বিশ্বজমিন

আইসিজের আদেশের পর মিয়ানমারে সেনাদের গোলায় অন্তঃসত্ত্বাসহ ২ নারী নিহত

মানবজমিন ডেস্ক

২৫ জানুয়ারি ২০২০, শনিবার, ৩:৪৬ পূর্বাহ্ন

জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) আদেশ দেয়ার মাত্র দু’দিন পরে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর গোলায় নিহত হয়েছেন দু’জন রোহিঙ্গা নারী। এর মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা। আহত হয়েছেন সাত জন। একজন এমপি ও এক গ্রামবাসীকে উদ্ধৃত করে এ খবর প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ২৩শে জানুয়ারি আইসিজে মিয়ানমারের এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সুরক্ষা দিতে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারকে আদেশ দেয়। আদালতের ওই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমার।

রাখাইন রাজ্যের বুথিডাং শহর থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্লামেন্টের সদস্য মং কাইওয়া জান বলেছেন, শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে নিকটবর্তী একটি ব্যাটালিয়ন থেকে ছোড়া গুলি আঘাত করেছে কিন তাং গ্রামে। ওই রাজ্যে এক বছরের বেশি সময় ধরে জাতিগত বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই চলছে সেনাবাহিনীর। মং কাইওয়া জান ফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, তবে ওই গ্রামে কোনো লড়াই ছিল না। সেনারা খামাখাই সেখানে গোলা ছুড়েছে। এ নিয়ে এ বছরে দ্বিতীয়বার সেখানে বেসামরিক মানুষ নিহত হলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে রাখাইনের সেনাবাহিনীর নৃশংসতা থেকে জীবন বাঁচাতে দেশ থেকে পালিয়ে কমপক্ষে ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম আশ্রয় নেন বাংলাদেশে। জাতিসংঘ একে গণহত্যার উদ্দেশে হত্যাযজ্ঞ বলে আখ্যায়িত করেছে। সম্প্রতি ওই অঞ্চল আবার এক উত্তেজনাপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়। সেখানে বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি’র সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়েছে সেনাবাহিনীর। আরাকান আর্মি হলো ওই রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের একটি বিদ্রোহী গ্রুপ। তারা স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ বাস্তচ্যুত হয়েছে। নিহত হয়েছেন কয়েক ডজন।

এখনও রাখাইনে যে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন, তারা সেখানে রয়েছেন বর্ণবাদের শিকার মানুষের মতো অবরুদ্ধ হয়ে। তাদের চলাফেরায় স্বাধীনতা নেই। নেই স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা লাভের কোন সুযোগ। আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর যুদ্ধের মাঝখানে তারা আটকা পড়েছেন। চলাচলে বিধিনিষেধ থাকার কারণে তারা বৌদ্ধ প্রধান অঞ্চল থেকে পালাতে পারছেন না। এ মাসের শুরুর দিকে এক বিস্ফোরণে রোহিঙ্গাদের চার শিশু নিহত হয়। এ জন্য সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মি একে অন্যকে দোষারোপ করে। সর্বশেষ যে দু’জন নারী নিহত হয়েছেন তাদের বিষয়ে রয়র্টাস বক্তব্য নিতে সেনাবাহিনীর দু’জন মুখপাত্রকে ফোন করে। কিন্তু তারা কোনো উত্তর দেন নি।

কিং তাং গ্রাম থেকে প্রায় এক মাইল দূরের আরেক গ্রামে বসবাস করেন সোয়ে তুন ওও। তিনি ফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, শুক্রবার মধ্যরাতের ওই গোলাগুলিতে দুটি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। সেনারা সব সময়ই ভারি অস্ত্র থেকে গোলা বর্ষণ করে। তারা কোনো এলাকাকে সন্দেহপ্রবণ মনে করলেই পুরো এলাকায় এভাবে গোলা ছোড়ে। ফলে পালিয়ে অন্য কোথাও যাওয়া অসম্ভব।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status