বাংলারজমিন

গোলাপের রাজ্য

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

১৭ জানুয়ারি ২০২০, শুক্রবার, ৭:৪৭ পূর্বাহ্ন

তিন চার বছর আগেও চার একর জায়গার উপর গোলাপ চাষ করতেন। কাজের জন্য ছিল ৮ জন শ্রমিক। দেখাশুনায় সারাদিনটা কেটে যেত। পাইকার ব্যবসায়ীরা লাইন ধরত ফুল কেনার জন্য। এখন আর সেদিন নেই চার একর কমে মাত্র ১.৫ একরে নেমে এসেছে গোলাপ চাষ। তারপরও ব্যবসা মন্দা কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার সবচেয়ে বড় গোলাপ চাষি আলমপুর এলাকার ডা. আবুল খায়ের। তিনি আরো বলেন আগে একশত গোলাপ নিম্নে চার টাকা ছিল। হাটহাজারীর চাহিদা মিটিয়ে চলে যেত নগরসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায়। গত তিন বছর ধরে মার্কেটে প্লাস্টিকের তৈরি ফুল নামায় আস্তে আস্তে ঝিমিয়ে পড়ছে আসল ফুল। শুধু গোলাপ নয় গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ সব ফুলেরই কদর চলে যাচ্ছে। চাষিরাও আগ্রহ হারাচ্ছেন ফুল চাষে। একই এলাকার গোলাপ চাষি আবদুল লতিফ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে একই মন্তব্য করেন। গোলাপ বিক্রি করে দৈনিক ৪-৫ হাজার টাকা আয় করতেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে পেশা পরিবর্তন না করলেও আগের মত সে আয় নেই তিনিসহ অন্যান্য ফুল চাষিদের। ভাল চাষ হলেও বিক্রির জন্য বেশ কয়েকজন পাইকারকে ফোন দিতে হয় এখন। কে একটু বেশি দাম দিবে। কারণ প্লাষ্টিক ফুলের রাজত্ব দেশ জুড়ে। তিন বছর ধরে প্লাস্টিকের কাছে প্রতিনিয়ত হার মানছে প্রাকৃতিক ফুল। বিয়ে, জন্মদিন, সভা সব অনুষ্ঠানে শোভা পাচ্ছে প্লাস্টিকের ফুল। অনেকেই এ পেশা বাদ দিয়ে অন্য পেশায় জড়িয়েছেন নিজেকে। সরজমিন জানা গেছে ১৭-১৮ সালেও যেখানে গোলাপ ৫ হেক্টর, গাঁদা ১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হলেও বর্তমানে তা কমে ২০ শতাংশে এসেছে। গুমানমর্দন, নাঙ্গলমোড়া, এনায়েতপুর, আলমপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ফুল চাষ হলেও এখনো দু-এক জায়গায় হচ্ছে মাত্র। ফুল চাষের জন্য অধিক উপযোগী হলেও ফুলের কদর না থাকায় চাষাবাদ কমে গেছে। বর্তমানে চকরিয়ার বড়ইতল এলাকার চাষিরা নগরে পাইকার হিসেবে ফুল দিলেও বাজারটি একসময় হাটহাজারীর ছিল।
সত্যতা স্বীকার করে কৃষি কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ ওয়াহেদ বলেন, অনেক ফুল চাষি ফুল চাষের মাধ্যমে স্বাবলম্বী। প্লাস্টিক ফুলের আনাগোনায় ব্যবসা মন্দা হওয়ায় চাষ বন্ধ হওয়ার উপক্রম। সরকার উদ্যোগী না হলে হয়ত প্লাষ্টিক ফুলের ভিড়ে হারিয়ে যাবে গোলাপ, গাঁদাসহ অসংখ্য ফুল।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status