বাংলারজমিন

কসবায় অটোচালক হত্যার বর্ণনা দিলো ঘাতক

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

১৪ জানুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:২৩ পূর্বাহ্ন

একটি স্মার্ট ফোন সেট ও মাত্র ১২ হাজার টাকার লোভে সাইদুর রহমান (১৯) নামের তরুণকে তার এক সহপাঠী গলা কেটে হত্যা করেছে। পরে লাশ গুম করার জন্য একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকিতে ফেলে দেয় ঘাতক। গতকাল বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ সরওয়ার আলমের আদালতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি রানা মিয়া (২০) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ খুনের কথা স্বীকার করেছেন। এ ছাড়াও আসামি রানার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গলা কাটার ক্ষুর ও নিহতের মানিব্যাগ উদ্ধার করেছেন। রানা মিয়া ব্রা?হ্মণবাড়িয়ার কসবা পৌর শহরের কাঞ্চনমুড়ি এলাকার দানু মিয়ার ছেলে এবং নিহত সাইদুর রহমান একই এলাকার হুমায়ুন কবিরের ছেলে। সাইদুর পেশায় একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক। চার ভাইয়ের মধ্যে সাইদুর রহমান পরিবারের বড় ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাইদুর গত ২৯শে ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে সিএনজি চালিয়ে বাড়িতে যান । এ সময় মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে বাইরে চলে যায়। এরপর থেকে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি সাইদুর। গত ২রা জানুয়ারি সকালে কাঞ্চনমুড়ি গ্রামের বালুর মাঠ এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকি থেকে সাইদুরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছেন পুলিশ। ওই দিন রাতে নিহতের মা হনুফা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় জেলার গোয়েন্দা পুলিশ ও কসবা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে গত রোববার সকালে রানা মিয়াকে শীতলপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছেন। কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লোকমান হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া রানা মিয়াকে গতকাল ব্রা?হ্মণবাড়িয়া জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ সরওয়ার আলমের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রানা আদালতকে বলেছেন, সাইদুর ও রানা মিয়া একই সঙ্গে চলতো। গ্রামের সম্পর্কে সাইদুর তার ভাতিজা। সাইদুর খুন হওয়ার এক সপ্তাহ আগে একটি দামি স্মার্ট ফোনসেট ক্রয় করেছেন। রানা ওই সেটটি দেখে তার লোভ হয়। গত ২৯শে ডিসেম্বর বিকাল ৫টার দিকে কসবা সীমান্ত কমপ্লেক্সের সামনে জাহিদের সঙ্গে দেখা হয় রানার। এ সময় রানা দুটি সিগারেট কিনেন। এ সময় জাহিদ তার মানিব্যাগ খুলে ১০ টাকা দিয়েছেন। এ সময় জাহিদের মানিব্যাগে কিছু টাকা দেখতে পায়।
রানার মাথায় ঢুকে তার স্মার্ট ফোনসেট ও টাকাগুলো নিয়ে যেতে হবে। এ সময় তাকে খুন করার পরিকল্পনা করেন। রানা এ সময় সাইদুরকে প্রস্তাব করেন রাতে একজন ব্যক্তি ৫০০ ইয়াবা বড়ি নিয়ে আসবে। তাকে নোয়াগাঁও পৌঁছে দিলে ৪ হাজার টাকা দিবে। এ সময় তারা কথাবার্তা শেষে বাড়ি চলে যায়। যাওয়ার সময় তাকে জানিয়েছেন সিএনজি লাগবে না। দুজনেই হেঁটে পৌঁছে দিবো।
ওই কথামতে রাত সাড়ে ৭টার দিকে রানা আবারো সাইদুরকে ফোন করে। এ সময় ফোনে কথা বলতে বলতে কাঞ্চনমুড়ি বালুর মাঠে যায় সাইদুর। দুজনের মধ্যেই কথা হয়। এ সময় সাইদুরের এক বন্ধু ফোন করে ২০-৩০ মিনিট কথা বলেন। ওই সময় রানা তাকে খুন করার চেষ্টা চালায়। ফোনে কথা বলা অবস্থায় রানা একটি পুরাতন বাঁশ দিয়ে সাইদুরের মাথার পেছন দিক থেকে আঘাত করলে মাটিতে লুটে পড়ে। এ সময় সাইদুরের গলায় থাকা মাফলার দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে ধরে। একপর্যায়ে তার কাছে থাকা ক্ষুর দিয়ে গলা কেটে তাকে খুন করে। তার কাছে থাকা স্মার্টফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যায়। পরে লাশটি গুম করার জন্য বালুর মাঠের পরিত্যক্ত একটি সেপটিক ট্যাংকির ভেতরে লাশটি ফেলে দেয়। এ সময় তার ক্ষুরটিও সেখানে ফেলে দেয় এবং মানিব্যাগটিতে থাকা ১২ হাজার টাকা রেখে ব্যাগটি জনতা টাওয়ারের সামনে ড্রেনে ফেলে দেয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status