানে বসান। এটাই ওনাদের আইন-কানুন। ওনারা আমাকে আইনের দীক্ষা দিচ্ছেন। ওনাদের ধন্যবাদ দেই। মন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের কথা বলি। স্বার্থ দেখি। ১৯৮২ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই আইনটা ২০০০ সালে অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে আসছে। আমরা আইন প্রণয়ন করছি। ভাঙ্গা রেকর্ডের মতো পুরনো কথা বলেন তারা। ওনারা তো এনালগ, ডিজিটাল না। এদিকে পাস হওয়া বিলে ভোটার তালিকা আইনের ১১ ধারার ১ উপধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে জাতীয় ভোটার দিবসের সঙ্গে মিল রেখে কম্পিটার ডাটাবেজে সংরক্ষিত বিদ্যমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময়সীমা প্রতি বছর ২রা জানুয়ারি হতে ৩১শে জানুয়ারির পরিবর্তে ‘২রা জানুয়ারি হতে ২রা মার্চ’ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বিলটি আইনে পরিণত হলে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময়সীমা ৬০ দিন হবে। উল্লেখ্য, গত ২০শে জানুয়ারি জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিলটি পাসের সুপারিশ করে গত ২৩শে জানুয়ারি সংসদে প্রতিবেদন জমা দেয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status