শেষের পাতা
কায়সারের মৃত্যুদণ্ড আপিলেও বহাল
স্টাফ রিপোর্টার
১৫ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার, ৯:০২ পূর্বাহ্ন
মহান মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে সাতটিতে মৃত্যুদণ্ড, পাঁচটিতে যাবজ্জীবন, একটিতে ১০ বছর ও আরেকটিতে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন। তবে আপিল বিভাগ সাতটির মধ্যে ?তিনটিতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন, বাকি চারটিতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন-বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। তাদের সহযোগিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মুরাদ রেজা ও মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। অপরদিকে সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, আইনজীবী এস এম মো. শাহজাহান। তাদের সহযোগিতা করেন এডভোকেট শিশির মোহাম্মদ মনির ও ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন। রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কায়সারের আইনজীবী এসএম শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, রায়ের অনুলিপি পেলে ভাল মত দেখে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করা হবে। তবে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ে আমাদের দেশে ধর্ষণে সহযোগিতা করার দায়ে প্রথম কোনো আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। ওই অভিযোগের যে ভিকটিম, সে নিজে কোর্টে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং তার মেয়েও আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন দুর্দশার কথা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি নবম মামলা। রায়ের মাধ্যমে এর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলো। এর আগে গত ৩রা ডিসেম্বর কায়সারের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিলের ওপর রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৪ই জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়। গত ২৫শে নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করে শেষ হয় ৩রা ডিসেম্বর। আর ৩০শে অক্টোবর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা কায়সারের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। এখন নিয়ম অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তা ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। সেটি হাতে পেলে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে ট্রাইব্যুনাল। সেই মৃত্যু পরোয়ানা ফাঁসির আসামিকে পড়ে শোনাবে কারা কর্তৃপক্ষ। পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবে আসামিপক্ষ। তবে রিভিউ যে আপিলের সমকক্ষ হবে না, তা যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায়েই স্পষ্ট করা হয়েছে। রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়ে গেলে এবং তাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে আসামিকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ দেয়া হবে। তিনি স্বজনদের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন। প্রেসিডেন্টের ক্ষমার বিষয়টি ফয়সালা হয়ে গেলে সরকার কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।
নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক অপরধ ট্রাইব্যুনাল কায়সারের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। আইন অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের রায়ের এক মাসের মধ্যে খালাস চেয়ে আপিল করে আসামিপক্ষ। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কায়সারের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে এডভোকেট জয়নুল আবেদীন তুহিন আপিল আবেদনটি করেন। এরপর ২০১৭ সালের ১৩ই আগস্ট এক আদেশে আপিল বিভাগ আপিলের সার সংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেন। ওই বছর ১০ই অক্টোবর শুনানি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আসামিপক্ষের সময়ের আবেদনে তা পিছিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকার পর গত ১০ই জুলাই সর্বোচ্চ আদালতে এ মামলার শুনানি শুরু হয়। যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত ৩রা ডিসেম্বর তা রায়ের পর্যায়ে আসে।
এদিকে, ২০১৪ সালের ২৩শে ডিসেম্বর তৎকালীন ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কায়সারের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। রায়ে উঠে আসে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজের নামে কায়সার বাহিনী গঠন করে অপরাধ সংঘটিত করেন হবিগঞ্জ মহকুমার রাজাকার কমান্ডার ও শান্তি কমিটির সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার। রায়ে তাকে সর্বোচ্চ সাজাসহ ২২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৫২ জনকে হত্যা-গণহত্যা, দুই নারীকে ধর্ষণ, পাঁচজনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় এবং দুই শতাধিক বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন ও ষড়যন্ত্রের ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এসব অভিযোগের মধ্যে ১৪টিই প্রমাণিত হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো অন্য অপরাধ ধর্ষণের দায়ে ফাঁসির দণ্ড পান কায়সার।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি নবম মামলা। রায়ের মাধ্যমে এর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলো। এর আগে গত ৩রা ডিসেম্বর কায়সারের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিলের ওপর রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৪ই জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়। গত ২৫শে নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করে শেষ হয় ৩রা ডিসেম্বর। আর ৩০শে অক্টোবর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা কায়সারের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। এখন নিয়ম অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তা ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। সেটি হাতে পেলে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে ট্রাইব্যুনাল। সেই মৃত্যু পরোয়ানা ফাঁসির আসামিকে পড়ে শোনাবে কারা কর্তৃপক্ষ। পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবে আসামিপক্ষ। তবে রিভিউ যে আপিলের সমকক্ষ হবে না, তা যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায়েই স্পষ্ট করা হয়েছে। রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়ে গেলে এবং তাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে আসামিকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ দেয়া হবে। তিনি স্বজনদের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন। প্রেসিডেন্টের ক্ষমার বিষয়টি ফয়সালা হয়ে গেলে সরকার কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।
নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক অপরধ ট্রাইব্যুনাল কায়সারের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। আইন অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের রায়ের এক মাসের মধ্যে খালাস চেয়ে আপিল করে আসামিপক্ষ। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কায়সারের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে এডভোকেট জয়নুল আবেদীন তুহিন আপিল আবেদনটি করেন। এরপর ২০১৭ সালের ১৩ই আগস্ট এক আদেশে আপিল বিভাগ আপিলের সার সংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেন। ওই বছর ১০ই অক্টোবর শুনানি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আসামিপক্ষের সময়ের আবেদনে তা পিছিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকার পর গত ১০ই জুলাই সর্বোচ্চ আদালতে এ মামলার শুনানি শুরু হয়। যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত ৩রা ডিসেম্বর তা রায়ের পর্যায়ে আসে।
এদিকে, ২০১৪ সালের ২৩শে ডিসেম্বর তৎকালীন ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কায়সারের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। রায়ে উঠে আসে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজের নামে কায়সার বাহিনী গঠন করে অপরাধ সংঘটিত করেন হবিগঞ্জ মহকুমার রাজাকার কমান্ডার ও শান্তি কমিটির সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার। রায়ে তাকে সর্বোচ্চ সাজাসহ ২২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৫২ জনকে হত্যা-গণহত্যা, দুই নারীকে ধর্ষণ, পাঁচজনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় এবং দুই শতাধিক বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন ও ষড়যন্ত্রের ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এসব অভিযোগের মধ্যে ১৪টিই প্রমাণিত হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো অন্য অপরাধ ধর্ষণের দায়ে ফাঁসির দণ্ড পান কায়সার।