বিনোদন

বছর শেষে কোণঠাসা সংগীতাঙ্গন

ফয়সাল রাব্বিকীন

১২ ডিসেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৮:৪৯ পূর্বাহ্ন

চলতি বছরের শেষ মাস ডিসেম্বর চলছে। আর বছরের শেষে এসে একেবারেই কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে সংগীতাঙ্গন। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেবল ক্রমাগতভাবে খারাপই হয়েছে। আর কোরবানির ঈদের পর থেকে গান প্রকাশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। নিজ উদ্যোগে এ সময়ে মূলধারার শিল্পীদের গান অডিও কোম্পানিগুলো করেছে খুব কম। যে গান প্রকাশ হয়েছে, তার মধ্যে বিলাসি কিংবা শখের শিল্পীদের গান-ভিডিওর সংখ্যাই বেশি। সব মিলিয়ে বছর শেষে কোনো সুখবর নেই সংগীতাঙ্গনে। নতুন বছরে অবস্থা কী দাঁড়ায় সেটা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। বছরের শুরু থেকেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তাব্যাক্তিরা জানিয়ে আসছেন যে, ওয়েলকাম টিউন থেকে আয় কমে প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। অন্যদিকে চলতি বছর বিভিন্ন কারণে ইউটিউবে প্রকাশিত কনটেন্টের ভিউ শুধুই কমছে। এ বিষয়টিও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে সংগীতাঙ্গনে। অনেক জনপ্রিয় শিল্পীর ব্যায়বহুল মিউজিক ভিডিওর অবস্থাও ভালো যাচ্ছে না ইউটিউবে। এদিকে এসব কারণেই নতুন গানে বিনিয়োগে তেমন সাহস পাচ্ছে না অডিও-ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। গত কয়েক মাসে গান প্রকাশও কমিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এদিকে চলতি বছর সৈয়দ আবদুল হাদী, কুমার বিশ্বজিৎ, ফাহমিদা নবী, আসিফ আকবর, হাবিব ওয়াহিদ, এফ এ সুমন, কনা, মিনার, ন্যান্‌সি, ইমরান, কাজী শুভ, বেলাল, ঐশী, মুহিন, লিজা, ঝিলিক, পূজা প্রভৃতি শিল্পী গানে নিয়মিত ছিলেন। তবে তারপরও সংখ্যার দিক দিয়ে গত বছরের তুলনায় বেশ কম। সংখ্যার দিক দিয়ে এ বছরও গান প্রকাশে এগিয়ে ছিলেন আসিফ আকবর। এদিকে চলতি বছর বাজে অবস্থার ইতি টেনে নতুন বছরে ঘুরে দাঁড়াবে ইন্ডাস্ট্রি, এমনটাই আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন এমআইবি সভাপতি ও লেজারভিশনের চেয়ারম্যান এ কে এম আরিফুর রহমান। তিনি বলেন, চলতি বছরটি মোটেই ভালো যায়নি আমাদের। কারণ এ বছর গানে বিনিয়োগ করে সেটা উঠিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। বছরের শুরু থেকে খারাপ অবস্থার সূত্রপাত হয়, যেটা এখনও কাটেনি। এ সময় আমরা এমআইবি’র পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছি এ অবস্থা থেকে উত্তরণের। ওয়েলকাম টিউন থেকে আয়তো কমেছেই। এ বছর আবার ইউটিউবের ভিউও তেমন হয়নি। যার কারণে স্বাভাাবিকভাবে আয় কমেছে। আর সে কারণেই নতুন গানে বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। খুব কম সংখ্যক গান প্রকাশ করেছে কোম্পানিগুলো। এটা আমাদের জন্যও খারাপ লাগার একটি ব্যাপার। কারণ এ ইন্ডস্ট্রির সঙ্গে জড়িত শুধু আমরা না। গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, মিউজিশিয়ান ও শিল্পীরাও সম্পৃক্ত। আমরা চেষ্টা করছি এখনো এ অবস্থা থেকে বের হওয়ার। আশা করি নতুন বছরে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ইন্ডাস্ট্রি। এ বিষয়ে সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী বলেন, চলতি বছর একটা স্থবির অবস্থা বিরাজ করেছে। গানও প্রকাশ
হয়েছে কম। তবে যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলোর সুষ্ঠু সমাধান দরকার। আমি মনে করি যে কোনো সমস্যা সবাই মিলে মোকাবিলা করলে সেটা সমাধান হতে পারে। ঠিক তেমনি ইন্ডাস্ট্রির সবাই যদি এক হয়ে আলোচনায় বসে কীভাবে সমস্যাগুলোর সমাধান করা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়, তবে সমস্যা আর থাকবে না। একাত্মতার অভাব এক্ষেত্রে অনুভব করছি। আমি চাইবো সবাই এক হয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যেগ যেন নেয়া হয়। এ বিষয়ে চলতি প্রজন্মের সংগীতশিল্পী ইমরান বলেন, চলতি বছর কিছুটা হলেও ডাউন ছিলো ইন্ডাস্ট্রি, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে আমি মনে করি আপ-ডাউন থাকবেই। এরমধ্যে থেকেই ভালো কাজ করার চেষ্টা করে যেতে হবে। আর সামনে সবার মিলিত চেষ্টায় মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির গতি ফিরবে- সেটাই আশা করি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status