বাংলারজমিন
গাজীপুরে ছাগলের ভ্যাকসিন সংকট
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে
২৪ জানুয়ারি ২০২০, শুক্রবার, ৭:৪০ পূর্বাহ্ন
গাজীপুরে ছাগলের পিপিআর ভ্যাকসিনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ছাগলের খামারি ও ব্যক্তিগতভাবে লালন-পালনকারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। মরণঘাতী এই রোগের সংক্রমণ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে খামার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা পিপিআর ভ্যাকসিনের সংকটের কথা শিকার করে বলছেন, এই টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তা প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহ করা হবে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যমতে, এই জেলায় মোট তালিকাভুক্ত ছাগলের খামার রয়েছে ২৫টি, যাতে ছাগল রয়েছে প্রায় ৩ হাজার। এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে কৃষক ও গৃহস্থদের লালনপালনে আরো ২ লাখ ৩৩ হাজার ২শ’ ছাগল এবং ২৯ হাজার ভেড়া রয়েছে। বছরে এসব ছাগলকে অন্তত একবার করে পিপিআর টিকা দিতে হয়। সাধারণত প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ৫০ টাকা দিয়ে খামারিরা এসব টিকা নিয়ে থাকেন। এ টিকার চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে পুরো জেলায় জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস চলতি বছর ৫৩ হাজার টিকা সরবরাহ করে। কিন্তু গত ১৫ দিন ধরে জেলায় পশুর জীবন রক্ষাকারী পিপিআর ভ্যাকসিন নেই। ফলে ছাগল খামারিদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। মরণঘাতী পিপিআর রোগের কারণে খামার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গাজীপুরের প্লাস মাইনাস এগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতিকুর রহমান আমিন জানান, আমাদের খামারে জানুয়ারি মাসে নতুন করে ৩০টি ছাগল তুলেছি। এসব ছাগলকে প্রাণঘাতী পিপিআর রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পিপিআর ভ্যাকসিন নিতে প্রাণিসম্পদ অফিসে যাই। কিন্তু প্রয়োজনীয় পিপিআর ভ্যাকসিন সরবরাহ নিয়ে শুরু হয় নানা টানাপড়েন। পিপিআর টিকার সরবরাহ নাই উল্লেখ করে নানা টালবাহানা শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ অফিস। এতে খামারের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দীপক রঞ্জন রায় বলেন, ঢাকা থেকে টিকা আনার জন্য লোক পাঠানো হয়েছে। টিকা পেলে আগামী সোমবার নাগাদ পিপিআর ভ্যাকসিন সরবরাহ করা যাবে। জানা গেছে, পিপিআর হচ্ছে ছাগলের একটি জীবনঘাতী রোগ। Peste des Petits Ruminants (PPR) নামক ভাইরাসের কারণে এ রোগ হয়। এ রোগ হলে অসুস্থ প্রাণীর জ্বর, মুখে ঘা, পাতলা পায়খানা, শ্বাসকষ্ট দেখা যায়। বিজ্ঞানীদের ভাষায়, এটি একটি মরবিলি ভাইরাস (Morbillivirus) যার ফ্যামিলি হলো প্যারমিক্সো ভাইরাস (Paramyxovirus)। এ রোগটি বিভিন্ন গবাদিপশু ও কিছু কিছু বন্যপ্রাণীতে হতে পারে। তবে এ রোগটি সচরাচর দেখা যায় ছাগল এবং ভেড়াতে। এ রোগটি প্রথম দেখা যায়, আইভরিকোস্টে ১৯৪২ সালে। তারা এ রোগকে কাঁটা বলতো। এরপর এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। রোগের লক্ষণ ও সংক্রমণ বেশি হওয়ার কারণে এটি খামারিদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক সময় অসুস্থ প্রাণীটি মারাও যেতে পারে।