এক্সক্লুসিভ

‘আমি শীর্ষ সন্ত্রাসী বলছি’

শুভ্র দেব

১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, শনিবার, ৭:৪৮ পূর্বাহ্ন

হ্যালো, আমি শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত বলছি। আমার পোলাপাইন বিপদে আছে, কয়েকজন অসুস্থ। আমাকে কিছু টাকা পয়সা দেন। আপনি সাংবাদিক? আমিতো আর লাখ/কোটি চাইনি। কত দিতে পারবেন কন? আমার টাকা লাগবে। আধা ঘণ্টার মধ্যে টাকা দেন। না হলে খবর আছে। আর এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। দ্রুত টাকাটা পাঠিয়ে দেন। গত ২৩ নভেম্বর দৈনিক ঢাকা টাইমস পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফুর রহমানের মোবাইল ফোনে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত হোসেনের নামে চাঁদা চাওয়া হয়। চাঁদা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। পরে আরিফুর রহমান নিরাপত্তা চেয়ে ডিএমপির রমনা থানায় একটি জিডি করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামে চাঁদাবাজি চলছেই। ঢাকার ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও বাড়ির মালিকদের কাছে প্রায়ই চাঁদা চেয়ে ফোন আসে। চাওয়া হয় বড় অংকের চাঁদা। অপারগতা প্রকাশ করলে পরিবারের সদস্যদের গুম এমনকি প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। ভয়ে অনেকেই চাঁদা তুলে দেন শীর্ষ সন্ত্রাসী পরিচয়দানকারী ব্যক্তিদের প্রতিনিধিদের হাতে। আবার অনেকেই জীবনের নিরাপত্তার চেয়ে থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। চাঁদা দিতে না পারায় খুন হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে মিরপুরের নিউ শাহাজালাল আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জুনায়েদের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে সন্ত্রাসী শাহাদাত। চাঁদা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। পরে চাঁদা না পেয়ে পরের মাসে এই ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগীর করা জিডির তদন্ত হয় না। ফোন পেয়ে আতঙ্কিত ব্যক্তির নিরাপত্তা জিডি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। জিডির তদন্তের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ভুক্তভোগীর সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করেন না।
নিরাপত্তার জিডি তদন্ত করেন পুলিশের উপপরিদর্শক পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ সময় বিদেশী মোবাইল নম্বর থেকে ফোন আসে। এজন্য তদন্ত করতে গিয়ে ফোন করা ব্যক্তিদের শনাক্ত করা যায় না। এছাড়া প্রথমদিন ফোন করার পরে তারা আর ফোন দেয় না। যারা জিডি করেন তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এদিকে অপরাধ নিয়ে কাজ করেন পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয় বলেছেন, যেসকল মোবাইল নম্বর থেকে ফোন আসে সেগুলো ডিটেক্ট করে অনেক সময় রেজিস্ট্রেশন ঠিকঠাক পাওয়া যায় না। আবার ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনেককে আটক করা হয়।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলেছেন, পুলিশের নিরাপত্তা দেওয়ার সিস্টেমেই সমস্যা রয়েছে। প্রযুক্তি এই যুগে যেসব নম্বর থেকে ফোন আসছে সেগুলো শনাক্ত করে এ্যাকশনে যাওয়া অসম্ভব কিছু না। কিন্তু এসব চাঁদাবাজির সঙ্গে পলিটিক্যাল কানেকশন থাকায় পুলিশ নিরব ভুমিকা পালন করে। ফলে জিডির কোনো তদন্ত হয় না।

সূত্রমতে, পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহদাত হোসেন, সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, জিসান, শাহিন শিকদারের নামেই ঢাকায় বেশি চাঁদাবাজি হয়। এছাড়া কারাগারে থাকা আরও কয়েকজন সন্ত্রাসীর নামেও চাঁদাবাজি হয়। একটি বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমেই ফোন দেয়া হয় । টাকা আদায় করা হয়। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। তবে এক্ষেত্রে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। কয়েকটি দোকানের বিকাশ নম্বর পরিবর্তন করে টাকা নেয়া হয়।  

গত ৯ই সেপ্টেম্বর বার্তা সংস্থা আমেরিকা নিউজ এজেন্সির (এনা) ও নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক মানব ঠিকানার বাংলাদেশ অফিসের স্টাফ তুহিন আহমদ পায়েলের কাছে চাঁদা চেয়ে হুমকি দেয়া হয়। পায়েল বলেন, ওই সকালে আমার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন করে এক ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাৎ হোসেনের পরিচয় দিয়ে ৩৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এসময় ওই ব্যক্তি আমার পরিবারের অবস্থান, কে কোথায় থাকে, কোথায় বাড়ি আছে সব কিছু বলে দেয়। পরে আমি তাকে বলি আমি শিক্ষার্থী এত টাকা কোথায় পাব। একপর্যায়ে সে আমাকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিতে বলে। চাঁদা না দিলে সে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। একটি বিকাশ নম্বর পাঠিয়ে দ্রুত টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেয়। পরে ভয় পেয়ে আমি খিলগাঁও থানায় একটি জিডি করি। কিন্তু থানা থেকে আমার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা হয়নি।

চলতি বছরের ১৬ই জুলাই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন পরিচয় দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষক আনু মুহাম্মদকে একটি বিদেশী মোবাইল নম্বর থেকে ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়। টাকা না দিলে পরিবারের সদস্যদের গুম করার হুমকিও দেয়া হয়েছিলো। পরে আনু মুহাম্মদ খিলগাঁও থানায় একটি জিডি করেছিলেন। ঘটনার দিন তিনি তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন + ৯১৮০১৭৮২২৭২৫ থেকে সকাল ১০টার দিকে ফোন এলো। নিজের পরিচয় দিলেন সুব্রত বাইন। কলকাতায় থাকেন। তিনি নাকি শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন। কলকাতায় তার ছোট ভাইদের চিকিৎসার জন্য টাকা দাবি করলেন। না দিলে পরিবারের সদস্য গুমসহ কিভাবে টাকা আদায় করবেন তা দেখতে বললেন। ওই সময় আনু মুহাম্মদ মানবজমিনকে বলেছিলেন, জিডি করার পর আমাকে আর কেউ ফোন দেয়নি। খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, এরকম মোবাইল নম্বর থেকে প্রায়ই বিভিন্ন লোকের কাছে ফোন আসে। অনেকে থানায় জিডি করে। যেসব নম্বর থেকে ফোন আসে এসব নম্বর দেশের বাইরের।

পহেলা অক্টোবর শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন পরিচয়ে ফোন দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চাওয়া হয় খিলগাঁর সামাজিক সংগঠন পল্লীমা সংসদের সাধারণ সম্পাদক মো. আওয়াল কামরুজ্জামান ফরিদের কাছ থেকে। দুপুর ২টার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা না দিলে ফরিদের দুই সন্তানকে চির দিনের মত হারাবেন বলেও হুমকি দেয় সুব্রত বাইন নামের ওই ব্যক্তি। দীর্ঘ ১৫ মিনিটের ফোনালাপে ফরিদ তাকে অনেক কাকুতি মিনতি করেন। কিন্তু তার মন গলেনি। বরং উল্টো হুমকি দিয়ে সে ফরিদকে বলে, দুই সন্তানকে যদি ধরে নিয়ে ফোন দিতাম তবেতো বাড়ি বিক্রি করে ছেলেদের জীবন বাঁচাতেন। এছাড়া ওই সন্ত্রাসী ফরিদকে বলে, ঢাকায় যত থানা, পুলিশ এমনকি পৃথিবীর কেউ তাকে বাঁচাতে পারবেনা। এ ঘটনায় ফরিদ খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। ২৭শে নভেম্বর রামপুরা চৌধুরী পাড়ার বাসিন্দা আজাহারুল ইসলামকে সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন পরিচয় দিয়ে ১৪ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করা হয়।

মো. আওয়াল কামরুজ্জামান ফরিদ মানবজমিনকে বলেন, ১৫ মিনিট ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি আমার অপারগতার কথা বলেছি। তারপরেও তিনি আমাকে হুমকি ধামকি দিয়েছেন। আমার ছেলেদেরকে মেরে ফেলার কথা বলেছেন। লাইন কাটার পর ভারতীয় ওই নম্বর থেকে আরো অনেক ফোন এসেছে। আমি রিসিভ না করে থানায় গিয়ে জিডি করেছি। তদন্ত কর্মকর্তা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, কিছু হবে না। পরে এসবি (স্পেশাল বাঞ্চ) থেকে দুজন এসে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন।

এদিকে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর আতঙ্কে থাকেন মিরপুর ও কাফরুল এলাকার বাসিন্দারা। একজন হচ্ছেন, পলাতক ফাঁসির আসামি শাহাদাত হোসেন আরেকজন সন্ত্রানী শাহিন শিকদার। শাহাদাত হোসেন চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার ও জনমনে ভীতি ছড়ানোর জন্য গত ১৫ বছরে তার সহযোগীদের দিয়ে অন্তত অর্ধ শতাধিক মানুষ হত্যা করেছেন। বাড়ির মালিক, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী থেকে শুরু করে বড় চাকরিজীবীর কাছে চাঁদা চেয়ে প্রতিদিনই ফোন দিচ্ছে ওই দুই সন্ত্রাসী। জীবননাশের ভয়ে অনেকেই এসব বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করছেন না। নিরবে টাকা তুলে দিচ্ছেন তাদের সহযোগীদের হাতে। আবার অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় গিয়ে বাসা ভাড়া নিচ্ছেন। একইভাবে কচুক্ষেত-কাফরুল এলাকার আতঙ্ক শাহিন শিকদার। চাঁদা চেয়ে ব্যর্থ হয়ে এই সন্ত্রাসী মানুষ হত্যা করেছে।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত পলাতক। সম্ভবত তার অবস্থান এখন ভারতে। চাঁদবাজি নিয়ন্ত্রণে সে গড়ে তুলেছে বড় ধরনের ক্যাডার বাহিনী। মূলত চাঁদাবাজি ও কন্টাক্ট কিলিংয়ের মাধ্যমে যে আয় হয় সেটা দিয়েই তারা চলেন এবং এই টাকার বড় অংশ চলে যায় শাহাদাতের কাছে। তার অবস্থান ভারতে থাকার কারনে তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিভিন্ন সময় তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  আর শাহিন শিকদার দেশের ভেতরে থাকলে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। সে গাঁঢাকা দিয়ে আছে। এক সময়ের ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী ও বর্তমানে কারগারে থাকা কিলার আব্বাসের সহযোগী ছিল শাহিন। চলতি বছরেই শাহিন বাহিনী চাঁদা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে। চাঁদাদাবি করে কচুক্ষেতের আবুল কালাম নামের এক ব্যবসায়ীকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হয়।

একাধিকবার চাঁদা চেয়ে কাফরুলের হাইটেক মাল্টিকেয়ার হাসপাতালে শাহিন শিকদার ও তার সহযোগীরা ফোন দিয়েছেন। হাসপাতালের মালিকদের কাছে এককালীন ৫০ লাখ টাকার পাশপাশি মাসিক চাঁদা দেওয়ার জন্য হুমকি দেয় এই সন্ত্রাসী। না হলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার ভয় দেখায়। এমনকি ওই হাসপাতালের বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের কাছে চাঁদাদাবি করে সে ফোন দিয়েছে। প্রাণের ভয়ে অনেক চিকিৎসকই এখন এলাকা ছাড়া। আর কেউ কেউ নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করার পরেও এই সন্ত্রাসীকে চাঁদা দিয়েছেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণ পদ রায় মানবজমিনকে বলেন, কিছু কিছু গ্রুপ আছে যারা বিভিন্ন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ব্যবহার করে ভয়ভীতি দেখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে চাঁদাবাজি করতে চায়। এরা বড় অংকের চাঁদা চেয়ে ফোন দেয়- একসময় ১০ হাজার টাকায় নেমে আসে। যেসব নম্বর থেকে ফোন আসে সেগুলো আমরা ডিটেক্ট করি। তবে অনেক সময় সঠিক নামে রেজিষ্ট্রেশন পাওয়া যায় না।  আবার অনেক সময় অ্যাপস ব্যবহার করে ফোন দেয়। তিনি বলেন, যাদের কাছে এধরনের ফোন আসে আমরা বলবো তারা যেন এসব বিষয় এভোয়ড করে। অপরিচিত বিদেশী নম্বর যেন কম ধরে মানুষ। কারণ এরকম ফোন পেলে অনেকেই নার্ভাস হয়ে যায়। এজন্য এসব ফোন এড়িয়ে পুলিশের কাছে রিপোর্ট করতে হবে। শীর্ষ সন্ত্রাসীরাই ফোন দিচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একেবারে না বলা যাবে না কারণ এসব ফোন কলের মধ্যে হয়তো কোনটি শীর্ষ সন্ত্রাসী কারো থাকতে পারে।

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্ণেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার মানবজমিনকে বলেন, ফোনে চাঁদা চাইলে কেউ যদি দেয় এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু সেটা অন্যায় কাজ। আমাদের কাছে যেসব অভিযোগ আসে এদের অধিকাংশকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।  তবে  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা রিপোর্ট করে না। রিপোর্ট করলে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয় এদেরকে আইনের আওতায় আনতে পারি। তিনি বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীরা এভাবে ফোন করে চাঁদা চাইবে এটা বোকামি চিন্তা। কারণ এভাবে মোবাইলে ফোন দিলে তারা ধরা পড়ে যাবে। আমরা এখন পর্যন্ত অনেককেই ধরেছি কিন্তু তাদের মধ্যে যাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে এমন লোক পাওয়া যায়নি। দাগি সন্ত্রাসীরা কখনই ফোন করবে না। এগুলো একটি প্রতারক চক্রের কাজ। যারা ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা নিতে পারে তারা এরকম করবেই তবে জনসচেতনতা জরুরি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন মানবজমিনকে বলেন, সন্ত্রাসীদের নামে চাঁদা চাওয়ার ঘটনা আগেও ছিল এখনও আছে। যেসব নম্বর থেকে তারা ফোন দিচ্ছে এগুলো ট্র্যাক করা অসম্ভব কিছু না।

সিস্টেমেটিক ইমপ্রুভের দিক দিয়ে আমরা অনেক এগিয়ে। কারণ সন্ত্রাসীরা মোবাইলের সিম ব্যবহার করে ফোন দিচ্ছে তাই সহজেই ট্র্যাক করা যায়। প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদেরকে শনাক্ত করে যদি এ্যাকশনে যাওয়া যায় তবে এই অপরাধ কমবে। কিন্তু মুশকিলটা এখানেই, ভুক্তভোগীরা ভয়ে পুলিশের কাছেও এসব বিষয় বলে না। আবার যারা বলে জিডি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। পুলিশও গুরুত্ব না দিয়ে বলে কিছুতো হয়নি। আবার যখন কোনো প্রমিনেন্ট লোক হয় তখন তার পেছনে দুজন পুলিশ দায়িত্ব পালন করে। তিনি বলেন, পুলিশের দায়িত্ব নাগরিককে সুরক্ষা দেয়া এবং সেটি শারীরিক সুরক্ষা নয় মানসিকভাবেও সুরক্ষা দেয়া যায়। পুলিশের সেবা দেওয়ার ব্যবস্থাপনাটা সঠিক নয়। থানায় গিয়ে জিডি করলে কেউ খবরও নেয় না। সিস্টেমটা এমন হওয়া উচিত কেউ জিডি করলে তদন্ত করে জানিয়ে দেয়া হবে।  
দেশ আধুনিকায়ন হয়েছে ডিজিটাল হয়েছে। তারপরেও এধরনের অভিযোগ আশা করা যায় না। পুলিশ শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলেও নিম্নতম নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সিস্টেমের মধ্যে সমস্যা আছে। যেসব নম্বর থেকে ফোন আসে এগুলো ট্র্যাক করা হয় না। কারণ এসবের মধ্যে পলিটিক্যাল কানেকশন থাকে বলে মনে করেন এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status